
কোস্টগার্ডের হেফাজতে ডাকাত
সুন্দরবনের দুবলার চর থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ সহ বনদস্যু দয়াল বাহিনীর ৩ ডাকাতকে আটক করেছে জেলেরা। পরবর্তীতে আটক ডাকাতদের হেফাজতে নেয় কোস্টগার্ড পশ্চিম জোন, মোংলা।
আটককৃতরা হলেন, খুলনার মোঃ রহমত মোড়ল (২৬), সাতক্ষীরার মোঃ রবিউল মোল্লা (২৬) এবং বাগেরহাটের মোঃ জাহাঙ্গীর শেখ (৫১)। এদের মধ্যে ডাকাত সদস্য মোঃ রবিউল মোল্লার নিকট বাবু গাজী নামের একটি ভারতীয় আধার কার্ড পাওয়া গেছে।
সোমবার (২৭ জানুয়ারী) সন্ধ্যায় কোস্ট গার্ড সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মোঃ সিয়াম-উল-হক বলেন, দুর্ধর্ষ ডাকাত দয়াল বাহিনীর সদস্যরা সুন্দরবনের দুবলার চরে নিরীহ জেলেদের উপর আক্রমণ করে। এসময় দুঃসাহসী জেলেরা নিজেদের আত্মরক্ষার্থে ডাকাতদেরকে প্রতিহত করে এবং একই সাথে দুবলার চরের কোস্টগার্ড স্টেশনে সাহায্য চেয়ে ফোন করে।
ডাকাতদের সাথে জেলেদের হাতাহাতির একপর্যায়ে জেলেরা ডাকাতদেরকে তাদের জাল দিয়ে ধরে ফেলতে সক্ষম হয়। হাতাহাতির ফলে ডাকাতরা কিছুটা আহতও হয়। পরবর্তীতে কোস্টগার্ড উপস্থিত হয়ে ডাকাতদের আহত অবস্থায় আটক করা হয়। আটক ডাকাতদের কাছ থেকে ১ টি বিদেশি এক নলা বন্দুক ও ৩৬ রাউন্ড তাজা গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে। জব্দকৃত সকল আলামতসহ আটককৃত ডাকাতদের পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
ডাকাতদের দ্বারা আক্রান্ত জেলেদের মধ্যে একজনের নাম শাহাজালাল সানা। তিনি বলেন, রবিবার রাত আটটার দিকে সাগরে জোয়ারের পানিতে জাল ফেলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। তখন একটি নৌকায় ১১ জন দস্যু অস্ত্র হাতে আমাদের কাছে আসেন। তারা নিজেদেরকে মজনু বাহিনীর লোক পরিচয় দিয়েছিলেন। ‘ডাকাত সরদারের নির্দেশে চার দস্যু আমাদের নৌকায় এসে ওঠে। তাদের কাছে দুটি বন্দুক ছিল। কিছুক্ষণ পরে কয়েকটি মাছ ধরার ট্রলার থেকে ৯ জেলেকে জিম্মি করে নিয়ে আসে।
তিনি বলেন, ডাকাতের হতে জিম্মি সবাই আমাদের পরিচিত ছিল। আস্তে আস্তে সবাইকে বললাম, ডাকাতদের হাত থেকে বাঁচতে হবে। এক পর্যায়ে কথা বলতে বলতে ট্রলারের গলুইয়ের ওপরে থাকা গরান কাঠ তুলে একজনের মাথা বরাবর আঘাত করলাম। অস্ত্রসহ তিনি পড়ে গেলেন পানিতে। দেরি না করে আরেকজন জেলেও দিলেন আরেক দস্যুর মাথায় আঘাত। তাঁর মাথা ফেটে রক্ত বেরিয়ে এল। একটি অস্ত্র তখন আমার হাতে। ওদিকে বাকি দুই দস্যু অন্য ট্রলার থেকে লাফ দিয়ে আমাদের ট্রলারে আসেন। তখন সব জেলেরা ডাকাতদের মারধর করেন। পিটুনি খেয়ে সাগরে পড়ে যায় চার ডাকাত। তারপর সাগর থেকে তিনজনকে টেনে বেঁধে ফেলেন জেলেরা। একজন অস্ত্রসহ সাগরেই থেকে যায়।
তিন দস্যুকে বেঁধে সুন্দরবনের দুবলার চরের কাছাকাছি পৌঁছাতে রাত তিনটা বেজে যায়। তখন মুঠোফোনে কোস্টগার্ডকে বিষয়টি জানাই। দুবলার চরের আরেক জেলে আবদুর রউফ বলেন, জেলেদের জিম্মি করেছিল দস্যুরা। শাহজালাল সানাসহ কয়েকজন জেলের সাহসিকতায় দস্যুরা ধরা পড়েছে।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী নুরুল করিম বলেন, তিন দস্যুকে জেলেরা ধরাশায়ী করেছেন। তারা কোস্টগার্ডের হেফাজতে আছে।
শহীদ