প্রথম দেখায় বোঝার উপায় নেই; এটি মহাসড়ক নাকি সবজির বাজার। এমন চিত্র বেলাব উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বারৈচা বাসস্ট্যান্ডের। জেলার মধ্যে সর্বোচ্চ সবজি উৎপাদিত হয় বেলাব এবং রায়পুরা উপজেলায়। এই দুই উপজেলার হাজারো কৃষক তাদের জমিতে উৎপাদিত কৃষিপণ্য বিক্রির জন্য নিয়ে আসে বারৈচা বাজারে। সপ্তাহের প্রতি সোমবার, বুধবার এবং শুক্রবার হাটবার নির্ধারণ করা থাকলেও প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত শতশত কৃষক সবজি নিয়ে বাজারে আসেন বিক্রির উদ্দেশে। মহাসড়ক ঘেঁষে বাজারটি হওয়ায় পরিবহন সুবিধা থাকায় বারৈচা বাজারে পাইকারি ক্রেতার ভিড় থাকে সবচেয়ে বেশি।
কাঁচামাল বাজারের জন্য নির্ধারিত কোনো জায়গা না থাকায় বারৈচা বাসস্ট্যান্ডের ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ওপর প্রায় ৫০০ মিটার এলাকাজুড়ে সবজি নিয়ে বসেন কৃষকরা। পণ্য পরিবহনে যাতায়াতের সুবিধা থাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা ও ভ্যানে তারা কৃষিপণ্য নিয়ে মহাসড়কে দাঁড়িয়ে থাকেন। যার ফলে প্রতিনিয়ত লেগে থাকে যানজট। কখনো কখনো প্রায় ৫-১০ কিলোমিটার মহাসড়কজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। যানজটের পাশাপাশি ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। কৃষক কাজল মিয়া বলেন, কাঁচামাল বিক্রির জন্য নির্দিষ্ট কোনো জায়গা না থাকায় আমরা বাধ্য হয়ে মহাসড়কের ওপর বসি।
কামাল হোসেন নামের আরেক কৃষক বলেন, যদি বাজার কমিটি এবং সরকারের পক্ষ থেকে আলাদা কোনো জায়গা নির্ধারিত করে দেওয়া হয় তাহলে আর কেউ শাকসবজি নিয়ে মহাসড়কে বসবে না। গাড়ি চালকরা জানান, বারৈচা বাসস্ট্যান্ডে কাঁচামাল বিক্রেতারা মহাসড়কের ওপর প্রতিনিয়ত বসেন। যার কারণে প্রতিনিয়ত দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। অনেক সময় নষ্ট হয়। পাশাপাশি মাঝেমধ্যে অনেক দুর্ঘটনা ঘটে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও বারৈচা বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি শফিকুল ইসলাম সম্রাট বলেন, কাঁচামাল বাজারের জন্য নির্ধারিত কোনো জায়গা নেই। যার কারণে কৃষক তাদের উৎপাদিত সবজি বিক্রির জন্য বাধ্য হয়ে মহাসড়কে বসেন। বাজারটি মহাসড়ক থেকে দূরে খোলা জমিতে স্থানান্তরের কার্যক্রম চলছে। বেলাব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল করিম বলেন, বারৈচা বাসস্ট্যান্ডে মহাসড়কের ওপর সবজি কেনা-বেচা দীর্ঘদিনের। আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি পাশাপাশি কৃষকদের মহাসড়ক থেকে সরে যেতে আহ্বান জানাচ্ছি। মহাসড়কের পাশে একটি খোলা মাঠে সবজি বাজার স্থানান্তরের পরিকল্পনা রয়েছে। তাহলে আর এই সমস্যা থাকবে না।
