চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলনরত ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষকদের মিছিলে পুলিশি হামলার প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট। আজ সোমবার (২৭ জানুয়ারি) মিছিলটি সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেট থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলকের সামনে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়।
এসময় বিক্ষোভকারীরা 'শিক্ষকের ওপর হামলা কেন, ইউনুস সরকার জবাব চাই'; 'শিক্ষকদের দাবি-দাওয়া, মেনে নাও নিতে হবে'; 'গুন্ডা পুলিশের রাষ্ট্র, ভেঙে দাও গুড়িয়ে যায়'; 'লাঠি গুলি টিয়ার গ্যাস, জবাব দিবে বাংলাদেশ'; 'ছাত্র শিক্ষক জনতা, গড়ে তোলো একতা'; বাহ্ ইউনুস চমৎকার, পুলিশি রাষ্ট্রের পাহারাদার'; 'পুলিশি রাষ্ট্রের গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে'; ইত্যাদি স্লোগান দেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শামীম ত্রিপুরা বলেন, ৫ আগস্টের পর আমরা একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের রুপান্তর কামনা করেছিলাম। কিন্তু ৫ আগস্টের পর আমরা দেখি ব্যক্তি মানুষের গণতান্ত্রিক চর্চার ওপর কিভাবে আঘাত হানা হচ্ছে। স্বৈরাচারী হাসিনার আমলে আমরা যা দেখেছি একই কায়দায় এই ইউনুস সরকার জনগণের ওপর পুলিশি হামলা চালাচ্ছে।
একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে প্রত্যেক মানুষ তার ব্যক্তি অধিকারের স্বার্থে রাজপথে নামতে পারে। কিন্তু তাই বলে জোর পূর্বক তার বাক স্বাধীনতা এভাবে হরণ করার অধিকার কারো নেই। আজকের পর থেকে যদি কোনো ছাত্র, শিক্ষক বা জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকারের হরণ করার চেষ্টা করা হয় তাহলে আমরা দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবো।
রাবি ছাত্র গণমঞ্চের আহ্বায়ক নাসিম সরকার বলেন, গতকাল এদেশের বয়োঃবৃদ্ধ নাগরিক মাদ্রাসা শিক্ষকের ওপর কি নির্মম এবং ন্যাক্কারজনক হামলা চালিয়েছে ইউনুসের পুলিশ। এই পুলিশের শুধু পোশাকই পরিবর্তন হয়েছেন। ইউনুস সরকারের যে সংস্কার তা শুধুমাত্র পোশাকি সংস্কার। ইউনুস সরকার এবং তার উপদেষ্টার জানিয়ে দিতে চাই তারা যাদের লাশের ওপর দিয়ে ক্ষমতায় বসেছে। আমরা সেই জনতার অংশ। যারা ট্র্যাঙ্ক কামানের সামনে গিয়ে বুক পেতে দিয়েছিলো। আমরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলে দিতে চাই যেভাবে হাসিনাকে নামিয়েছি ঠিক একই পরিনতি হবে এই ইউনুস সরকার এবং তার উপদেষ্টাদের।
রাবি সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের আহ্বায়ক ফুয়াদ রাতুল বলেন, দেশের আর সব মানুষের মতো এই মাদ্রাসা শিক্ষকরাও ভেবেছিলো যে গণঅভ্যুত্থানের আগে এরা যেসব বঞ্চনার শিকার হতো গণঅভ্যুত্থানের পরবর্তীতে তারা এসব থেকে মুক্তি পাবে, একারণেই তারা রাস্তায় নেমে এসেছিলো। কিন্তু আমরা দেখলাম রাষ্ট্র তাদের সঙ্গে কি আচরণ করেছে, তাদের উপর পুলিশ লেলিয়ে দিয়েছে।
ফ্যাসিস্ট হাসিনা যেভাবে আন্দোলন দমন করতো একই কায়দায় এই ইউনুস সরকার তাদেরকে দমন করেছে। তাহলে কি আমরা ধরে নিব হাসিনা সরকারের যে পুলিশী রাষ্ট্র, ইউনুস সরকারও সেই পুলিশী রাষ্ট্র বলবৎ রাখতে চায়। আমরা কি ধরে নিব গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা সেটা এই সরকার ধারন করতে পারছে না। আমরা এই হামলার শাস্তির দাবি জানাই। সেই সঙ্গে এই সরকারকে বলে দিতে চাই, আমরা একটি পুলিশি রাষ্ট্রকে উৎখাত করেছি, আমাদেরকে আর দমিয়ে রাখা যাবে না।
মিছিল পরবর্তী সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন রাবি ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) সভাপতি রাকিব হোসেন। এসময় আরো বক্তব্য দেন বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর সাংগঠনিক সম্পাদক শাহরিয়ার আলিফ, বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলনের আহ্বায়ক তারেক আশরাফ ও ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) কোষাধ্যক্ষ আহমদ ইমতিয়াজ সৈকত।
রিফাত