ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১১ মাঘ ১৪৩১

সোনারগাঁয়ে লোকজ উৎসবে ছুটির দিনে দর্শনার্থীদের ভীড়

সোনারগাঁও সংবাদদাতা, নারায়ণগঞ্জ।

প্রকাশিত: ২১:১৬, ২৪ জানুয়ারি ২০২৫

সোনারগাঁয়ে লোকজ উৎসবে ছুটির দিনে দর্শনার্থীদের ভীড়

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে লোক ও কারুশিল্প মেলায় মাসব্যাপী লোকজ উৎসবে শুক্রবার (২৪ জানুয়ারী) ছুটির দিনে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল উপচে পড়া। হারিয়ে যাওয়া লোকজ ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে প্রতি বছর এ উৎসবের আয়োজন করে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন আয়োজিত এ উৎসবে রাজধানী ঢাকা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজারো দর্শনার্থী আসে। নারী-পুরুষ-শিশুসহ বিভিন্ন বয়সী দর্শনার্থীরা উৎসবে কারুশিল্পীদের কারুপণ্য তৈরি ও প্রদর্শনী উপভোগ করে। পাশাপাশি তাদের পছন্দের কারুপণ্য কিনে নিতেও দেখা যায়। অনেকেই উপভোগ করেছে নাগরদোলা, পুতুলনাচ ও বায়োস্কোপ প্রদর্শনী।

এবারের মেলায় বাংলাদেশের পল্লী অঞ্চল থেকে ৬৪ জন কারুশিল্পী এই মেলায় অংশ নিয়েছেন। এছাড়াও ঝিনাইদহ ও মাগুরার শোলা শিল্প, রাজশাহীর শখের হাঁড়ি, চট্টগ্রামের নকশিপাখা, রংপুরের শতরঞ্জি, সোনারগাঁয়ের হাতি ঘোড়া পুতুল ও কাঠের কারুশিল্প, নকশিকাঁথা, নকশি হাতপাখা, মুন্সিগঞ্জের শীতলপাটি, মানিকগঞ্জের তামা-কাঁসা-পিতলের কারুশিল্প, রাঙামাটি ও বান্দরবান জেলার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কারুপণ্য, কিশোরগঞ্জের টেরাকোটা শিল্প, সোনারগাঁয়ের পাটের কারুশিল্প, নাটোরের শোলার মুখোশ শিল্প, মুন্সিগঞ্জের পটচিত্র, ঢাকার কাগজের হস্তশিল্পসহ এবার মোট ১০০টি স্টল রয়েছে।

এছাড়া প্রতিদিন গ্রাম বাংলার হারিয়ে যেতে বসা হাডুডু, কানা মাছি, ঘুড়ি উড়ানো, বউ সাজানো, গায়ে হলুদ, কাবাডি, লোক কারুশিল্প প্রর্দশনী, লোক জীবন প্রদর্শনী, পুতুল নাচ, বায়াস্কোপ, নাগরদোলা ও গ্রামীন খেলার আয়োজন থাকবে।

মাসব্যাপী লোকজ উৎসব চলবে আগামী ১৬ ফেব্রæয়ারী পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকবে এ উৎসব। লোক ও কারুশিল্পের ঐতিহ্যগত উপস্থাপনার প্রদর্শনীর আয়োজনে প্রতিদিন বিকাল ৪টা থেকে ৬টা লোক সংগীত এবং সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দলীয় লোক সংগীত ও লোকনৃত্যের আয়োজন করা হয়েছে।

ঢাকা থেকে আগত দর্শনার্থী ছানা উল্লাহ বলেন, এ মেলায় এলে গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া সকল শিল্পগুলোকে এক সাথে দেখতে পাই। এবার মেলায় পরিবারের সবাইকে নিয়ে এসেছি। আমার ছোট ছেলে ও মেয়েকে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যগুলো দেখাচ্ছি।  

নরসিংদী থেকে পরিবার নিয়ে আগত সাফায়েত আলম বলেন, প্রতি বছরই এ মেলায় আসি। লোকজ মেলা আসলে অনেক ভালো লাগে। এ মেলা থেকে ছেলে জন্য একতারা ও বাশিঁ কিনেছি। স্ত্রীর জন্য কিনেছি নকশিকাথা। মেলায় এসে সবাই বেশ আনন্দ পেয়েছে।
ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, লোকজ উৎসবে ছুটির দিনে দর্শনার্থীদের সংখ্যা এমনিতেই বেশি থাকে। আজ মেলার প্রথম শুক্রবার হওয়ায় দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভীড় ছিল।

তিনি আরও বলেন, আজ শুক্রবার ছুটির দিনে প্রায় ৮ হাজার ৫শত ৩০ জন দর্শনাথী লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনে প্রবেশ করেছে। এছাড়া বিদেশি ৬ জন পর্যটক প্রবেশ করেছে। এতে ফউন্ডেশনের প্রায় ৪ লাখ ৩৮ হাজার ২৮০ টাকার টিকেট বিক্রয় করা হয়েছে। আশা করছি সামনে আরও দর্শনার্থীও সংখ্যা বাড়বে।
 

রিফাত

×