ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৩ মাঘ ১৪৩১

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে সমাবেশ

জবি ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীর ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ

জবি সংবাদদাতা

প্রকাশিত: ০১:১০, ৭ জানুয়ারি ২০২৫

জবি ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীর ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ

জবি ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীর ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে রাজনৈতিক অস্থিরতা, শিক্ষার্থী জিহানের ওপর হামলার ঘটনায় প্রশাসনের নীরব ভূমিকার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে তারা।
সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সায়েন্স ফ্যাকাল্টি থেকে শুরু হয়ে কলা ভবন ঘুরে এসে ভাস্কর্য চত্বরে এসে এ সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। 
এ সময় ‘শিক্ষা ফ্যাসিজম, একসাথে চলে না’ ; ‘আমার ভাইকে মারল কেন, প্রশাসন জবাব চাই’ ; ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ এসব স্লোগান দেন তারা।
সমাবেশে বখতিয়ার ইসলাম বলেন, আমাদের সহপাঠী  জিহানকে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অত্যাচার করেছে। কিন্তু এ বিষয়ে প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। প্রশাসনের এই আচরণ ফ্যাসিস্টের আমলে ছাত্রলীগের হামলার বিচার না হওয়ার সমতুল্য। প্রশাসন থেকে যদি কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে আমরা আরও জোরদার আন্দোলন করব।
সিয়াম আন নুফাইস বলেন, ১৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী জিহানকে মারার ঘটনায় প্রশাসনকে জানানো হয়নি বলে মিথ্যাচার করা হয়েছে। যেখানে প্রশাসনের দায়িত্ব ছিল বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত করা। প্রশাসন ভুলে গেছে তারা এই শিক্ষার্থীদের রক্তের ওপর দাঁড়ানো। তারা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের ওপর রাজনৈতিক কর্মীদের দমন-পীড়নের দায়ভার এই প্রশাসনকে নিতে হবে। যদি তা করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে যেমন শিক্ষার্থীরা এই প্রশাসনকে চেয়ারে বসিয়েছে তেমনি চেয়ার ছাড়তে বাধ্য করবে।
জুনায়েদ মাসুদ বলেন, জুলাইয়ে যারা আন্দোলন করেছে তারা এই কারণে করেনি যেন বিপ্লবের পরে চাঁদাবাজি, শোডাউন করবে, মামলা দিয়ে টাকার বিনিময়ে মামলা তুলে নেবে। আমি মানবাধিকার সংগঠনের ব্যানারে জিহানকে মারার প্রতিবাদ করতে গেলে সেখানে বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করা হয়।

আমার দায়িত্ব যেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয় সেখানে আওয়াজ তোলা। কিন্তু আমার আওয়াজকে রুখে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। এ ছাড়া আমাকে আমার সংগঠন নিয়ে ট্যাগিংও করা হয়। এখনো এই ট্যাগিংয়ের রাজনীতি কীভাবে ক্যাম্পাসে চলতে পারে? এই জবাব প্রশাসনকে দিতে হবে।
আসিকুর রহমান বলেন, আমার বড় পরিচয় আমি এই ক্যাম্পাসের ১৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। কিন্তু একদল রাজনৈতিক কর্মী এটা ভুলে যায়। তারা ভুলে গেছে ৫ আগস্টের আগেও ছাত্রলীগের দ্বারা তারাও একইরকম হামলার শিকার হয়েছে। সবচেয়ে বেশি দায় নিতে হবে এই প্রশাসনকে। অভিযোগ ওঠার পরেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি তারা। শিক্ষার্থীরা তাদের বসিয়েছে। তারা যদি এই শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা না দিতে পারে তাহলে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে।
মাসুদ রানা বলেন, অভ্যুত্থান-পরবর্তী ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি সংস্কারের কথা বলা হলেও তা করা হয়নি। সাজিদ, আবু সাঈদ, মুগ্ধরা কারও তাঁবেদারি করার জন্য রক্ত দেয়নি। ক্যাম্পাস হবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের। এই ক্যাম্পাসে অবাধে সুষ্ঠুভাবে সবাই ঘুরে বেড়াবে। কিন্তু তা করতে ব্যর্থ এই প্রশাসন। যদি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা না দিতে পারেন তাহলে যেভাবে দায়িত্বে এসেছেন, সেভাবেই চলে যেতে হবে। 
তিনি আরও বলেন, পরবর্তীতে কেউ যদি ক্যাম্পাসে কারও গায়ে হাত তোলে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে তা রুখে দেব।  শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। আমরা চাই দ্রুত এই ক্যাম্পাসের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা দূর হয়ে ক্যাম্পাস স্থিতিশীল হবে। ষড়যন্ত্র ও তাঁবেদারির বিরুদ্ধে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব। নিরাপদ ক্যাম্পাস আমাদের একদিনের দাবি নয়। খুনি হাসিনার শাসনামলে ছাত্রলীগ তাড়িয়েছি বুক উঁচিয়ে লড়াই করার জন্য। আগামীতে যদি পেশীশক্তি ব্যবহার করে হামলা করে আমরা তার প্রতিবাদ করব।

×