
ছবিঃ জনকণ্ঠ
ভোলার-চরফ্যাশন সড়কে অবৈধ যান চলাচল বন্ধ ও বাস শ্রমিকদের উপর হামলার প্রতিবাদে জেলার সকল রুটে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। আজ বুধবার সকাল থেকে বাস মালিক সমিতির আহবানে এ বাস ধর্মঘট শুরু হয়েছে। এ সময় অন্যান্য যানবাহন চলাচল করলেও বাস ও সিএনজি চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে করে সাধারণ যাত্রীরা পড়েছে চরম দুর্ভোগে।
দূর দূরান্তের অনেক যাত্রী অতিরিক্ত টাকা ব্যয় করে বাধ্য হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অটোরিক্সাসহ বিকল্প যানবাহনে চলাচল করছে। অপরদিকে বাস শ্রমিক ও সিএনজি শ্রমিকদের সাথে আজ বুধবার দ্বিতীয় দিনে সংঘর্ষ ইটপাটকেল নিক্ষেপ ,৫টি সিএনজি ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ বুধবার সকাল থেকে ভোলা বীর শ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল বাস টার্মিনাল থেকে ভোলা - চরফ্যাশনসহ দূরপাল্লার কোনো রুটে বাস চলাচল করিনি। বাস ধর্মঘট চলাকালে বেলা ১১ টার দিকে বাস স্ট্যান্ড এলাকায় সিএনজি ও অটোরিকশা চলাচল করার সময় অতর্কিত হামলা চালানো হয়। এ সময় বাস শ্রমিক ও সিএনজি শ্রমিকদের সাথে সংঘর্ষ ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে ৫টি সিএনজি, মাহেন্দ্র ও অটোরিকশায় অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
পরে পুলিশ প্রশাসন দুই পক্ষকে সরিয়ে দেয়। আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। বর্তমানে থেমে থেমে বিক্ষোভ মিছিল চলছে।পরিস্থিতি থমথমে অবস্থা বিরাজ।
ভোলা জেলা বাস মালিক সমিতির পক্ষ থেকে জানান, বাস টার্মিনাল পৌর সভা থেকে ইজারা নিয়েছে। ভোলা পৌরসভা থেকে সিএনজি চালকদের বাসস্ট্যান্ড ছেড়ে দেয়ার বিষয়ে জানানো হয় । পরে সিএনজি চালকরা আজ মঙ্গলবার অতর্কিত ভাবে বাস শ্রমিকদের উপর হামলা চালায়। এতে অন্তত ৫ জন আহত হয়েছেন।এছাড়াও কয়েকটি বাসে আগুন ও ভাংচুর করে কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলেও জানান। আন্ত মহান সড়কে অবৈধ যানচলাচল বন্ধসহ ও তাদের উপর হামলার প্রতিবাদে তাদের ধর্মঘট চলছে।
এদিকে সিএনজি মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক হাসান মাহামুদ উল্টো অভিযোগ করে জানান,কোনো কিছু না জানিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সিএনজি স্টেশনে দুই থেকে তিনটি বাস ঢোকানো হয়। এসময় বাসগুলো স্ট্যান্ডে রাখা সিএনজির উপর উঠিয়ে দেয়।পরবর্তীতে সিএনজিগুলোতে তারা আগুন জ্বালিয়ে দেয়।এতে আমাদের ৮টি সিএনজি আগুনে পুড়ে যায়। তিনি আরে জানান,বাস শ্রমিকরা নিজেরাই নিজেদের গাড়ি ভাংচুর করে এবং সিএনজি চালকদের লক্ষ করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে তাদের ৮ জন গুরুতর আহত হয়।তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল পাঠানো হয়েছে।
এদিকে বাস ধর্মঘট এর কারণে ভোলা জেলার অভ্যন্তরীণ সকল রুটে আজ বুধবার সকাল থেকে দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ রেখেছে বাস মালিক সমিতি। এতে করে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ভোলা -চফ্যাশন সহ জেলার বিভিন্ন রুটের যাত্রীরা। তারা অনেকে নিরুপায় হয়ে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে বিকল্প যানবাহন দিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন।
ভোলা অতিরিক্ত পুলিশ (সদর সার্কেল) সুপার রিপন চন্দ্র সরকার সাংবাদিকদের জানান, দুই পক্ষকে নিয়ে বসার চেষ্টা চলছে। কেন এ এ অবস্থা,ভুল বোঝাবুঝি? আমাদের কাছে কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। পুলিশ সুপার বলেছেন,কেউ আবেদন করুক না করুক , পুলিশ আইন গত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
উল্লেখ্য ,বাস টারমিনালের ভিতর থেকে অবৈধ যানবাহন , স্থাপনা উচ্ছেদ নিয়ে মঙ্গলবার (২৭ জানু) রাতে বাস শ্রমিক ও সিএনজি চালকদের মধ্যে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে সংর্ঘষ বাঁধে। ঘন্টাব্যাপী ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষের সময় ২টি যাত্রীবাহি বাস, ৫টি সিএনজি অটোরিকশায় আগুন ধরিয়ে দেয়। ভাংচুর করা হয় আরও একটি যাত্রীবাহি বাস।
এদিকে বাসটারমিনাল সংলগ্ন ফায়ার সার্ভিসের অফিস হলেও ঘটনার প্রায় ১ ঘন্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে দমকল বাহিনী। একই সময়ে পুলিশ ,নৌবাহিনী কোস্টগার্ড সহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনার জের ধরে মূলত বাস ধর্মঘটের সূত্রপাত হয়।
জাফরান