২৪ ঘন্টা পর জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপে ভোলায় বাস ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছে বাস মালিক ও শ্রমিকরা।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) রাতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সম্মেলন কক্ষে বাস মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ ও সিএনজি চালকদের পাশাপাশি স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং সাংবাদিকদের নিয়ে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে বৈঠক করেন জেলা প্রশাসক। এক পর্যায়ে সকলের মতামতের ভিত্তিতে বাস মালিক সমিতি ও সিএনজি চালকদের সমঝোতায় আনতে সক্ষম হন জেলা প্রশাসক। এসময় সবকিছু স্বাভাবিক ও আগের মত থাকার অঙ্গীকার নিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বাস ও সিএনজি চলাচল স্বাভাবিক করার আশ্বাস দিয়েছেন বাস মালিক সমিতি ও সিএনজি চালকরা।
সমঝোতা বৈঠকে বাস ও সিএনজি মালিক সমিতির নেতাদের বক্তব্যে উভয় পক্ষের দাবি উঠে আসে। তারাও এ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। এ সময় ভোলা পৌরসভার পক্ষ থেকে সিএনজি চালকদের স্ট্যান্ডের জন্য বাস স্ট্যান্ডের পাশে হেলিপ্যাড এলাকায় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। সিএনজি চালকরাও সেটি মেনে নেয়। এ সময় উভয় পক্ষ পূর্বের মতো মিলেমিশে যানবাহন পরিচালনা করবেন বলেও জানায়। ভবিষ্যতে আর কখনো এরকম ঘটনা হবে না বলেও অঙ্গীকার করেন তারা।
একই সঙ্গে তারা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ভোলার অভ্যন্তরীন রুটে যানবাহন চালানোর ঘোষণা দেন।
জেলা প্রশাসক মো. আজাদ জাহান জানান, ভোলা বাস শ্রমিক ও সিএনজি চালকরা সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে। এতে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বাস ও সিএনজি পুড়েছে। সার্বিকভাবে আমরা এ ধরনের পরিস্থিতি চাইনি। তাই সন্ধ্যার পর উভয় পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসেছি। সেখানে শান্তিপূর্ণ সমাধান হয়েছে। সিএনজির আলাদা একটি যায়গা দেওয়া হয়েছে এবং বাস মালিকরা পৌরসভার ইজারাকৃত বাস স্ট্যান্ডেই থাকবে। তারা উভয় পক্ষ ভবিষ্যতে আর কোনো ঝামেলায় জড়াবে না, শান্তিপূর্ণ অবস্থানে থাকবে বলে আমরা সমাধানে পৌঁছাতে পেরেছি। এছাড়াও তারা তাদের ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
এ সময় বৈঠকে বক্তব্য রাখেন,পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শরীফুল হক,জেলা বিএনপির আহবায়ক গোলাম নবী আলমগীর, জাতীয় পার্টি (বিজেপি) জেলার সভাপতি আমিরুল ইসলাম রতন, ইসলামী আন্দোলন জেলার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা তরিকুল ইসলাম, জামায়াতে ইসলামীর জেলা শুরা সদস্য মো. জামাল উদ্দিন, বাস মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির, অটোরিকশা শ্রমিক ফেডারেশনের জেলা সভাপতি মো. মাকসুদুর রহমান।সভায় ভোলার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের পাশাপাশি নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডসহ প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য,গত মঙ্গলবার রাতে ও বুধবার সকালে ভোলা বাসস্ট্যান্ড ব্যবহার নিয়ে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বাস শ্রমিক ও সিএনজি চালকদের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া পালটা ধাওয়া, সংঘর্ষ এবং ইট-পাটকেল নিক্ষেপে সাংবাদিকসহ ২৫ জন আহত হয়। এসময় উত্তেজিতরা বাস ও সিএনজি ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করে। এ ঘটনার জের ধরে বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিকরা ধর্মঘটের ডাক দিলে বুধবার জেলার অভ্যন্তরীণ সকল রুটে বাস চলাচল বন্ধ থাকে। এতে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
সাজিদ