ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১১ মাঘ ১৪৩১

শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশে স্কুলে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

তাহমিন হক ববী, নীলফামারী

প্রকাশিত: ২০:২৪, ২৪ জানুয়ারি ২০২৫

শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশে স্কুলে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

পরিদর্শনে গিয়ে পশ্চিম পঞ্চপুকুর জামতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে ডিসি

প্রাথমিক শিক্ষা, শিক্ষাস্তরের প্রথম ধাপ। সরকারি প্রাথমিক স্কুলগুলোর প্রতি অভিভাবকদের আস্থা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। প্রতিবছরই প্রাথমিকে শিক্ষার্থী ভর্তির হার কমছে। পাশাপাশি শিক্ষার্থী ঝরে পরার হারও বেড়েছে উত্তরের জেলা নীলফামারীতে। বিশেষ করে গ্রামের স্কুলগুলোর পরিস্থিতি নাজুক হয়ে পড়ছে।
এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের পথ খুঁজতে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির জন্য এবার নীলফামারী সদরের পশ্চিম পঞ্চপুকুর জামতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের পক্ষ থেকে  মাইকিং প্রচার শুরু করা হয়েছে। এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্বয়ং নীলফামারী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান। তিনি ওই স্কুলটি পরিদর্শনও করেছেন।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, ওই স্কুলের আশপাশে ৫টি পাড়া রয়েছে। সেখানে বিভিন্ন স্থনের ১৫টি স্কুল গড়ে উঠায় প্রাথমিক বিদ্যালয়টি কোণঠাসা হয়ে পড়ে। গতবছর ১১১ জন শিক্ষার্থী থাকলেও চলতি বছরে শিক্ষার্থী নেমে আসে ৫০ জনে।
এই সরকারি প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশ আর ঝরেপরা শিক্ষার্থীদের স্কুলমুখী করতে বিদ্যালয়ের পুরো ভবনকে নতুন করে সাজাতে নিজেদের পকেটের টাকা খরচ করে  রং তুলিতে পাঠ্যবইয়ের বিভিন্ন বর্ণে অঙ্কিত করে সাজিয়েছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. কোবাদ আলীসহ সহকারী শিক্ষকবৃন্দ। পাশাপাশি ঝরেপরা শিক্ষার্থীদের পুনরায় স্কুলমুখী করতে ভর্তি ক্যাম্পেনসহ নানা আয়োজন করে যাচ্ছেন একের পর এক। স্কুলতে কর্মরত ৫ জন শিক্ষক-শিক্ষিকাগণ বলছেন, শুধুমাত্র বেতনের জন্যই নয়, নিজেদের অর্জিত শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে কোমলমতি শিশুদের মেধা বিকাশে নিরলসভাবে কাজ করছেন তারা। প্রত্যন্ত এলাকায় এ বিদ্যালয়টি স্থাপিত হলেও, এটি একটি মডেল স্কুলে পরিণত করার প্রয়াস তাদের।
বিদ্যালয়ের প্রধান কোবাদ আলী জানান, শিক্ষকগণসহ সবার সহযোগিতায় এটি একটি মডেল স্কুলে পরিণত করার মানসিকতা নিয়েই এখানে কাজ করছি’। ক্যাম্পিং করার কারনে স্কুলে এ পর্যন্ত ৮৮ শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। আগামী দুই মাসে স্কুলে প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী ভর্তি করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এজন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে ক্যাম্পিং করা হচ্ছে। এলাকাবাসী জানান, সরকারি স্কুলে আগে শিক্ষার্থীদের টিফিনে বিস্কুট দেওয়া হতো। এখন সেটি বন্ধ। উপবৃত্তির টাকা শতভাব নিশ্চিত করা হয়েছে। এতে শিক্ষার্থী বাড়বে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, কুমারেশ চন্দ্র গাছি বলেন, ‘জেলার প্রায় ১ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। তবে, কোমলমনি শিক্ষার্থীদের মেধার বিকাশ আর ঝরেপরা শিক্ষার্থীদের স্কুলমুখী করতে পশ্চিম পঞ্চপুকুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অনেকগুলো ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। যা প্রশংসনীয়’।
নীলফামারী জেলা প্রশাসক, মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান, বলেন, ‘এ প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক কাবাদ আলী শিশুদের মেধা বিকাশ আর ঝরেপরা শিক্ষার্থীদের স্কুলমুখী করতে বেশকিছু ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন। যা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। আমি তাকে অভিনন্দন জানিয়ে সকল প্রকার সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছি।

×