কুষ্টিয়া সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ মাঠে শনিবার জেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন দলের আমির ডা. শফিকুর রহমান
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানে বলেছেন, ‘নারী-পুরুষের ব্যবধান নিয়ে আমাদেরকে বলা হয়, জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় আসলে এদেশের মানুষ বিপদে পড়বে। মহিলারা মায়ের জাতি, আমরা তাদেরকে মায়ের মতো সম্মান করি। যারা সন্তুষ্টির সঙ্গে বোরকা পরতে চাইবেন, তারা পরবেন। অন্যান্য ধর্মের মায়েদের আমি কীভাবে বোরকা পরাব? ইসলাম কি আমাদের এই দায়িত্ব বা অধিকার দিয়েছে? তিনি বলেন, ‘আমরা চাঁদাবাজ-দখলদারমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চাই। বলবেন, তার প্রমাণ কি আপনারা যে পারবেন? তার প্রমাণ হচ্ছে, আমাদের দলের কর্মীরা চাঁদাবাজিও করে না, দখলদারবাজিও করে না।’
জামায়াতের আমির শনিবার দুপুরে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ মাঠে দলের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। কর্মী সম্মেলন সফল করতে বৃহত্তর কুষ্টিয়ার তিন জেলাসহ যশোর, ঝিনাইদহ ও রাজবাড়ী জেলার নেতাকর্মীরা এ সম্মেলনে শরিক হন। তীব্র শীত উপেক্ষা করে হাজার হাজার নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ওঠে সভাস্থল। সম্মেলনে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘তারা যা পছন্দ করবেন, তাই পরবেন। পোশাকের ব্যাপারে জোর খাটানো যাবে না।
নারীরা যোগ্যতা ও দক্ষতার সঙ্গে পেশাগত দায়িত্ব পালন করবেন। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। আল্লাহর আইন সবার জন্য সমান। আমরা সেই আইনের জন্য লড়াই করছি। যদি প্রত্যেক মানুষ মানুষকে সম্মান দেয়, ভালোবাসে তাহলে এই দেশ জান্নাতের টুকরায় পরিণত হবে।’
আওয়ামী লীগ জাতির সঙ্গে বেইমানি করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে তারা জুলুম-গণহত্যা চালিয়েছে। দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করা হয়েছে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পিয়নের অ্যাকাউন্টে পাওয়া গেছে সাড়ে ৪০০ কোটি টাকা। পিয়নের এত টাকা থাকলে তিনি কত টাকার মালিক? টাকা পাচার করে যারা বিদেশে বেগমপাড়া তৈরি করেছে তারাই দেশের টাকা চুরি করেছে।’ আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ করে শফিকুর রহমান বলেন, ‘দেশে যেখানেই তাদের হাঁড়িতে হাত পড়ছে, সেখানেই শুধু টাকার খনি। এত টাকা তারা পেল কোথায়?
রূপপুরে শুধু একটি প্রকল্প থেকে ৫৭ হাজার কোটি চুরি করা হয়েছে। একটা পদ্মা ব্রিজ নির্মাণে যে পরিমাণ টাকা খরচ করা হয়েছে, ওই টাকায় আরও কমপক্ষে চারটি পদ্মা ব্রিজ নির্মাণ করা যেত।’ তিনি আরও বলেন, ‘যারা ধর্মের বিভাজন তৈরি করে মেজরিটি মাইনরিটি দিয়ে তারাই ৫৩ বছর আপনাদের কষ্ট দিয়েছে। আমাদের দলের কেউই এসব অপকর্মে জড়িত নাই। অথচ দোষ দেন আমাদের ঘাড়ে।
জামায়াতে আমির বলেন, ‘যে সমাজে চাঁদাবাজি-ঘুষখোর থাকবে না, যে সমাজে দখল বাণিজ্য চলবে না, মানুষে-মানুষে ধর্মে-ধর্মে বৈষম্য থাকবে না। সেই সমাজ গড়ার জন্য লড়াই করতে হবে। আমর সেই লড়াই চালিয়ে যাব।’ কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক আবুল হাসেমের সভাপতিত্বে কর্মী সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় মজলিশের সদস্য ড. আলমগীর বিশ্বাস, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন, সূরা সদস্য নুরুল ইসলাম, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবির শাখার সভাপতি এমএ মুসা বক্তব্য রাখেন।