অবকাঠামো নির্মাণের পর উদ্বোধন হলেও অলস পড়ে আছে রাজশাহী শিশু হাসপাতাল
আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা সংবলিত ২০০ শয্যার রাজশাহী পূর্ণাঙ্গ শিশু হাসপাতালের অবকাঠামো নির্মাণের পর উদ্বোধন হলেও গত দুই বছর ধরে অলস পড়ে আছে রাজশাহী শিশু হাসপাতাল।
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যখন শিশু রোগীর ভিড়, চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক। তখন কোটি কোটি টাকা খরচের পর অলস পড়ে থাকা হাসপাতাল চালু না হওয়া স্বাস্থ্য বিভাগের ব্যর্থতা বলে মনে করছেন রাজশাহীবাসী।
বৃহত্তর রাজশাহী অঞ্চলের শিশুদের উন্নত চিকিৎসাসেবার লক্ষ্য হাসপাতালের অবকাঠামো নির্মাণ করা হলেও কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও লোকবলের অভাবে হাসপাতালটি চালু করা যাচ্ছে না। অন্যদিকে হাসপাতালের ভবন নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা বলছেন, বারবার অনুরোধ করেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাড়া না পেয়ে তারা হতাশ।
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. শাহিদা ইয়াসমিন জানান, রামেক হাসপাতালের শিশু বিভাগে শয্যা সংখ্যা মাত্র ১৫০। চিকিৎসক সব মিলিয়ে ৪৩ জন। তবে সার্বক্ষণিক থাকেন ১৬ জন। রাতে দুজন ও সন্ধ্যায় চারজন চিকিৎসক সামাল দেন এসব রোগী।
তিনি বলেন, এখানে রোগী প্রচুর। এ কারণে বাড়তি চাপ সামলাতে হয়। বিশেষ করে ২৮ দিন পর্যন্ত বয়সী বাচ্চাদের এক বিছানায় ৩-৪ জন করে রাখা হয়। কাজ করতে অসুবিধা হয়। প্রতিবন্ধকতার মাঝেই কাজ করতে হয়।
ডা. শাহিদা ইয়াসমিন রাজশাহী শিশু হাসপাতালেও সদস্য। তিনি বলেন, হাসপাতালটি এখনো হ্যান্ডওভার নেওয়া হয়নি। সেখানে মেডিসিন ও সার্জারি আছে, ওয়ার্ড আছে কিন্তু ম্যান পাওয়ার নেই। এ হাসপাতাল চালু হলে রামেক হাসপাতালে অনেকটা চাপ কমে আসবে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী ফরহাদ সরকার বলেন, ২০২৪ সালের জুন মাসে হাসপাতাল ভবনের নির্মাণকাজ শেষ হয়।
পরে রাজশাহী পিডব্লিউডি-২-এর কর্মকর্তাদের কাছে একাধিকবার চিঠি দিয়ে ভবনটি হস্তান্তরের অনুরোধ জানিয়েছিলেন। তবে কর্তৃপক্ষ এখনো ভবনটি দখলে নেয়নি। এখন আমরা আমাদের নিজস্ব খরচে সরকারি স্থাপনা পাহারা দিচ্ছি। রাজশাহী পিডব্লিউডি-২-এর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (সিভিল) কাওসার সরকার জানান, হাসপাতাল ভবনটি হস্তান্তরের জন্য তারা রাজশাহী সিভিল সার্জনকে একাধিক চিঠি পাঠিয়েছিলেন।
কিন্তু পরবর্তী সময়ে তারা তাদের ইতিবাচক কিছু জানাননি। রাজশাহী সিভিল সার্জন দপ্তর জানায়, শিশু হাসপাতালের বিষয়ে তারা কিছু জানেন না। তবে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, রাজশাহী শিশু হাসপাতালটি চালু করতে কয়েক মাস আগে তারা প্রয়োজনীয় জনবল ও সরঞ্জাম চেয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছিলেন। কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এখনো পর্যন্ত কিছু জানায়নি।