ফরিদপুরের সালথায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ৫টি বাড়িতে হামলা চালিয়ে বসতঘর ভাংচুর, ১টি ঘরে অগ্নিসংযোগ ও ১টি দোকান থেকে টিভি ফ্রিজ লুট করে নিয়ে গিয়েছে প্রতিপক্ষের লোকজন। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুইজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
রোববার (১৯ জানুয়ারী) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের কিত্তা, বোয়ালিয়া ও বিভাগদী গ্রামে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, গতকাল শনিবার সালথা উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের নকুলহাটি বাজারে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের মারামারীর জেরধরে রবিবার সকালে কিত্তা গ্রামের সালথা উপজেলা যুবদল নেতা হাসান আশরাফের বিল্ডিংয়ে ভাঙচুর করে টিনের ঘরে আগুন দেওয়া হয়, ইন্তাজ মাতুব্বরের বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়, শফিকের দোকান ভাঙচুর করে টিভি ও ফ্রিজ লুট করে নিয়ে যায়, আটঘর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের বিএনপি'র সাধারণ সম্পাদক বোয়ালিয়া গ্রামের মাজেদ মোল্লার দুটি ঘর, ইউনুস মোল্লার দুটি ঘর ও বিভাগদী গ্রামের শহীদ সরদারের বাড়ি ঘর ভাঙচুর করেন সালথা উপজেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক নাছির মাতুব্বর, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল হাসাল লাবলু, সালথা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওহাব মিয়া, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক আব্দুল আলীম মোল্যার সমর্থকরা। এহামলায় কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
যুবদল নেতা হাসান আশরাফ অভিযোগ করে বলেন, শনিবার সন্ধ্যায় নকুলহাটি বাজারে মারামারির ঘটনার সময় আমি বিএনপি'র সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদের সাথে বল্লভদী একটি অনুষ্ঠানে ছিলাম। আজ রবিবার সকালে সালথা উপজেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক নাছির মাতুব্বর, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল হাসাল লাবলু, সালথা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওহাব মিয়া, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক আব্দুল আলীম মোল্যার নেতৃত্বে কয়েকশত লোকজন নিয়ে আমার বাড়িতে অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করে। এছাড়াও আমার কয়েক সমর্থকের বাড়ি-ঘর দোকানপাট ভাঙচুর করে লুটপাট করে নিয়ে যায়।
এবিষয়ে জানতে চাইলে সালথা উপজেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক নাছির মাতুব্বর বলেন, আমি ও আমার লোক এ হামলার সঙ্গে জড়িত নয়। কে-বা কাহারা এ হামলার সঙ্গে জড়িত তা আমার জানা নেই। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল হাসাল লাবলুর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
সালথা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওহাব মিয়া বলেন, 'আমি দু'দিন ধরে এলাকা ছাড়া। এছাড়া এটা বিএনপি আর বিএনপির মধ্যে ঝামেলা। আমি এবং আমার লোকজন এর সঙ্গে জড়িত নয়।'
সালথা উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক আব্দুল আলীম মোল্যা বলেন, একসময় মাতুব্বরি সর্দারি করতাম, এখন আর করিনা। আমার লোকজনও নেই। তাই ওই ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত নই। তিনি বলেন, গতকাল শনিবার নকুলহাঁটি হাটে একজনকে মারধর করা হয়। আর মারধরের শিকার হওয়া ব্যক্তি লোকজন জড়ো করে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
এব্যাপারে সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান বলেন, পূর্ব থেকেই ওই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন ছিল। ঘটনা ঘটার সাথে সাথেই পুলিশ ঘটনাস্থলগুলোতে পৌঁছে যায়। এখন এলাকা শান্ত রয়েছে।
তিনি বলেন, এ পর্যন্ত এ ঘটনাগুলোর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুইজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
নুসরাত