চন্দনাইশে ধানি জমির মাটি কাটার সময় স্কেভেটর আটক
চন্দনাইশে স্কেভেটর দিয়ে মাটি কাটার সিন্ডিকেট বেপরোয়া হয়ে উঠছে। প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে সর্বত্র দিন-রাত ফসলি জমি থেকে মাটি কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছে অর্ধশতাধিক সিন্ডিকেট। প্রশাসনের পক্ষ থেকে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেও কোনোভাবেই বন্ধ করা যাচ্ছে না টপসয়েল কাটা।
মাটি দস্যুরা কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বেপরোয়াভাবে এক্সকেভেটর দিয়ে ফসলি জমির টপসয়েল কেটে ড্রাম ট্রাক ও পিকআপ ভ্যানে করে ইটভাঁটি, পুকুর, ডোবা ও নতুন বাড়ির জায়গায় মাটি ভরাট করছে। মাটি কাটায় নিয়োজিত ড্রাম ট্রাক ও পিকআপ ভ্যান থেকে মাটি পড়ে সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে, ধূলিময় সড়কে চলাচলে মানুষজনকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। কৃষকরা বেশি লাভের আশায় তাদের ফসলি জমির টপসয়েল মাটি কাটা সিন্ডিকেটের নিকট বিক্রি করে দিচ্ছেন। ফসলি জমির টপসয়েল কাটার কারণে কৃষিজমি ধ্বংস, সড়কগুলো নষ্ট ও ধুলাবালির কারণে শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে ধানি জমির টপসয়েল কেটে নিয়ে গেলে সে জমিতে ১৫ বছর ধরে ফসল উৎপাদন হয় না। মাটি দস্যুরা দিন-রাত মাটি কাটায় ড্রাম ট্রাক ও পিকআপ ভ্যানের শব্দেও এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে রাত ১০টার পর থেকে ভোর পর্যন্ত উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন, ২টি পৌরসভার বিভিন্ন বিলের ধানি জমির টপসয়েল কেটে নিয়ে যাচ্ছে। বছরের প্রথম দিক থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাজিব হোসেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ডিপ্লোমেসি চাকমা প্রায় সময় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছেন। কিন্তু জরিমানা, বিনাশ্রম কারাদণ্ড, ট্রাক ও এক্সকেভেটর জব্দ করেও কোনোভাবে বন্ধ করা যাচ্ছে না মাটি কাটা সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য।
সরেজমিন গিয়ে বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন, ২টি পৌরসভায় অর্ধশতাধিক মাটি কাটা সিন্ডিকেট সক্রিয় রয়েছে। দিনের চেয়ে রাতে বেশি ফসলি জমি ও পাহাড়ের টিলার মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন ইটভাঁটি, পুকুর, ডোবা, নতুন বাড়ির জায়গায় মাটি ভরাট, নিচু জমি ভরাট করার কাজে।
চন্দনাইশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাজিব হোসেন জানান, মাটি কাটার সংবাদ পেলে যত রাতই হোক অভিযানে চলে যাচ্ছেন তাঁরা। তিনি বলেন, আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দিন-রাত মাটি কাটা সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে যাচ্ছি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আজাদ হোসেন বলেন, কৃষির মূল উপাদান টপসয়েল, এটা বিক্রি নিষিদ্ধ। কেউ অভিযোগ দিলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চন্দনাইশ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ডিপ্লোমেসি চাকমা বলেছেন, প্রতিদিন মাটি কাটা লোকজনের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। উপজেলার একদিকে অভিযান পরিচালনা করলে তারা অন্যদিকে মাটি কাটে।