সংগৃহীত ছবি
খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের বড়দিন উৎসব উদযাপনের লক্ষ্যে সরকারি খাদ্যশস্য বিতরণে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
জানা যায়, সরকার খাগড়াছড়িতে বড়দিনের উৎসব উদযাপন উপলক্ষে ৫০টি গির্জার প্রতিটির জন্য ১ টন করে মোট ৫০ টন খাদ্যশস্য বরাদ্দ প্রদান করেছে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদকে। যার বাজার মূল্য ২০ লক্ষ টাকা। অভিযোগ উঠেছে প্রতিটি গীর্জাকে ১ টন চালের বিপরীতে মাত্র ৪ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা প্রদান করা হয়।
এ ব্যাপারে ক্ষোভ জানিয়েছে খাগড়াছড়ি খ্রিষ্টান এসোশিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহালছড়া ব্যাপ্টিস্ট চাচের্র সভাপতি কৃষ্ণচরণ ত্রিপুরা। তিনি বলেন, 'আমাদের ৫০টা গির্জার জন্য বরাদ্দ এসেছে ৫০ টন। সেই হিসেবে প্রতিটি গির্জার ১ টন খাদ্য শস্য পাওয়ার কথা। যার বাজার মূল্য ন্যূনতম ৩৫ হাজার টাকা থেকে ৪০ হাজার টাকা। অথচ তালিকাভুক্ত ৫০টি গির্জাকে দেয়া হয়েছে সাড়ে ৪ হাজার টাকা এবং তালিকা বহিভূর্ত গির্জাগুলোকে দেয়া হয়েছে মাত্র ৪ হাজার টাকা। পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ৫০টি গির্জার বরাদ্দ ২১১ টিতে বন্টন করা হবে। ২শ ১১টি গির্জার মধ্যেও যদি সঠিকভাবে বরাদ্দ বন্টন হতো তাহলে প্রতিটি গির্জা ৮ হাজার টাকার উপরে পেত অথচ এখন পেয়েছে মাত্র ৪ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা। এখানে দুর্নীতি হয়েছে।’
খাগড়াছড়ি জেলা সদরের টাউন ব্যাপিস্ট চার্চের সভাপতি প্রদীপ কুমার চাকমা, সেন্ট ত্রিমথী বিলিভার্স ইন্টান চার্চের সভাপতি বিমন্ত ত্রিপুরা, গাছবান এসডিও চার্চের সাধারণ সম্পাদক জেনজয় ত্রিপুরা, ইম্মানুয়েল ব্যাপিস্ট চার্চের শুভ্রদেব ত্রিপুরাসহ বিভিন্ন চার্চের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা জানান, 'বড় দিনের বরাদ্দ বাবদ অন্যদের মতো আমাদের গির্জার নামে ১ টন করে খাদ্যশস্য বরাদ্দ পেয়েছি অথচ আমাদের দেয়া হয়েছে মাত্র সাড়ে ৪ হাজার টাকা।’
এই বিষয়ে জানতে চাইলে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য ও বড়দিনের খাদ্যশস্য বিতরণের দায়িত্বপ্রাপ্ত ধনেশ্বর ত্রিপুরা বলেন, ‘বড়দিন উপলক্ষে যে খাদ্যশস্য বরাদ্দ এসেছে তা নায্যমূল্য পায়নি। তবে যে ৫০ টন খাদ্যশস্য বরাদ্দ এসেছে তা ২শ ৪৩টি গির্জার মধ্যে বন্টন করে দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৫০টি গির্জা পেয়েছে সাড়ে ৪ হাজার টাকা বাকি গির্জাগুলো পেয়েছে ৪ হাজার টাকা। গির্জার বাইরেও উদযাপন কমিটিগুলোকে ২লক্ষ ৭০ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। খাদ্যশস্যের বাজার মূল্য বেশি পেলে গির্জাগুলো আরো বেশি টাকা পেত। ’
বড়দিনের বরাদ্দ বিতরণের যে ব্যয় দেখানো হয়েছে সেখানে অসঙ্গতি দেখা গেছে, '২শ ৪৩টি আবেদিত চার্চ প্রতি ৪ হাজার টাকা ও প্রকল্পভুক্ত ৫০ চার্চে বরাদ্দ দেখানো হয়েছে ৫ হাজার টাকা। তবে আবেদিত চার্চের প্রত্যেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা বরাদ্দ পেয়েছে। এছাড়া তালিকায় গির্জার সংখ্যা ২শ ৯৩টি দেখানো হলেও খ্রিষ্টান এসোসিয়েশনের তথ্যমতে খাগড়াছড়িতে গির্জা রয়েছে ২শ ১১টি। তালিকার বাইরের ৫৫ জনকে ৫৫ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে। এছাড়া পিয়ন, খাবার ও অফিস মাস্টার রোল বাবদ খরচ দেখানো হয়েছে ৩৬ হাজার টাকা ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিরুনা ত্রিপুরা বলেন, 'বড়দিনের বরাদ্দপ্রাপ্ত খাদ্যশস্যের বিতরণে কোন অনিয়ম হলে তা আমি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।
JF