নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইলের চৌধুরীবাড়ি শান্তিনগর এলাকার একটি সুতার কোন তৈরি কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। অগ্নিকান্ডের পর নারায়ণগঞ্জ সদর ও হাজীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ৬টি ইউনিটের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুই ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। আগুনে সুতার কোন তৈরি কারখানাসহ চারটি কারখানা ও গোডাউন পুড়ে গেছে। এতে আগুনে বিপুল পরিমাণ ্ক্ষতি হয়েছে বলে মালিক পক্ষ দাবি করেছেন।
বুধবার সকাল সোয়া ৭টার দিকে অগ্নিকান্ডের এ ঘটনাটি ঘটে। বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টায় অগ্নিকান্ডের এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস এ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল্লাহ আল আরেফিন।
ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা জানায়, নূর আলমের মালিকানাধীন নুর পেপার কোন তৈরি কারখানায় অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তের মধ্যে আগুনে পুরো কারখানার গার্মেন্টেসের ওয়েস্টেজের গোডাউনে ছড়িয়ে পড়ে। অগ্নিকান্ডের পর চারটি গার্মেন্টস ওয়েস্টেজের গোডাউনে ছড়িয়ে পড়লে আগুন আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করে। আগুন লাগার খবর পেয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর (মন্ডলপাড়া) ও হাজিগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ৬টি ইউনিটের কর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। স্থানীয়রা জানায়, শুরুর দিকে একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে আসে। এসময় দ্রুত পানি ফুরিয়ে গেলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পেতে হয়। পরে আগুনের তীব্রতা বাড়তে থাকলে আরো পাঁচটি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে।
এদিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরাও কাজ করেছে। তারা বিভিন্নভাবে ফায়ার সার্ভিসকে সহযোগিতা করেছে। শরীফ হোসেন নামে এক স্বেচ্ছাসেবক জানান, সকাল সাতটার দিকে নূর আলমের মালিকানাধীন একটি কোন তৈরি কারাখানা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে সেটি পাশের গার্মেন্টস ওয়েস্টেজের চারটি গোডাউনে ছড়িয়ে পড়ে। আগুনে কারখানা ও গোডাউনগুলো সম্পুর্ণ পুড়ে যায়। তবে আগুন লাগার শুরুর দিকে কোন তৈরি কারখানার কিছু মালামাল অক্ষত উদ্ধার করা হয়। আলমগীর নামে ক্ষতিগ্রস্থ এক ব্যাবসায়ী জানান, গোডাউনে গার্মেন্টস ওয়েস্টেজ এলডি পলিথিন ছিলো। আগুনে সব পুড়ে গেছে। গোডাউনে তার পাঁচ লাখ টাকার মালামাল ছিলো বলে দাবি করেন এই ব্যাবসায়ী। এছাড়াও মুসলিম, বাবুল, হাশেম নামে আরো তিনজন ব্যাবসয়ীর তিনটি ওয়েস্টেজ গোডাউন আগুনে সম্পুূর্ণ পুড়ে গেছে বলে জানা যায়। এদিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসকে সহযোগিতা করতে গিয়ে স্থানীয় জিহাদসহ দুইজন স্বেচ্ছাসেবী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস এ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক মো. আবদুল্লাহ আল আরেফিন জানান, আমরা সকাল ৭টা ২৫ মিনিটে আগুন লাগার খবর পাই। খবর পাওয়ার সাথে সাথে হাজীগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ সদর (মন্ডলপাড়া) ফায়ার সার্ভিস স্টেশন থেকে ছয়টি ইউনিট ঘটনস্থলে যায়। ঘটনাস্থলে এসে আমরা দেখেছি রেজিন, প্যাকিং বক্স, কুনিং এবং ক্যামিকেলসহ বিভিন্ন উপাদান এখানে পর্যাপ্ত পরিমানে ছিলো। সেই সাথে আগুনের ভয়াবহতাও ছিলো অনেক। আমাদের ছয়টা ইউনিট দ্রুত আগুন নির্বাপনের চেষ্টা করেছে। শুরুতে পানির অনেক সংকট ছিলো। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় বিভিন্নভাবে পানির ব্যবস্থা করা হয়। সকাল সাড়ে নয়টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। সকাল সাড়ে ১০টায় আগুন সম্পুর্ণভাবে নির্বাপন করা সম্ভব হয়। তিনি বলেন, আগুনে নুর পেপার কোন তৈরি কারখানা, আরাফাত এন্টারপ্রাইজ, মোস্তফা পেপার কোন তৈরি কারখানা, আলহেলা নিট ওয়্যার লিমিটেড নামের কারখানা ও গোডাউন ক্ষতি সাধিত হয়। আগুনে পেপার, কোন, পলিথিন, বোর্ড ও অন্যান্য মালামাল পুড়ে যায়। এ সময় পাশর্^বর্তী বসতবাড়ির টিনশেডও পুড়ে গেছে। তিনি আরো বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে গ্যাস লিকেজ থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটেছে। আগুনে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে। তিনি দাবি করেন আগুনের ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি
মহি