ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১

নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায়  বেহাল মধ্যবিত্ত 

সিরাজগঞ্জে ওএমএসের  দোকানে ক্রেতার ভিড়

স্টাফ রিপোর্টার, সিরাজগঞ্জ

প্রকাশিত: ২২:৪৯, ১০ জানুয়ারি ২০২৫

সিরাজগঞ্জে ওএমএসের  দোকানে ক্রেতার ভিড়

.

প্রচন্ড ঠান্ডা উপেক্ষা করে সূর্যের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে  ঘর থেকে বের হয়েছিলেন সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার শাহেদনগর গ্রামের সুফিয়া বেগম। পাশর্^বর্তী শহীদগঞ্জ মহল্লায় খোলাবাজারে চাল-আটা বিক্রির (ওএমএস) দোকানের সামনে এসে যখন তিনি লাইনে দাঁড়ান, তখনো ঘন কুয়াশা। দোকান খুলবে সকাল ৯টায়। এতক্ষণে বেশ মানুষের ভিড় জমেছে। দোকান খোলার পর দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে নানা বয়সী নারী-পুরুষ চাল আটা অথবা শুধুই আটা কিনে নিয়ে বাড়ি যাচ্ছেন।  বৃহস্পতিবার  সকাল সাড়ে ১০টায় সেখানে গিয়ে দেখা যায়, সরকারের খাদ্য বিভাগের সানোয়ার হোসেন খাদ্য পরিদর্শক পদবির একজন তদারকি কর্মকর্তাও দোকানের সামনে রয়েছেন। তিনি জানালেন প্রচুর লোকের সমাগম হয়। ক্রেতাদের চাহিদা পূরণ কঠিন।
সিরাজগঞ্জ শহরের ১৪টি সরকারি ওএমএস (খোলাবাজারে চাল আটা বিক্রি)  দোকানে ক্রেতাদের ভিড়। ২৪ টাকা কেজি দরে আটা ও ৩০ টাকা কেজি দরে চাল কেনার লক্ষ্য নিয়ে নি¤œ ও মধ্যবিত্ত পরিবারের নানা বয়সী নারী-পুরুষ ভিড় জমান। লাইন থেকে একজন একজন করে এগিয়ে গিয়ে চাল-আটা নিয়ে আসছেন। ৩০ টাকা কেজি দরে একজন গ্রাহক ৫ কেজি করে চাল অথবা ২৪ টাকা কেজি দরে ৫ কেজি আটা কেনার সুযোগ পাচ্ছেন।
সুফিয়া বেগমের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, সকাল ৯টায় শুরু হয় চাল-আটা বিক্রির কার্যক্রম। শহীদগঞ্জ এলাকার ডিলারের দোকানে বিক্রির শুরুতে নারী-পুরুষের পৃথক লাইনে দাঁড় করানো হয়। তিনি দুই/তিন দিন পরই এই দোকান  থেকে চাল-আটা কেনেন। সুফিয়া ছাড়াও লাইনে দাঁড়ানো হযরত আলী, শাহাদত, রেজিয়ারা জানালেন তারাই লাইনে দাঁড়িয়ে চাল-আটা পান। তবে তারা শুনেছেন অনেকেই ফেরত যায়। কারণ ততক্ষণে চাল-আটার মজুত ফুরিয়ে যায়। তদারকি কর্মকর্তা সানোয়ার হোসেন জানান, প্রতিদিন কম-বেশি চার শ’ ক্রেতা সরকারের এই সুবিধা ভোগ করছেন। মাল ফুরিয়ে গেলে কেউ ফেরত যেতেই পারে।
নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার পর লোকার অনেকেই সঙ্কোচ ভেঙে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে ওএমএসের চাল-আটা নিতে আসছেন। এলাকার ওএমএসের ডিলার জানান, তিনি প্রতিদিন ৫ কেজি করে আটা ও ৫ কেজি চাল বিক্রির জন্য এক টন আটা ও এক টন চাল বরাদ্দ পান। তবে ২০০ জনের জন্য ৫ কেজি করে আটা বিক্রি শেষ হলেও চালের খদ্দের কম। কোনো কোনো দিন সরকারের ঘরে চাল ফেরত যায়।
বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত পৌর এলাকার তিনটি ওএমএসের দোকান ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার পর পৌর শহরে বসবাসকারী মধ্যবিত্ত পরিবারে সংকট বেড়েছে। যে কারণে অনেকেই সঙ্কোচ ভেঙে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে ওএমএসের চাল-আটা নিতে আসছেন। তবে আটার মজুত শেষে  অনেকেই ফেরত যাচ্ছেন। 
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকায় ১৪টি পয়েন্টে ১৪ জন ওএমএসের দোকান রয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক হারুন অর রশিদ বলেন, সুষ্ঠুভাবে ওএসএস কার্যক্রম চলছে। প্রতিটি ওএমএস দোকানে নিয়মিত মনিটরিং করা হয়। তদারকি কর্মকর্তাও তদারকি করেন। তবে পৌর সদরে  চালের চাহিদা তুলনামূলক কম। 

×