ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ২৯ পৌষ ১৪৩১

ফরিদপুরে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ৩জন নিহত

নিজস্ব সংবাদদাতা, ফরিদপুর

প্রকাশিত: ১৮:৪৩, ১২ জানুয়ারি ২০২৫

ফরিদপুরে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ৩জন নিহত

ফরিদপুরের মধুখালী ও নগরকান্দা উপজেলায় পৃথক দুটি সড়ক দুর্ঘটনায় বাসের সুপারভাইজার, দোকান মালিকসহ ৩জন নিহত হয়েছে। রবিবার সকাল সাড়ে ৭টা ও বেলা সাড়ে ১২টায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফরিদপুর-যশোর সড়কের মধুখালী উপজেলার রায়পুর ইউানয়নের ছকড়িকান্দি নামক স্থানে মুক্তা পরিবহন নামে এক যাত্রীবাহী বাসের চাপায় দুই মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলো বাঁধন দাস (২৭) ও প্রান্ত সরকার (১৯)। নিহতদের বাড়ি ফরিদপুর সদর উপজেলার উত্তর শোভারামপুর এলাকায়। তারা সম্পর্কে শালা দুলাভাই।

প্রান্তর কাকা সুশীল সরকার বলেন, আমার ভাই গোকুল সরকারের ছেলে প্রান্ত সরকার। ফরিদপুর মহাবিদ্যালয়ে এইচএসসি প্রথম বর্ষে পড়ে। আর বাঁধন প্রান্তর বড় বোন পূজার স্বামী। বাঁধনের পিতার নাম সাধন দাস। তাদের বাড়ি মাগুরার পূর্বাশা সিনেমা হলের পাশে। বাঁধন ফরিদপুর চকবাজার রাধাকৃষ্ণ বস্ত্রালয়ে তার ভাইরা ভাই প্রদীপের সাথে ব্যবসা করতেন। সকালে বাঁধন ও প্রান্ত বাড়ি থেকে ঘুরতে বের হয়ে মাগুরা যাচ্ছিলো।

মুধখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম নুরুজ্জামান জানান, মুক্তা পরিবহন বাসটি মাগুরা থেকে ফরিদপুর আসছিল অপরদিকে ফরিদপুর থেকে মোটরসাইকেলটি মাগুরামুখী ছিল। দ্রুতগতির কারণে মোটরসাইকেলটি বাসের নিচে চাপা পরে। এই দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। লাশ দুটি উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, হাইওয়ে পুলিশ এখানে চেকপোস্ট বসিয়ে গণহারে গাড়িতে তল্লাশির করছিল। এ সময় ওই দুই মোটরসাইকেল আরোহী দ্রুতগতিতে ওই এলাকা অতিক্রম করার সময় আকস্মিকভাবে পুলিশ রাস্তার উপরে থামানোর নির্দেশ দেয়। দ্রুতগতির কারণে পুলিশকে এড়িয়ে পার হওয়ার সময় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বাসের নিচে চাপা পড়ে। মুক্তা পরিবহন নামের ওই বাসটি মোটরসাইকেলটিকে প্রায় ২০০ মিটার টেনে হেঁচড়ে নিয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়। সড়কে পুলিশের কারণেই মারা গেছে শ্যালক-দুলাভাই। এসময় পুলিশের সাথে স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতার ধাক্কাধাক্কির ঘটনাও ঘটে। পরে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর একটি দল পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

করিমপুর হাইওয়ে থানার ওসি সালাউদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমাদের চেকপোস্ট দুর্ঘটনাস্থল থেকে দূরে ছিল। জনতা যে অভিযোগ তুলেছে তা সত্য নয়। দুর্ঘটনার সংবাদ পেয়ে আমাদের টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।

এছাড়া ফরিদপুরে মালবাহী ট্রাকের ধাক্কায় যাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে একজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া বাসের আরও চার যাত্রী আহত হয়েছেন। তাদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রোববার (১২ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার ডাঙ্গী ইউনিয়নের বাঁশাগাড়ী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত বাসের সুপারভাইজারের নাম সাজ্জাদ হোসেন (২৫)। তিনি ফরিদপুর সদর উপজেলার বদরপুর এলাকার বাসিন্দা মো. আলেক হোসেনের ছেলে।

ভাঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ জানায়, ফরিদপুর থেকে মাদারীপুরগামী আলিফ-মিম নামের যাত্রীবাহী বাসকে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাক ধাক্কা দিলে বাসটি মহাসড়ক থেকে ছিটকে খাদে গিয়ে পড়ে। এ ঘটনায় ট্রাকের সামনের অংশ দুমড়ে মুচড়ে গেছে। দুর্ঘটনায় আহতদের উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে সুপারভাইজারকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ মামুন বলেন, এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বাস ও ট্রাক উদ্ধার করে হাইওয়ে থানায় নেওয়া হয়েছে।

রাজু

×