ছবিঃ সংগৃহীত
সাকরাইন, যা ঘুড়ি উৎসব নামেও পরিচিত, ঢাকার একটি প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী উৎসব। এটি প্রতি বছর পৌষ মাসের শেষ দিনে পালিত হয়, যা মকর সংক্রান্তি নামে পরিচিত। এই উৎসবটি মূলত শীতের বিদায় এবং ঋতুর পরিবর্তনের সঙ্গে জড়িত।
সাকরাইনের ইতিহাস ঢাকার মুঘল আমলের সঙ্গে সম্পর্কিত। তখন এটি মূলত আকাশে ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতার মাধ্যমে পালিত হতো। পুরান ঢাকার বাসিন্দারা বিভিন্ন রঙ-বেরঙের ঘুড়ি ওড়ানোর মাধ্যমে আনন্দ উদযাপন করতেন। মকর সংক্রান্তি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের একটি পবিত্র দিন হলেও, কালের পরিক্রমায় এটি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ঢাকার অন্যতম সাংস্কৃতিক উৎসবে পরিণত হয়েছে।
সাকরাইন শুধু ঘুড়ি উড়ানোর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। দিনব্যাপী নানা আয়োজন দেখা যায়:
ঘুড়ি ওড়ানো: সকাল থেকে ছাদের ওপর জড়ো হয়ে মানুষ ঘুড়ি উড়ান। ‘বুক কাট্টা’, ‘মাঞ্জা’, ‘গুড়ি পড়লো’ শব্দে আকাশ মুখর হয়ে ওঠে।
আলোসজ্জা: সন্ধ্যায় পুরান ঢাকার বাড়িগুলোতে বর্ণিল আলো ও আতশবাজি প্রদর্শিত হয়।
খাবার ও সঙ্গীত: এদিন ঘরে ঘরে পিঠা, মিষ্টি, আর ঐতিহ্যবাহী খাবারের আয়োজন করা হয়। তরুণরা সংগীত, নাচ এবং ডিজে পার্টিতে মেতে ওঠে।
সাকরাইন শুধু একটি উৎসব নয়, এটি পুরান ঢাকার ঐতিহ্য এবং সাংস্কৃতিক মিলনের প্রতীক। বিভিন্ন সম্প্রদায় একত্রে এ উৎসবে অংশগ্রহণ করে যা সামাজিক সংহতির বার্তা দেয়।
এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে আমাদের সবার উচিত সাকরাইন উৎসবকে আরও বেশি করে উদযাপন করা এবং এর ইতিহাস পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা।
জাফরান