প্রচন্ড ঠান্ডা উপেক্ষা করে সূর্যের আলো ফোটার সাথে সাথে ঘর থেকে বের হয়েছিলেন সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার শাহেদ নগর গ্রামের সুফিয়া বেগম। পার্শ্ববর্তী শহীদগঞ্জ মহল্লায় খোলাবাজারে চাল-আটা বিক্রির (ওএমএস) দোকানের সামনে এসে যখন তিনি লাইনে দাঁড়ান, তখনো ঘন কুয়াশা। দোকান খুলবে সকাল ৯ টায়। এতক্ষণে বেশ মানুষের ভিড় জমেছে। দোকান খোলার পর দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে নানা বয়সের নারী-পুরুষ চাল আটা অথবা শুধুই আটা কিনে বাড়ি যাচ্ছেন। শহীদগঞ্জ এলাকার ডিলারের দোকানে বিক্রির শুরুতে নারী-পুরুষদের পৃথক লাইনে দাঁড় করানো হয়। সুফিয়া ছাড়াও লাইনে দাঁড়ানো হযরত আলী, শাহাদত, রেজিয়ারা জানালেন তারা লাইনে দাঁড়িয়ে চাল- আটা পান। তবে তারা শুনেছেন অনেকেই ফেরত যায়। কারণ ততক্ষণে চাল আটার মজুদ ফুরিয়ে যায়। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০ টায় সেখানে গিয়ে এ চিত্র দেখা যায়।
সিরাজগঞ্জ শহরের ১৪ টি সরকারি ওএমএস (খোলাবাজারে চাল আটা বিক্রি) দোকানে ক্রেতাদের ভিড় জমে। ২৪ টাকা কেজি দরে আটা ও ৩০ টাকা কেজি দরে চাল কেনার লক্ষ্য নিয়ে নিম্ম ও মধ্যবিত্ত আয়ের নানা বয়সী নারী পুরুষ ভিড় জমান দোকানগুলোতে।
আজ সকাল সাড়ে ১১ টা পর্যন্ত পৌর এলাকার তিনটি ওএমএসের দোকান ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার পর পৌর শহরে বসবাসকারী মধ্যবিত্ত পরিবারে সংকট বেড়েছে। যে কারণে অনেকেই সংকোচ ভেঙে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে ওএমএসের চাল-আটা নিতে আসছেন। তবে আটার মজুদ শেষ হওয়ায় অনেকেই ফেরত যাচ্ছেন।
এলাকার ওএমএসের ডিলার জানান, তিনি প্রতিদিন ৫ কেজি করে আটা ও ৫ কেজি চাল বিক্রির জন্য একটন আটা ও একটন চাল বরাদ্ধ পান। তবে ২০০ জনের জন্য ৫ কেজি করে আটা বিক্রি শেষ হলেও চালের খদ্দের কম। কোন কোন দিন সরকারের ঘরে চাল ফেরত যায়।
সরকারের খাদ্য বিভাগের খাদ্য পরিদর্শক পদবীর তদারকি কর্মকর্তা সানোয়ার হোসেন জানান- প্রতিদিন কমবেশী চার শ ক্রেতা সরকারের এই সুবিধা ভোগ করছেন। মাল ফুরিয়ে গেলে কেউ ফেরত যেতেই পারে।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকায় ১৪ টি পয়েন্টে ১৪ টি ওএমএসের দোকান রয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক হারুন অর রশিদ বলেন, সুষ্ঠুভাবে ওএসএস কার্যক্রম চলছে। প্রতিটি ওএমএস দোকানে নিয়মিত মনিটরিং করা হয়। তদারকি কর্মকর্তাও তদারকি করেন। তবে পৌর সদরে চালের চাহিদা তুুলনামূলক কম।
JF