ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১৪ মাঘ ১৪৩১

শূন্যপদ পূরণে কেন এত দেরি? প্রশ্ন উঠছে!

নিজস্ব সংবাদদাতা,ফটিকছড়ি

প্রকাশিত: ১২:১০, ২৬ জানুয়ারি ২০২৫

শূন্যপদ পূরণে কেন এত দেরি? প্রশ্ন উঠছে!

ছবি: সংগৃহীত

উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ জনবল সংকটের কারণে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় ভাটা পড়েছে।

১৫ জন কর্মকর্তার  স্থলে  মাত্র ৩ জন দিয়ে চলছে শিক্ষা কার্যালয়ের  সব কার্যক্রম। লোকবল সংকটের মুখে শিক্ষা কার্যালয়ে এসে প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২২৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩৫ হাজার ৭৬ জন শিশু পড়ালেখা করছে। তাদের জন্য ১ হাজার ৫৫৬ জন শিক্ষকের পদ রয়েছে। এর মধ্যে শূন্য রয়েছে প্রধান শিক্ষক ৬১ এবং সহকারী শিক্ষক ১১০টি পদ। আর এসব বিদ্যালয় পরিচালনার জন্য উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ে একজন শিক্ষা কর্মকর্তা,  আটজন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা , একজন উচ্চমান সহকারী, তিনজন অফিস সহকারী, একজন হিসাব সহকারী এবং একজন পিয়নের পদ রয়েছে। ১৫টি পদের মধ্যে বর্তমানে ১২টি পদই খালি। 

২০১৫ সাল থেকে গত চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত সব কর্মকর্তা-কর্মচারীই তদবির করে অন্যত্র বদলি হন। বর্তমানে দায়িত্বে রয়েছেন একজন উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা । তিনিই এখন ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা  হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। অফিস সহকারীর ৪টি পদে সবকটিই খালি। এখন একমাত্র হিসাব সহকারী এবং একমাত্র পিয়ন কর্মরত আছেন। বাকি সব পদেই নেই কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী।

প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক কমিটির কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং ধুরুং জুুবলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এসএম দিদারুল আলম চৌধুরী জানান, ‘উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভাবে শিক্ষকরা টাইম স্কেল, বকেয়া বেতন, উন্নীত বেতন স্কেল পাওয়াসহ নানা কাজে কার্যালয়ে এসে  রীতিমত ভোগান্তিতে পড়ছেন। পর্যাপ্ত নজরদারি না থাকায় প্রাথমিকের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হয়। এখানে জরুরি ভিত্তিতে কর্মকর্তা-কর্মচারী পদায়ন করা জরুরি।’এ বিষয়ে উপজেলার আনোয়ার আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আজমীর উদ্দীন বলেন, ‘কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী শূন্যতায় প্রশাসনিক নানা কাজ ব্যাহত হচ্ছে।

এই স্বল্প লোকবল নিয়ে ঊর্ধ্বতনদের বিভিন্ন বিদ্যালয় পরিদর্শন ও ক্লাস্টার পরিচালনা কাজ চালিয়ে নেওয়াও খুব কঠিন।’উপজেলার রোসাংগিরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. আজিম উদ্দিন বলেন, ‘শিক্ষা কার্যালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভাবে তারা ক্লাস্টারে যথাযথ সময় দিতে পারেন না। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. হাসান মুরাদ চৌধুরী বলেন, ‘কার্যালয়ে আমিই একমাত্র ব্যক্তি যেখানে সব কাজই আমাকে করতে হয়। কর্মকর্তা-কর্মচারী সংকটের কারণে প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়ন বিষয়ক ক্লাস্টার প্রশিক্ষণ পরিচালনাসহ যাবতীয় কাজকর্ম একা করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছি।

ফলে শিক্ষা কার্যালয় ও শিক্ষাব্যবস্থা এক ধরনের স্থবির হয়ে পড়েছে বলা যায়। শূন্যপদগুলো পূরণে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্তাদের কাছে একটি প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। তিনি দাবি করেন, বিশাল উপজেলায় এতগুলো পদ খালি থাকলেও চলতি বছরে পাসের হার ছিল সন্তোষজনক। এটি উপজেলার জন্য অবশ্যই ইতিবাচক।’

বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা  মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘এটি আসলে মারাত্মকভাবে ভোগাচ্ছে। আমি ইতিপূর্বে শূন্যপদগুলো পূরণের জন্য জেলার মাসিক সমন্বয় সভায় জানিয়েছি। ব্যক্তিগতভাবেই কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করেছি।’ শিগগিরই পদগুলো পূরণ করা হবে বলে তিনি আশাবাদী।

ইসরাত

আরো পড়ুন  

×