ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬ মাঘ ১৪৩১

মহাবিপদে জমির মালিকরা

ভূঞাপুরে ৩৫ বছরেও শেষ হয়নি বিআরএস জরিপ

নিজস্ব সংবাদদাতা, ভূঞাপুর, টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ২১:২৬, ২৭ জানুয়ারি ২০২৫

ভূঞাপুরে ৩৫ বছরেও শেষ হয়নি বিআরএস জরিপ

ভূঞাপুরে একটি মৌজায় ১৭টি সিটের বিআরএস জরিপ কাজ শেষ হয়নি ৩৫ বছরেও। কবে শেষ হবে এর সদোত্তর পাওয়া যায়নি কোনো দপ্তরে। জরিপ সম্পন্ন না হওয়াতে মৌজাটিতে বন্ধ আছে জমি বেচা-কেনা, খাজনা খারিজ। ফলে চরম ভোগান্তিতে এ এলাকার মানুষ।
জানা গেছে, সারাদেশের ন্যায় এ উপজেলায় ১৯৯৩ সালে বিআরএস জরিপের কাজ শুরু করে ভূমি মন্ত্রণালয়। ১৯৯৮ সালে নকশার কিস্তার কাজ শেষ করে ডিপি খতিয়ান তৈরি করে এবং মাঠ পরচা বিতরণ করে ভূমি মালিকদের মধ্যে। কিন্তু পরচায় জমির পরিমাণ মিল থাকলেও নকশায় জমির পরিমাণ কোনো মিল পাওয়া যায়নি। খতিয়ানে জমির পরিমাণ এবং নকশায় জমির পরিমাণ কোন মিল না থাকায় জমির মালিকগণ নকশার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তোলেন। পরে তদন্তে দেখা যায় এ মৌজায় ১৬টি সিটের নকশা ভেঙে ১৭টি সিট তৈরি করা হয়েছে। এতে অধিকাংশ প্লটের জমির পরিমাণ কম বেশি হয়েছে। সে সময় নকশার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ থাকলেও পরবর্তীতে বিচারিক কার্যক্রমের মাধ্যমে সমাধানের আশ^াস দেন দায়িত্বরত কর্মকর্তাগণ।
 ২০০০ সালে শুরু হয় ৩০ ধারা বিচার কার্যক্রম। এতে অধিকাংশ খতিয়ানে মামলা হয়। ৩০ ধারা শেষ করে ৩১ ধারা শুরু করলে মামলার জট সেরকমই থেকে যায়। সাধারণত ৩০ ও ৩১ ধারায় সকল বিচারকার্য শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু মামলা শেষতো হয়ইনি ক্রমশ জটিলতা বৃদ্ধি পাচ্ছিল। দেওয়া হলো পারমিশন (বিশেষ আদেশে) কেসের সুযোগ। পরবর্তীতে ১৭টি সিটে প্রায় ৯ হাজার ৫শ’ খতিয়ানের মধ্যে প্রায় ৮ হাজার ৮শ’ পারমিশন (বিশেষ আদেশে) মামলা হয়। এ নিয়ে সৃষ্টি হয় নানা ধূম্রজাল। তার মানে কোনোভাবেই মামলার জট শেষ হচ্ছিল না। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে এলে ২০০৬ সালে নকশাগুলো যাচাইয়ের জন্য পাঠানো হয় জরিপ অধিদপ্তরের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের কাছে। সেখানে নকশায় ধরা পড়ে মারাত্মক রদবদল। পরচায় জমির ধারাবাহিকতা মিল থাকলেও আধিকাংশ দাগেই জমির পরিমাণ মিল নেই। যার ফলে বার বার মামলা করে সমাধান খুঁজছিল ভুক্তভোগীরা। পরবর্তীতে কোনো সমাধান না করতে পেরে স্থগিত করে দেয় জরিপ কার্যক্রম। এর পর থেকেই নানা বিপদে পড়তে হচ্ছে এ এলাকার ভূমি মালিকদের। ক্রমান্বয়ে বন্ধ হয়ে যায় খাজনা খারিজ, ব্যাংক ঋণসহ নানা কার্যক্রম। হাল নাগাদ খাজনা পরিশোধ রসিদ ও খারিজ বাধ্যতামূল হওয়ায় বন্ধ হয়ে যায় জমি বেচা-কেনা। ফলে বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়েন এ এলাকার মানুষ। অনেক দরিদ্র পরিবার নানা সমস্যায় জমি বিক্রি করতে চাইলেও বিক্রি করতে পারছে না।
এ মৌজার বাসিন্দা ও সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুস সামাদ বলেন, ্ওই সময় অদক্ষ সার্ভেয়ার (আমিন) দিয়ে নকশা করার কারণে এ জটিলতার সৃষ্টি হয়ছে। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে প্রায় ২৫ বছর যাবৎ বিপদে ফেলে রেখেছে এ এলাকার মানুষকে। দিন যাচ্ছে আরও জটিলতা বাড়ছে। আমরা দ্রুত এর সমাধান চাই। টাঙ্গাইল জোলান সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার এস এস রফিকুল ইসলাম জানান, এ বিষয়টি নিয়ে জরিপ অধিদপ্তরে মতামতের জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। জরিপ বাতিলও হতে পারে আবার নকশার পূর্ণকিস্তারও হতে পারে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের যে নির্দেশনা আসবে সেই মোতাবেক কাজ করতে হবে।

সৈয়দপুরে মেডিক্যাল কলেজ নির্মাণের
দাবিতে মানববন্ধন

নিজস্ব সংবাদদাতা, সৈয়দপুর, নীলফামারী ॥ সৈয়দপুরে রেলের পরিত্যক্ত জায়গায় মেডিক্যাল কলেজ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। সোমবার শহীদ স্মৃতি অম্লান চত্বরে ১৩ নং ওয়ার্ডে রেল হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় বসবাসকারী বিভিন্ন বয়সী ৫ শতাধিক নারী-পুরুষ এ মানববন্ধন করেন। মনোয়ার হোসেনের সঞ্চালনা ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর ইকবাল হোসেন গুড্ডুর সভাপতিত্বে বক্তারা বলেন, পরিত্যক্ত জায়গাগুলো রেল যাতে দখলে নিতে না পারে এর জন্য রেলের মেডিক্যাল কলেজটি পরিকল্পিতভাবে ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে রেলের হাসপাতাল এলাকায় নির্ধারণ করে। তবে পরিপত্রে বলা হয়েছে, মেডিক্যাল কলেজ নির্মাণে সরকারি পরিত্যক্ত জায়গা লাগবে। তবে ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর অফিসাররা এই জায়গা নির্ধারণ করে বরাবরই রেলওয়ের পরিকল্পিত উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করেছে। এখানেও তারা ষড়যন্ত্র করে দুই হাজার পরিবারকে উচ্ছেদের পাঁয়তারা করছে। ইকবাল হোসেন গুড্ডু বলেন, ২৪ এর জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে বিতর্কিত করার প্রয়াসে গভীর যড়যন্ত্র করছে বিগত সরকারের দোসররা। এ শহরে প্রভাবশালীরা রেলের সম্পদ দখলে মেতে উঠেছে। রেল কর্তৃপক্ষ উদ্ধার না করে, লোক দেখানো মামলা করছে। তাই এক দফা, এক দাবি। পরিত্যক্ত জায়গায় মেডিক্যাল কলেজ করতে হবে। না হলে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে বলে মানববন্ধন থেকে হুঁশিয়ারি দেন বক্তারা।

×