উপজেলার উধুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নান্দনিক সৌন্দর্যে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে
স্বরবর্ণ, ব্যঞ্জনবর্ণ, ইংরেজি বড় ও ছোট হাতের অক্ষর, নানা ছন্দ, পশু-পাখি, কবি ও বীরশ্রেষ্ঠের ছবিসহ শিক্ষণীয় নানা বিষয় নিয়ে সাজানো হয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দেওয়ালগুলো। এক কথায় দেওয়ালগুলো হয়ে উঠেছে শিক্ষার পুঁথি।
উল্লাপাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এমন নান্দনিক বিদ্যালয়ের দেখা মিলেছে। বিশেষ করে উধুনিয়া, মোহনপুর বড়পাঙ্গাসী বিল অধ্যুষিত এসব ইউনিয়নগুলোতে প্রাথমিক শিক্ষার বিকাশ ঘটাতে প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয় মুখী করতে রং তুলিতে নান্দনিক সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
উধুনিয়া ইউনিয়নের দত্তখারুয়া, মোহনপুর, চরমোহনপুর, চন্ডিপুর, ভাতবাড়া মামুদপুর, ওলিদহসহ বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘুরে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের সামনে বারান্দায় টবে নানান রকম ফুল, দেওয়ালগুলোতে বাংলা ইংরেজি বর্ণ, নানা ছন্দ, পশু-পাখি। এ ছাড়া অক্ষর দিয়ে পশু-পাখি, একতারা, ঈগল, হাতি, শহীদ মিনার ছাড়াও গ্রামীণ চিত্রও তুলে ধরা হয়েছে। আবার কোথাও কোথাও ছন্দে ছন্দে লেখা ‘শিক্ষিত মা এক সুরোভিত ফুল, প্রতিটি ঘর হবে একেকটি স্কুল’, ‘আমাদের স্কুল আনন্দের এক রঙ্গিন ফুল, শিক্ষা’ ‘মেধাই মানুষের বড় সম্পদ’ ইত্যাদি উপদেশ ও নীতিকথা। এ ছাড়া আছে ছবিসহ বিশ্বকবি, জাতীয় কবি ও বীরশ্রেষ্ঠদের নাম। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উৎসাহ উদ্দীপনা বেড়েছে।
সৌন্দর্যের কারণে ঝরেপড়া শিক্ষার্থী কমার পাশাপাশি শিক্ষার মানও বেড়েছে। তা ছাড়া পথচারী ও দর্শনার্থীদের প্রশংসা কুড়াচ্ছেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি, শিক্ষকম-লী ও শিক্ষা বিভাগ। উধুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হারুন-অর রশিদ বলেন, স্যারদের সহযোগিতায় বিদ্যালয় সাজানো হয়েছে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সুন্দর পরিবেশ নান্দনিক সৌন্দর্যের কারণে শিক্ষার্থীদের পড়ার আগ্রহ বাড়ছে। তারা বিদ্যালয়ে শিক্ষার পাশাপাশি সুস্থ বিনোদনও পাচ্ছে।
এ বিষয়ে উল্লাপাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সানোয়ার হোসেন বলেন, উপজেলার সব প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোই নতুনরূপে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। বিভিন্ন উপায়ে শিশুদের স্কুল ভীতির পরিবর্তে স্কুল প্রীতির চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা সকলে সম্মিলিতভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছি। আশা করি প্রাথমিক শিক্ষায় উল্লাপাড়া উপজেলা রোল মডেল হবে।
লক্ষ্মীপুরে দেয়ালিকা উৎসব
নিজস্ব সংবাদদাতা লক্ষ্মীপুর থেকে জানান, এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই, এই প্রতিপাদ্য বিষয় নিয়ে তারুণ্যের উৎসব উপলক্ষে জুলাই বিপ্লবের স্মৃতি তুলে ধরে লক্ষ্মীপুরে শতাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে দেয়ালিকা উৎসব পালিত হয়েছে। মঙ্গলবার দিনব্যাপী এ উৎসব পালন করা হয়। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সদর উপজেলা সম্মেলন কক্ষে ব্যতিক্রমী দেয়ালিকা উৎসবের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার।
এ সময় বক্তব্য রখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (আইসিটি ও শিক্ষা) সম্রাট খীসা, সদর উপজেলা নবাগত নির্বাহী কর্মকর্তা জামশেদ আলম রানা, প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কে.এম জামান প্রমুখ। বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবরা দেয়ালিকা উৎসবে অংশ নেন। জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে শহীদ আবু সাইদ ও মুগ্ধসহ ছাত্র-জনতার প্রতিচ্ছবিসহ আন্দোলন সংগ্রামে নানান চিত্র তুলে ধরেন শিক্ষার্থীরা। পুরো সম্মেলন কক্ষের চারপাশে আওয়ামীলীগ সরকার ও আইনশৃংখলা বাহিনীর নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে দেয়ালিকা দিয়ে সাজানো হয়।
পরে জেলা প্রশাসকসহ অন্যরা ঘুরে ঘুরে দেয়ালিকা পরিদর্শন করেন। জেলা প্রশাসক রাজিব কুমার সরকার বলেন, জেলায় ৭৩২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এখন এই ৭৩২টি বিদ্যালয়ে উৎসব বইছে। আজকে শুধু সদর উপজেলার শতাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশ গ্রহণ করে। শিক্ষার্থীদের অসাধারণ মেধা ও প্রতিভার এতে চমৎকার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।
