ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১

তীব্র গ্যাস সংকটে ভোগান্তি 

কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৩:১০, ১৫ জানুয়ারি ২০২৫

তীব্র গ্যাস সংকটে ভোগান্তি 

ছবি : জনকণ্ঠ

তীব্র গ্যাস সংকটে কেরানীগঞ্জ, ভোগান্তিতে পড়েছে ১২ টি ইউনিয়নের এলাকাবাসী। দিনরাত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ২৩ ঘণ্টাই থাকছে না গ্যাস। এতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে। গত দুই মাস ধরে রাত তিনটার সময় গ্যাস আসলে ভোর ৫ টায় গ্যাস চলে যায়। গত দশ দিন ধরে গ্যাস সরবরাহ নেই বললেই চলে, আর এতে চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছেন কেরানীগঞ্জবাসী।  

আজ (১৫ জানুয়ারি ) বুধবার সকালে কেরানীগঞ্জের আটি বাজার, কালিন্দী, নেকড়োজবাগ, বামুনসুর, কলাতিয়া, আঁকছাইল, নিশানবাড়ি, বেলনা, তালেপুর, মোরাগুনা, জয়নগর, ভাওয়াল সহ কেরানীগঞ্জের বেশ কয়েকটি এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিটি এলাকায় গ্যাস-সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। সকাল থেকে রাত ৩ টা  পর্যন্ত গ্যাস পাচ্ছেন না তারা। সারাদিন গ্যাস থাকে না, সন্ধ্যা পেরিয়ে কোনো কোনো এলাকায় গ্যাস আসে রাত ৩ টায় আবার ভোর ৫ টায় গ্যাস চলে যায়। আবার কোনো কোনো এলাকায় রাত ৩ টায় গ্যাস আসলেও তাতে চাপ নেই বললেই চলে। 

কালিন্দী বাসিন্দা তারেক বলেন, আমাদের এলাকার অনেক স্থানে দিনে গ্যাস থাকে না। গভীর রাতে কিছুটা পাওয়া গেলেও তার পরিমাণ খুবই নগণ্য। কিন্তু আজকে কয়দিন যাবৎ গ্যাস নেই বললেই চলে। আমাদের এলাকায় গ্যাস না থাকার বিষয়টি দীর্ঘদিনের সমস্যা। আগে রাতে ২/৩ ঘণ্টা গ্যাস পাওয়া যেত। এখন গ্যাস আসলেও সেই গ্যাসের চাপ ও এখন কমে গেছে।

কালিন্দীর গদাবাগ ইউনিয়নের গৃহিনী মরিয়ম বলেন, দিনের বেলায় গ্যাসের কোনো নামগন্ধ থাকে না। রাত ৩ টার পর থেকে চুলায় গ্যাসের দেখা পাওয়া যায়। কিন্তু এত রাতে তো আর রান্নাবান্না সম্ভব না, তাই বাধ্য হয়ে সিলিন্ডার ব্যবহার করতে হচ্ছে। লাইনের বিল তো দেওয়া লাগেই, এখন সিলিন্ডারের খরচও যুক্ত হয়েছে। আবার গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে অফিসে গিয়েও ভোগান্তি পোহাতে হয়। গ্যাস থাক আর না থাক প্রতি মাসে আমাদের গ্যাসের বিল ঠিকই দিতে হবে। অথচ আমরা আজকে ২ বছর ধরে গ্যাসের সমস্যায় ভুগছি। গ্যাস তো এখন সোনার হরিনের মতো হয়েছে রাত ৪ টায় আসে ভোর ৫ টায় চলে যায়। আমরা এখন এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার, লাকরির চুলা,দিয়েই রান্না করি। 

একই এলাকার আরেক গৃহিনী রেখা আক্তার বলেন, দিনের বেলায় চুলায় কোনো গ্যাস পাওয়া যায় না। রান্নাবান্না সব সিলিন্ডার গ্যাসেই করতে হয়। বর্তমান বাজারে সিলিন্ডার গ্যাসের খরচ বহন সহ লাইন গ্যাসের খরচ বহন করা বাড়তি বোঝা ছাড়া আর কিছুই না। এখন গ্যাস লাইন বন্ধ করতেও নাকি টাকা লাগে শুনি। কি করবো বসে বসে শুধু বিল দেব।

কেরানীগঞ্জ তিতাস গ্যাস অফিসে গেলে তারা বলেন, কিছু দিন ধরে চাহিদা অনুযায়ী গ্যাসের সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে না। পাইপলাইনে গ্যাসের চাপ কমে গেছে। গ্রাহকেরা নিয়মিত অভিযোগ করছেন। কিন্তু আমরা কোনো
সমাধান দিতে পারছিনা। তবে আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি গ্যাস সংকটের সমস্যা সমাধান হবে। 

তিতাস গ্যাসের মেট্রো ঢাকা বিপণন বিভাগ-২ এর উপ-মহা ব্যবস্থাপক মো: মাহবুব হোসেন জানান, জাতীয় পর্যায় থেকে গ্যাস সরবরাহ কম হওয়ায় কেরানীগঞ্জে চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস সরবরাহ করা যাচ্ছে না। কেরানীগঞ্জে যে পরিমান গ্যাসের চাহিদা সেই পরিমান গ্যাসের সরবরাহ না থাকায় কিছু কিছু এলাকায় গ্যাসের সংকট দেখা যাচ্ছে। আশা করছি দ্রুতই গ্যাস সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে।

JF

×