ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ৭ মাঘ ১৪৩১

দুই মাস আগেই মৌসুমি ফল 

টেকনাফের বাজারে আগাম আম দাম বেশি

এইচএম এরশাদ, কক্সবাজার

প্রকাশিত: ০০:৫৪, ২১ জানুয়ারি ২০২৫

টেকনাফের বাজারে আগাম আম দাম বেশি

.

আম মৌসুমি ফল। মৌসুম যখন আসে-তখন দেশের আম বাগানের মালিকরা বিভিন্ন জাতের আম বাজারজাত করে থাকেন। বিভিন্ন বাজার, স্টেশন ও যানবাহনেও আম বিক্রেতাদের দেখা মেলে। তবে মৌসুম না হলেও টেকনাফে বিভিন্ন বাজারে এখন পাওয়া যাচ্ছে আগাম জাতের কাঁচা আম। তবে দাম বেশি। 
স্থানীয়রা জানান, খাওয়া-দাওয়ায় মানুষের চাহিদার কমতি নেই। মৌসুম হোক বা না হোক চিরচেনা ফল যদি বাজারে পাওয়া যায়, তাহলে কিনে নিয়ে যাবে ঘরে-এমন ভোক্তার অভাব নেই টেকনাফে। আগে পার্শ্ববর্তী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে কাঁচা-পাকানা প্রচুর আম আসত টেকনাফে। কিন্তু রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে পালিয়ে আসার পর থেকে ওপারের আম আর আসে না টেকনাফ বাজারে। বর্তমানে টেকনাফে কিছু ব্যক্তি আম বাগান করেছেন। তাদের বাগানে, কিছু গাছে আগাম আম ধরেছে। সাইজ বেশ বড়ও হয়েছে। অন্য এলাকার মানুষের বাগান বা ভিটে বাড়িতে রোপণ করা গাছে সবেমাত্র মুকুল আসছে। তবে সব্বির আহমদের তিনটি গাছে তা ধরে বড় হওয়ায় তিনি আম বাজারজাত করছেন। 
টেকনাফের কয়েক ব্যক্তি জানান, আমের মৌসুম শুরু হতে আরও কমপক্ষে দুই মাস সময়ের প্রয়োজন রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে নতুন কাঁচা আম বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। ভোক্তাদের জন্য এটি সুসংবাদ বটে। কাঁচা আম বাটা মাছের সঙ্গে রান্না করে খাওয়া যায়। এতে ওই তরকারি খুবই সুস্বাধু হয়। ছোট ছোট বাটা মাছকে এই জন্য আমবাটা হিসেবে চেনে কক্সবাজারের মানুষ। সীমান্ত এলাকার কিছু কিছু মানুষ ঘরে রান্না করার সময় টক জাতের কিছু সংযুক্ত করেই থাকে। খাওয়া-দাওয়ার সময় তরকারির ঝুলে যেন টক মেশানো থাকে এবং তা মুখে তুললে যেন টকের স্বাদ জিহ্বায় লাগে। এজন্য আমবাটা মাছ দিয়ে খাওয়ার জন্য বাজারে আম দেখলে লোভ সামলানো যায় না। যত টাকার বিনিময়ে হোক সে আম কিনে নিতেই হবে। 
সোমবার টেকনাফ পৌরসভার বাসস্টেশন সড়কের পাশে ফুটপাতে সাজিয়ে রেখে বিক্রি করা হচ্ছিল কাঁচা আম। মৌসুমের আগাম ফল কাঁচা আম দেখে অনেকে ভিড় করেছে ওই আম ব্যাপারীর কাছে। প্রতি কেজিতে ওজনে ধরছে ছয় থেকে সাতটি আম। এক একটির আমের ওজন ১৫০ গ্রামের মতো। প্রতি কেজি বিক্রি করা হচ্ছে ৫৫০ টাকায়। হঠাৎ করে বাজারে কাঁচা আম দেখতে পেয়ে স্থানীয় লোকজনকে আম কিনতে দেখা গেছে। তবে দেখার জন্য ভিড় করলেও দাম বেশি হওয়ায় খুব কম লোকই আম কিনছে। টেকনাফ সদর ইউনিয়নের মিঠাপানির ছড়া গ্রামের সব্বির আহমেদ নিজের বাগানের ২৫ কেজি কাঁচা আম নিয়ে টেকনাফ বাজারে আসেন। 
এ সময় স্থানীয় ব্যবসায়ী নুরুল হোসাইন ও মোহাম্মদ কাছিম ছোট-বড় আমগুলো কেজি ৪০০ টাকা করে ১০ হাজার টাকায় ক্রয় করে নেন নতুন আম। ব্যবসায়ীরা বলেন, আমগুলো কেজি হিসেবে বিক্রি করে ১৩ হাজার ৭শ’ টাকায় বিক্রি করা যাবে। বিক্রি শেষ হলে ৩ হাজার ৭শ’ টাকা লাভ হবে বলে আশা করেন ব্যবসায়ীরা। বাগান মালিক সব্বির আহমদ বলেন, বাড়ির আঙিনায় কয়েক বছর ধরে তিনটি গাছে আগাম আম পাওয়া যাচ্ছে। আম গাছে আগাম ফল আসায় ভালো দামে আম বিক্রি হচ্ছে। গাছে আরও প্রচুর আম রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আশপাশের লোকজনের বাড়িতে এখনো আম গাছে মুকুলও আসেনি। এ অবস্থায় আমার গাছের আম বাজারে বিক্রিয় করা যাচ্ছে। এটা খুবই আনন্দের বিষয়।’  

×