ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১

কারখানা খোলার দাবিতে হুঁশিয়ারি

গাজীপুরে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকদের গণসমাবেশ

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর

প্রকাশিত: ২৩:০৬, ২১ জানুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ২৩:১৫, ২১ জানুয়ারি ২০২৫

গাজীপুরে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকদের গণসমাবেশ

ছবি : সংগৃহীত

ব্যাংকিং সুবিধাসহ বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের বন্ধ সকল কারখানা খুলে দেওয়ার দাবী জানিয়েছেন শ্রমিকরা। মঙ্গলবার গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুরের সানসিটি মাঠে অনুষ্ঠিত এক গণসমাবেশ থেকে এ দাবী জানানো হয়। একই সাথে এলসি খুলে দেয়া ও  বকেয়া বেতন পরিশোধেরও আহ্বান জানান তারা। বন্ধ ১৬ কারখানার হাজার হাজার শ্রমিক, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ তাদের পরিবারের সদস্যরা এ সমাবেশে অংশ নেন। তাদের দাবী আদায় না হওয়া পযর্ন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয় সমাবেশ থেকে।

পুলিশ ও শ্রমিক সূত্রে জানা গেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বাণিজ্য উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের মালিকানাধীন বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের ১৬টি কারখানায় প্রায় ৪২ হাজার শ্রমিক কর্মচারী কাজ করছিল। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে তাদের বেতন নিয়মিত পরিশোধ করতে পারছিল না কর্তৃপক্ষ। এজন্য বকেয়া পরিশোধের দাবীতে শ্রমিকরা বেশ কয়েক দফা চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করে আসছিল। এক পর্যায়ে সরকার ঋণ দিয়ে শ্রমিকদের কয়েক মাসের বেতন পরিশোধের ব্যবস্থা করে। এদিকে গত ১৫ ডিসেম্বর শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বেক্সিমকোর শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর শ্রম ও ব্যবসায় পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের কমিটির সভার সিদ্ধান্তের পর বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের ১৬ কারখানা বন্ধ করা হয়। এরপর থেকে শ্রমিকরা বকেয়া বেতনসহ বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়ার জন্য আন্দোলন করে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় তারা এ দাবী আদায়ের লক্ষ্যে মঙ্গলবার এ  সমাবেশ  আয়োজন করে।


বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের একটি কারখানার কর্মকর্তা কাইয়ূম রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গনসমাবেশে শ্রমিক নেতা মোশরেফা মিশু, কর্মকর্তা কার্মচারী ও শ্রমিকরা বক্তব্য রাখেন।

এসময় শ্রমিকরা দাবি জানিয়ে বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানের সকল কারখানা পুনরায় চালু করতে হবে। আমাদের নিজেদের কর্মসংস্থান ও পরিবারের ভবিষ্যৎ রক্ষার লক্ষ্যে আমরা সবাই একত্রিত হয়েছি। তারা বলেন, বুধবার (২২ জানুয়ারি) সকালে আমরা কারখানায় কাজে যোগ দিতে চাই।  এসময় শ্রমিকদেরকে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়।

কারখানা ম্যানেজার মুন্না বলেন, বেক্সিমকোর ৪২ হাজার শ্রমিক কর্মচারী কর্মকর্তা মানবেতর জীবনযাপন করছে। কেন আপনারা আমাদের খোঁজ নিচ্ছেন না। কেন এই সমস্যার সমাধানের উদ্যোগ নিচ্ছেন না?

শ্রমিক নেতা মোশরেফা মিশু বলেন, এই সমাবেশ থেকে যে কর্মসূচি ষোষণা করবো  ৪২ হাজার শ্রমিক সবাই এতে অংশগ্রহণ করবে। বর্তমান সরকারের কাছে তিনটি দাবি তুলে ধরবো। আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের  বন্ধ কারখানা খুলে দিতে হবে। বন্ধ  কারখানার কোন শ্রমিককে ছাঁটাই করা চলবেনা এবং প্রতিমাসের ৭ তারিখের মধ্যে শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে পোশাক কারখানা শ্রমিকরাও ছিলো। তাহলে সবাই সুবিধাভোগী হলে পোশাক কারখানা সুবিধা পাবেনা কেন?

আমি বলতে চাই, বুধবার (২২ জানুয়ারি) বিকেল ৩ টা পর্যন্ত সরকারকে সময় দেওয়া হলো। সরকার যদি দাবী না মানে তাহলে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি পালন করা হবে।

গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২ কোনাবাড়ি জোনের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আবু তালেব জানান, মঙ্গলবার বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকরা কারখানা খোলার দাবিতে ও বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে গণসমাবেশ করেছে। তবে সমাবেশের কারণে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
 

মোস্তাফিজুর রহমান টিটু/মো. মহিউদ্দিন

সম্পর্কিত বিষয়:

×