ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ৬ মাঘ ১৪৩১

মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় দেশ সেরা খুলনার সুশোভন

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা

প্রকাশিত: ২১:২১, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫

মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় দেশ সেরা খুলনার সুশোভন

ছবিঃ জনকণ্ঠ

এ বছর মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হয়েছে খুলনার সুশোভন বাছাড়। সুশোভন খুলনা নগরীর বড় বয়রা দাসপাড়া এলাকার সুভাষ চন্দ্র বাছাড় ও বন্দনা সেনের একমাত্র ছেলে। সুশোভনের কৃতিত্বের এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে রবিবার (১৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় প্রতিবেশী আত্মীয়-স্বজন ভিড় করে তার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। এমন কৃতিত্বে গর্ববোধ করেন সকলে। সুশোভন বলেন ভালো ফলাফলের জন্য ভালো পড়ালেখার কোন বিকল্প নাই।


সে এ বছর নগরীর সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে। এর আগে টিএনটি আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ২০২২ সালে এইচএসসি পাস করে। সুশোভন পিএসসি, জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসি প্রতিটি পরীক্ষায় সব বিষয়ে লেটার মার্কস নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে এবং প্রতি ক্লাসে সে বৃত্তিপ্রাপ্ত হয়েছে। দেশ সেরা হয়ে সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে সুশোভন বাছাড়। একইসঙ্গে সুশোভনের বাবা ও মা তার শিক্ষকসহ সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন সন্তানের এমন সাফল্যে। আগামীতে সে যেন দেশ সেরা একজন চিকিৎসক হয়ে দরিদ্র মানুষের সেবা করতে পারে এজন্য সকলের দোয়া আশীর্বাদও কামনা করেছেন তারা। 


সুশোভন বলেন, পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করতে হলে পড়ালেখার কোন বিকল্প নাই এবং সেই পড়ালেখা হতে হবে বুঝে শুনে। সারা পাঠ্যপুস্তকে কতটুকুন প্রয়োজন আর কোনটা প্রয়োজন না সেটা জেনে বুঝে পড়তে হবে। তবে নিয়মিত বইয়ের সংস্পর্শে থাকার কোন বিকল্প নাই ভালো জ্ঞান অর্জনের জন্য। সেটাই হয়েছে আমার জীবনে। আমি এ পর্যন্ত পাঠ্যপুস্তক ছাড়া আর কিছুই ভাবি নি সে কারণে প্রতিটা পরীক্ষাই আমি সাফল্য পেয়েছি। তবে এই সাফল্যের পেছনে আমার বাবা-মা ও শিক্ষকদের অবদান সবচেয়ে বেশি। এছাড়া আমার সহপাঠীরাও আমাকে নানাভাবে সহযোগিতা করেছে। সুশোভন আরো বলেন, মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে আমি ভেবেছিলাম মেধাতালিকায় সেরা ১০ জনের একজন হবো কিন্তু প্রথম হব এটা ছিল আমার কল্পনাতীত। এটা হয়তো আমার ভাগ্যকে সুপ্রসন্ন করেছে। আগামীতে আমি একজন নিউরো সাইন্সের দেশ সেরা চিকিৎসক হতে চাই। একটা হাসপাতালও করতে চাই। যেখানে দরিদ্র মানুষের স্বাস্থ্যসেবা দিব। আশা করছি আমার এই স্বপ্ন বাস্তবায়ন সৃষ্টিকর্তা এবং দেশের মানুষ সহায়ক হবে।

সুশোভনের মা বন্দনা সেন বলেন, ছেলের এমন সাফল্য আমাদেরকে আনন্দসাগরে পাঠিয়েছে। খবরটি শুনে আমি কেঁদে দিয়েছিলাম। এত আনন্দ পেয়েছি যে সে কারণেই আমার চোখ দিয়ে জল এসেছে। তবে সুশোভন কখনো রাত জেগে পড়েনি, সকাল সাতটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত শুধুমাত্র দিনের দৈনন্দিন কাজ ছাড়া সব সময় পড়ালেখা করতো। বই পড়া এবং মুখস্থ করে সেটা লেখা তার প্রতিদিনকার কাজ ছিল। ছোটবেলা থেকে তার স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়ার। দেশবাসীর আশীর্বাদে সেটা হয়তো হবে এজন্য তিনি সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতাও আশীর্বাদ চেয়েছেন। 
সুশোভনের বাবা স্কুল শিক্ষক সুভাষ চন্দ্র বাছাড় বলেন, আমার ছেলে ভীষণ ভদ্র ও নমনীয়। পড়ালেখায় ছিল তার প্রতিদিনকার ধ্যান-জ্ঞান। সে কারণেই সবকটি পরীক্ষায় সে সকল বিষয়ে লেটার মার্কস নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। বৃত্তিপ্রাপ্ত হয়েছে সকল ক্লাসে। তার এ সাফল্যের জন্য আমরা পরিবারের পক্ষ থেকে সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই।

তিনি আরো বলেন, শুধু আমার ছেলেকেই নয় আমার শিক্ষার্থীদের আমি বলি মন দিয়ে অধ্যবসায় কর, কষ্ট কর ভালো ফল আসবেই। যেমনটি হয়েছে আমার ছেলের ক্ষেত্রে। আশা করি অন্যরাও এই সাফল্য ধরে রাখার চেষ্টা করবে। পড়ালেখার প্রতি ছাত্রছাত্রীরা আরও মনোযোগী হবে।

জাফরান

×