ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১

ঐতিহ্যবাহী খেজুর রস কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে

শরিফুল রোমান, মুকসুদপুর

প্রকাশিত: ২৩:৫৯, ১১ জানুয়ারি ২০২৫

ঐতিহ্যবাহী খেজুর রস কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে

শীত মানেই খেজুর রস। নানা ধরনের মুখরোচক পিঠা ও পায়েস তৈরিতে খেজুর রসের বিকল্প নেই। শীতের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে ব্যস্ত হয়ে পড়েন আবহমান গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী খেজুর রস সংগ্রহকারী গাছিরা। দিন দিন কমে যাচ্ছে খেজুর রস সংগ্রহের পেশা। 

সাধারণত কার্তিক ও অগ্রহায়ণ মাসে প্রতি ঘরে ঘরে দেখা যেত খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ প্রতিযোগিতা কিন্তু বর্তমানে খুব কম দেখা যায় এ পেশার কারিগরদের। রস সংগ্রহ করে তাফালের ঢেউটিনে বড় আকারের চুলায় জাল দিয়ে তৈরি করা হত খেজুর গুড়, পাটালিগুড়সহ নানা ধরনের গুড়। অপরদিকে ঘরে ঘরে খেজুর রস দিয়ে হরেক রকম মুখরোচক পিঠা পায়েস তৈরির উৎসব দেখা যেত। কিন্তু বর্তমানে আগের মতো এখন আর তেমনটি চোখে পড়ে না। মুকসুদপুরে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। উপজেলার বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা যায়, ইতোমধ্যে গাছিয়ারা রস সংগ্রহের জন্য খেজুর গাছ কাটা শুরু হয়েছে । বিশেষ কৌশলে প্রথমে প্রতিটি খেজুর গাছের ডগার একপাশ থেকে ডেগুয়া গোড়া থেকে কেটে ফেলে শুকানো হচ্ছে। এরপর বাঁশ দিয়ে খিল ও চুঙ্গি তৈরি করে গাছ শুকানোর পর তাতে বসিয়ে হাড়ি অথবা প্লাস্টিকের বোতল ঝুলিয়ে দিয়ে রস সংগ্রহ করা হয়। সপ্তাহে পালাক্রমে ৪ দিন রস বের করার পর ৩দিন গাছ শুকানোর পর পুণরায় গাছ কাটা হয়। এভাবে প্রতিটি গাছ থেকে মাঘ মাস পর্যন্ত রস পাওয়া যায়।

মুকসুদপুর উপজেলার লখাইরচর গ্রামের গাছি শামচু মুন্সি বলেন, নিজের ও অন্যের সবমিলিয়ে এ বছর মোট ২৫টি খেজুর গাছ রস সংগ্রহের জন্য তৈরি করছি। প্রতিটি গাছ থেকে গড়ে ২ থেকে ৫ কেজি রস পাব বলে আশা করছি। এতে পরিশ্রম হলেও খুব আনন্দ পাচ্ছি। নিজের চাহিদা পূরণ করে বিক্রি করতে পারব। চাহিদা থাকায় বাড়ি থেকেই ক্রেতারা রস নিয়ে যায়।

একই গ্রামের গাছি মো. জাফর মুন্সি বলেন, প্রতিবছর শীতের শুরুতে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করি। এ বছর ও শুরু করেছি। বর্তমানে খেজুর রসের ব্যাপক চাহিদার কারণে বৃদ্ধ বয়সেও এ পুরাতন পেশাকে ধরে রাখার চেষ্টা করছি। তবে দিন দিন খেজুর গাছ কমে যাচ্ছে। তাছাড়া অনেকেই এখন আর গাছ কাটে না।

রাজু

×