ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১

ভাসমান হাঁসের খামার

সংবাদদাতা, বকশীগঞ্জ, জামালপুর

প্রকাশিত: ২০:৩৫, ১০ জানুয়ারি ২০২৫

ভাসমান হাঁসের খামার

জামালপুরের বকশীগঞ্জে দশানী নদীতে ভাসমান হাঁসের খামার

বকশীগঞ্জের দশানী নদীতে ভাসমান হাঁসের খামার করে সফল উদ্যোক্তার স্বীকৃতি পেয়েছেন শুক্কুর আলী নামে এক যুবক। বকশীগঞ্জ উপজেলার মেরুরচর ইউনিয়নের দশানী নদীতে ওই ভাসমান হাঁসের খামার গড়েছেন শুক্কুর আলী। এই ভাসমান হাঁসের খামার থেকে এখন তার মাসিক আয় প্রায় দেড় লাখ টাকা। শুক্কুর আলী পার্শ¦বর্তী শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলার কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের খঞ্চেপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে নদীতে জাল দিয়ে ঘিরে পানিতে হাঁস পালন করা হচ্ছে। পাশেই টিন ও বাঁশের খুঁটি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে ঘর। রাতে সেই ঘরেই রাখা হয় হাঁস। তার এই খামারে ধবধবে সাদা বেজিং জাতের তিন হাজার হাঁস রয়েছে। ওই হাঁসের খামারেই ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়েছে শুক্কুর আলী।
অর্থাভাবে বেশিদূর লেখাপড়া করতে পারেননি শুক্কুর আলী। ছোট বেলা থেকেই পশুপাখি পালনের প্রতি ছিল তার ব্যাপক আগ্রহ। বেকার অবস্থায় অভাব অনটনের সংসারে দিন কাটতো তার। শখের বসে ২০১০ সালে ১৫টি মুরগি ও ২০টি হাঁস কিনে বাড়িতেই হাঁস-মুরগি পালন শুরু করেন। হাঁস মুরগি পালনে পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকলেও ইউটিউবে দেখে দেখে হাঁস পালন করতে থাকেন। এভাবেই ধীরে ধীরে তার ছোট্ট খামার ক্রমেই বড় হতে থাকে। এখন তার তিনটি খামারে বেইজিং জাতসহ বিভিন্ন জাতের ৮-৯ হাজার হাসঁ রয়েছে। তিনটি খামার ও হ্যাচারিতে কাজ করার জন্য শ্রমিক রয়েছে ২০ জন। ডিম ফুটানোর জন্য নিজ বাড়িতেই একটি হ্যাচারি করেছেন। অদম্য ইচ্ছা থাকলে যে কেউ স্বাবলম্বী হতে পারেন। শুক্কুর আলী তাদেরই একজন। হাঁস পালন করেই নিজ বাড়িতে গড়েছেন হ্যাচারি। তিনটি খামার থেকে যে ডিম পান তার অর্ধেক বিক্রি করেন এবং অর্ধেক নিজের হ্যাচারিতে বাচ্চা  ফুটান। তারপর প্রতিটি বাচ্ছা ১শ’ থেকে ১৩০ টাকায় বিক্রি করেন। বছরজুড়েই তার হ্যাচারিতে ফুটে বাচ্চা। দু-তিন দিন বয়সী প্রতিটি বাচ্চা বিক্রি হয় ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়। দূর-দূরান্ত থেকে পাইকাররা এসে নিয়ে যায় তার হাঁসের বাচ্চা। হাঁস পালন করেই স্ত্রী, সন্তান ও পরিবার-পরিজন নিয়ে সুখেই কাটছে তার দিন। শুক্কুর আলী এখন একজন সফল খামারি। শুক্কুর আলী বলেন, বেজিং জাতের হাঁস টানা দেড় বছর ডিম দেয়। তিনটি খামারে প্রায় ১০ হাজার হাঁস রয়েছে। খাদ্যের দাম অনেক বেড়ে গেছে। শ্রমিকদের বাড়তি বেতন দিতে হয়। সব মিলিয়ে এখন লাভ অনেক কম হয়। এ ছাড়াও ঝুঁকি রয়েছে। অসুখ হলে অনেক হাঁস মারা যায়।

×