বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, ফ্যাসিবাদের পক্ষে যে কলম লিখবে আমরা সেই কলম ভেঙে দেব। ফ্যাসিবাদের পক্ষে যেসব মিডিয়া কথা বলবে আমরা তাদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেবো। আমাদের তরুণ প্রজন্মের কথা যদি আপনারা বুঝতে ব্যর্থ হন, তাহলে আওয়ামী লীগের যে পরিণতি হয়েছে আপনাদেরও একই পরিণতি হবে। মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়ায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের’ দাবিতে প্রচারপত্র বিতরণের আগে তিনি এসব কথা বলেন।হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে পুনর্বাসনের আগে তাদের প্রত্যেক নেতাকর্মীকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হবে কিনা সেটা প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন নয়। আগে তাদের প্রত্যেক নেতাকর্মীকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। বিচারের আগে যারা পুনর্বাসনের কথা বলবে, নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না, আমরা ধরে নেবো আওয়ামী লীগ যে জাহেলিয়াতের রাজনীতি কায়েম করেছিল সেখানে তাদেরও ইন্ধন ছিল।
হাসনাত বলেন, আমাদের পরবর্তী বাংলাদেশ হবে অতীতের রাজনীতির অভিজ্ঞতা ও তরুণ প্রজন্মের ভয়হীন মনোভাবের সংমিশ্রণে। আমরা গণঅভ্যুত্থানের একক এজেন্ডার প্রবণতা দেখছি। যদি তরুণদের মাইনাস করার চিন্ত থাকে, তাহলে আমরা বলতে চাই, এ আন্দোলনে যত ক্রিয়াশীল ও ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো ছিল, তারা সবাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে এসে এ ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়েছে। আমরা বারবার বলেছি, সবার আগে আওয়ামী লীগের বিচার হতে হবে।
হাসনাত বলেন, রাষ্ট্রযন্ত্র অওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের বিভিন্ন প্রস্ততি নিচ্ছে। আমরা বিপ্নবী শক্তি, আমাদের হারানোর কিছু নেই। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন হবে কিনা সেই সিদ্ধান্ত নতুন করে নেওয়ার কিছু নেই। আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন হবে কিনা তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে ৫ আগস্ট। তিনি আরও বলেন, তরুণ প্রজন্মকে রাস্তায় নেমে রক্ত দিতে হয়েছে। ভয়কে জয় করতে হয়েছে। আমাদের যে দুর্বৃত্তায়ন, প্রতিহিংসার রাজনীতি, সংস্কৃতি; তা তরুণদের আশাহত করেছে যুগের পর যুগ। রাজনৈতিক কাঠামো আমাদের নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে। এ ক্ষোভ থেকেই আমরা ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ গড়েছি।
তিনি বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্রের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো ‘দৃশ্যমান’ পদক্ষেপ দেখছি না। আমাদের আল্টিমেটাম ১৫ তারিখ পর্যন্ত। অন্তর্বতী সরকার আমাদের কমিটমেন্ট দিয়েছে সব রাজনৈতিক দলের ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে প্রক্লেমেশন করা হবে। তবে দুঃখজনক হলো আমরা এখনও কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে দেখিনি। আপনাদের উপদেষ্টা বানিয়েছি, আপনারা আমাদের প্রতিনিধিত্ব করছেন। আপনাদের যদি মনে হয় এখানে কোনো বাধা আছে, সেটা জনগণের কাছে প্রকাশ করুন। আমরা আবারও রাস্তা নেমে আসবো। যদি ব্যর্থ হন তাহলে উপদেষ্টা থেকে জনগণের কাতারে নেমে আসুন।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্থা শারমিন, যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল আমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আহসান জোনায়েদ, সহ-মুখপাত্র আরেফিন মুহাম্মাদ হিজবুল্লাহ ও কেন্দ্রীয় সদস্য শওকত আলী প্রমুখ। এছাড়া দুই সংগঠনের স্থানীয় নেতৃবৃন্দরা পথসভা ও গণসংযোগে অংশ নেয়। পরে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগংরোডে (শিমরাইল) ও সোনারগাঁও উপজেলার কাঁচপুরে পথসভায় যোগ দেন হাসনাত আব্দুলাহসহ দুটি সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা।
রাজু