সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি এলাকায় ডিএনডি খালের ওপর জরাজীর্ণ কাঠের সেতু
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের এক নম্বর ওয়ার্ডের সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি মজিববাগ এলাকার ডিএনডি খালের ওপর জরাজীর্ণ ও নড়বড়ে কাঠের সেতুটি এখনো বেহাল দশায় পড়ে আছে। সেতুটির কাঠের বহু পাটাতন পচে ও ভেঙে গেছে। এখন ভেঙে যাওয়া কাঠের পাটাতনের ওপর বাঁশের মাঁচা বিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে সেতুটি এখন অনেক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এ ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি দিয়ে প্রতিদিন শিক্ষার্থী, আদমজী ইপিজেড শ্রমিকসহ শত শত লোকজন পারাপার হচ্ছেন। এতে যে কোনো সময় সেতুটি ভেঙে পড়ে প্রাণহানির আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। জরুরি ভিত্তিতে এ জরাজীর্ণ সেতুটি মেরামত করার জোর দাবি জানান স্থানীয় ও পথচারীরা।
জানা যায়, বহু বছর আগে ডিএনডি খালের ওপর মিজমিজি মজিববাগ এলাকায় একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করা হয়। এ কাঠের সেতুটি ব্যবহার করে মিজমিজি মজিববাগ, আল-আমিন নগর, মিজমিজি পূর্বপাড়া,ও কদমতলী উত্তরপাড়াসহ আশপাশের লোকজন ডিএনডি খাল পার হচ্ছেন। কিন্তু সেতুটি মেরামত কিংবা পুনর্নির্মাণ না করায় দিন দিন কাঠের সেতুটির পাটাতন অনেক জায়গায় ভেঙে গেছে। এমনকি পুরো বর্ষার সময় এ কাঠের সেতুটির পাটাতন পানিতে ডুবন্ত ছিল। ফলে কাঠের অনেক পাটাতন পচে নষ্ট হয়ে গেছে। অনেক জায়গার কাঠের পাটাতন ভেঙে গেছে। দিন দিন আরও ভেঙে যাচ্ছে। কিন্তু সিটি করপোরেশন এ সেতুটির মেরামত কাজ করছেন না। ফলে সেতুটি এখন জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। ভেঙে পড়া পাটাতনের জায়গায় বাঁশের মাঁচা বিছানো হয়েছে। সেতুটিতে লোকজন পারাপারের সময় কেঁপে ওঠে। স্থানীয়রা জানান, এ সেতুর পূর্বপাড়েই রয়েছে সিদ্ধিরগঞ্জ বিদ্যুৎকেন্দ্র। এ বিদ্যুৎকেন্দ্রের অভ্যন্তরে রয়েছে সিদ্ধিরগঞ্জ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এ বিদ্যালয়ে প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী লেখপড়া করছে। এ হাইস্কুলের অনেক শিক্ষার্থী বিদ্যুৎকেন্দ্রের বাইরে বসবাস করেন। ফলে অনেক অভিভাবক তাদের কোমলমতি অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রতিদিন ঝুঁকিপূর্ণ এ সেতুটি পার হয়ে স্কুলে যাচ্ছেন। এ ছাড়াও কয়েকশ’ গজ দূরে রয়েছে আদমজী ইপিজেড। এ ইপিজেডে কাজ শুরু ও ছুটির সময় অনেক শ্রমিক-কর্মচারী এ ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি ব্যবহার করে ডিএনডি খাল পার হচ্ছেন। সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় পথচারীরা পারাপারের সময় ভেঙে পড়ার আতঙ্কে থাকেন। এ সেতুটি নিয়ে বহুবার পত্র-পত্রিকায় প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে। কিন্তু তারপরও মেরামত কাজ হয়নি।
মজিববাগ এলাকার বাসিন্দা ও দোকানি কাজী স্বপন বলেন, বহু বছর ধরে কাঠের এ সেতুটি ঝুঁকিপুর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এ স্থানটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণে সেতুটির খুবই গুরুত্ব রয়েছে। কিন্তু সেতুটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল দশায় পড়ে থাকলেও সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ মেরামতের উদ্যোগ গ্রহণ করছেন না। এ সেতুটি নিচে কমপক্ষে ২০-২৫ ফুট পানির গভীরতা রয়েছে। তাই সেতুটি ভেঙে পড়লে জীবনহানির আশঙ্কা রয়েছে। অত্র এলাকার সমাজ কল্যাণ সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বলেন, ঝুঁকিপুর্ণ সেতুটি স্থানীয়দের কাছ থেকে টাকা-পয়সা তুলে মাঝে মধ্যেই মেরামত করা হয়। কিন্তু কয়েক দিন পরেই সেতুটি আবারও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। সেতুটি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।