বরিশালে থোকা থোকা ঝুলছে শিম
বরিশাল নদীবন্দর ভবনের সামনের পতিত জমিতে একসময় ছিল ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। পরে সেখানে নিজেদের উদ্যোগে ছোট আকারে সবজি চাষ শুরু করেন কয়েক শ্রমিক। এরপর সময়ের সাথে সাথে বন্দর ভবন এলাকার আশপাশের দৃশ্য পাল্টাতে শুরু করেছে।
বর্তমানে বরিশাল নদীবন্দরের ৩ নম্বর গেট দিয়ে বন্দর ভবনের ভেতর দিয়ে পন্টুুনে যেতে বাগানের দিকে তাকাতেই মিলবে সবুজের সমারোহ। আর সেখানে বাহারি ধরনের গাছের দেখাও মিলছে। যার মধ্যে এখন সবচেয়ে বেশি দৃষ্টি কেড়েছে গাছের চূড়ায় ঝুলে থাকা সবুজ বর্ণের ফলগুলো। যেগুলো দেখে শিমুল গাছের ফল মনে হলেও আসলে এগুলো একটি উন্নত জাতের (হাইব্রিড) শিম গাছ। আর এ শিমের ফলন এতটাই বেশি যে তা স্থানীয় কৃষকদের কাছেও কল্পনার বাইরে।
গাছের মালিক বরিশাল-ঢাকা নৌ-রুটের বিলাসবহুল পারাবত লঞ্চের কলম্যান ইমাম হোসেন বলেন, একজন সংবাদকর্মী আমাকে হাইব্রিড শিমের বীজগুলো সংগ্রহ করে দিয়েছেন। এখানে মাত্র পাঁচটি শিমের বীজ রোপণ করে যে ফলন পেয়েছি তা অবিশ্বাস্য। মাত্র দুই-আড়াই মাস আগে রোপণ করা এ শিম গাছগুলো এখন থোকায় থোকায় ফল দিচ্ছে। একদিকে খাওয়ার উপযোগী শিম প্রস্তুত, আবার অন্যদিকে গাছে নতুন ফুল ধরছে। ইমাম হোসেন বলেন, রাসায়নিক সার ব্যবহার না করেও এত বেশি ফলন পাওয়া সম্ভব এটা আমি প্রথমবার দেখলাম। আমার এ শিমের কথা শুনে স্থানীয় কৃষকরা প্রতিনিয়ত এসে দেখে যাচ্ছেন। অনেকেই বলেছেন, আগামী মৌসুমে তারাও এ শিমের চাষ করবেন। শিমের বীজ সংগ্রহকারী সংবাদকর্মী আব্দুর রহমান বলেন, প্রতিবেশীর কাছ থেকে বেশকিছু উন্নত জাতের শিমের বীজ সংগ্রহ করেছিলাম। আর সেখান থেকেই ইমাম হোসেনকে পাঁচটি বীজ দিয়েছিলাম। সেই বীজগুলো এখন ভালোভাবে বড় হয়ে ফলন দিয়েছে, যা কল্পনাতীত।
নৌ শ্রমিকদের নিয়ে নদীবন্দরের পতিত জমিতে কৃষি কাজে সম্পৃক্ত করার উদ্যোক্তা সাংবাদিক রিপন হাওলাদার বলেন, ডিউটি শেষে নৌ-শ্রমিকরা বেশিরভাগ সময় শুয়ে-বসে কাটাতেন। তাই তাদের উৎসাহ দিয়ে নদীবন্দর ভবনের সামনের বাগানের পতিত জমিতে প্রথমে লাউ চাষ করার জন্য উৎসাহ দেই।
ময়লা-আবর্জনায় ভরা জমি পরিষ্কার করে লাউ গাছ রোপণের পর অনেক লাউ ধরেছিল। যেগুলো শ্রমিকরা নিজেরা খাওয়ার পাশাপাশি বাজারে বিক্রিও করেছেন। এরপর থেকে নিয়মিত তারা ওখানে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করে আসছেন। বর্তমানে বাগানে বোম্বাই মরিচ, হাইব্রিড শিম, দেশীয় প্রজাতির শিমসহ বিভিন্ন ধরনের সবজির আবাদ হয়েছে।