ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১৪ মাঘ ১৪৩১

মুকসুদপুরের ঐতিহ্যবাহী ব্রোঞ্জের গয়না আধুনিকতার ছোঁয়া থেকে বঞ্চিত! 

শরিফুল রোমান, মুকসুদপুর

প্রকাশিত: ০৯:৩৩, ২৬ জানুয়ারি ২০২৫

মুকসুদপুরের ঐতিহ্যবাহী ব্রোঞ্জের গয়না আধুনিকতার ছোঁয়া থেকে বঞ্চিত! 

গয়না

মুকসুূদপুরের জলিরপাড়ের ঐতিহ্যবাহী ব্রোঞ্জের গয়না বাংলাদেশের ভৌগোলিক নির্দেশক জিআই পণ্য হিসেবে বিগত বছরে ব্রোঞ্চের গয়না স্বীকৃতি পেলেও আধুনিকতার ছোঁয়া থেকে বঞ্চিত। 

বর্তমানে মুকসুদপুর উপজেলার জলিরপাড় বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় ব্রোঞ্জের গয়না বিক্রির জন্য একটি বাজার গড়ে উঠেছে। ক্রেতা-বিক্রেতেরা এই বাজার থেকে গয়না কিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করেন।

ব্রোঞ্জ মার্কেটের ব্যবসায়ী ও জলিরপাড় ইউনিয়নের  সাবেক সদস্য সুভাষ বৈদ্য বলেন,  ব্রোঞ্জের গয়না তৈরির পল্লী প্রায় ১০০ বছর আগে গড়ে ওঠে। জলিরপাড়ের প্রায় প্রতি ঘরে ছড়িয়ে পড়েছে। এ পল্লীকে কেন্দ্র করে এখানে ব্রোঞ্জমার্কেট প্রতিষ্ঠিত হয়। এক সময়ে জলিরপাড়ের ব্রোঞ্জের গয়নার সুখ্যাতি সারদেশে ছড়িয়ে পড়ে। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এটি বিদেশের বাজারে ছড়িয়ে যায়।

অনুযোগের সুরে তিনি আরো বলেন, এ শিল্পে কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি। সাম্প্রতিক সময়ে ভারতসহ বিভিন্ন দেশের ব্রোঞ্জের গয়না, আমাদের বাজারের প্রায় ৫০ ভাগ দখল করে নিয়েছে। এ পরিস্থিতিতেও জলিরপাড়ের ব্রোঞ্জের গয়না তৈরি শিল্প স্বগৌরবে শতাধিক পরিবার টিকিয়ে রেখেছে। জলিরপাড়ে ব্রোঞ্জ মার্কেটে বর্তমানে ব্রোঞ্জের গয়না তৈরির ৪৫টি দোকান রয়েছে।

ব্রোঞ্জের গয়না কারিগর জলিরপাড় গ্রামের জগদীশ শীল বলেন, গয়না তৈরির উপকরণ তামা, দস্তা ও পিতলের দাম বেড়েছে। সহজ প্রাপ্যতা কমেছে। ভারতসহ অন্যান্য দেশের ব্রোঞ্জ গয়নার রঙ খুব চকচকা। আমাদের তৈরি গয়নার রঙ তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারে না। দামি, মনোহর ও সৌখিন গয়নার বাজার ভারত ও চীনের দখলে চলে গেছে। আধুনিক যন্ত্রপাতির সমন্বয়ে কারিগরদের কাজে লাগিয়ে আমরাও দামি গয়না তৈরি করতে পারি। তা হলেই শ্রমিক, মালিক ও ব্যবসায়ীরা অধিক উপার্জন করতে পারবেন।

সমাজসেবী মোস্তাফিজুর রহমান সেলিম বলেন, জিআই পন্য হিসেবে স্বীকৃতির মাধ্যমে মুকসুদপুরের জলিরপাড়ের ব্রোঞ্জের গয়নার ঐতিহ্যকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হবে। এছাড়া ব্রোঞ্জের গয়না তৈরির সঙ্গে সম্পৃক্ত কারিগরদের কর্মসংস্থান ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সহায়ক হবে।

ব্রোঞ্জ শিল্পকে অধুনিকায়ন করতে সরকার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ও সব ধরনের সহযোগিতা দিলে শত বছরের ঐতিহ্য ধরে রাখার পাশাপাশি ব্রোঞ্জ শিল্পভিত্তিক অর্থনীতি আরও গতিশীল হবে।

ইসরাত

আরো পড়ুন  

×