লিবিয়ার গেমঘরে নির্যাতনে যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ

দালালের খপ্পরে পড়ে উন্নত জীবনের আশায় ইতালিতে পাড়ি জমাতে চেয়েছিলেন মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার পশ্চিম কোমলাপুর গ্রামের আসাদ মাতুব্বর (৪০)। তিনি দীর্ঘ দুই বছর লিবিয়ার গেমঘরে দালাল চক্রের ভয়াবহ অমানবিক নির্যাতনে  অবশেষে মারা  গেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত আসাদ মাতুব্বর উপজেলা ডাসার ইউনিয়নের পশ্চিম  কোমলাপুর গ্রামের আঃ হামিক মাতুব্বরের ছেলে।

এদিকে তার মৃত্যুর খবরে নিহতের পরিবারে নেমে আসে শোকের ছায়া। অপরদিকে পরিবারের একমাত্র অভিভাবকের নিহতের খবরে বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে তার স্ত্রী, সন্তান, বাবা-মা, ভাই, আত্মীয়-স্বজন,পাড়াপ্রতিবেশী। শুক্রবার সকালে আসাদ মাতুব্বরের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন তার পরিবার। 
নিহত আসাদ মাতুব্বরের পরিবার জানান, মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘটমাঝি ইউনিয়নের ঝিকরআটি গ্রামের মঙ্গল খানের ছেলে আদম ব্যবসায়ী রুবেল খান অল্প টাকার বিনিময়ে লিবিয়া হয়ে অবৈধভাবে সাগরপথে ইতালিতে লোক পাঠান। এ কথা জেনে ওই দালাল রুবেন খানের প্রলোভনে সাড়া দিয়ে আসাদ মাতুব্বর অবৈধ পথে ইতালি যেতে রাজি হন। তাই আসাদ মাতুব্বর প্রথমে ৮ লাখ টাকা দেন দালাল চক্রের হোতা রুবেল খানকে। পরে আসাদ মাতুব্বরকে ইতালি নেওয়ার কথা বলে ২ বছর আগে লিবিয়া নিয়ে যায় দালাল রুবেন খান।

তাকে লিবিয়া পৌঁছানোর পর নিয়ে যায় অন্ধকার এক গেমঘরে। সেখানে বসে প্রতিনিয়ত নির্যাতন করে ভিডিও কলে আসাদের পরিবারকে টাকা পাঠাতে বলত দালাল রুবেল। এই পর্যন্ত আসাদ মাতুব্বরের পরিবারের কাছ থেকে মোট ৪৩ লাখ টাকা নেয় রুবেল। হঠাৎ গত ৩১ ডিসেম্বর দালাল রুবেল নিহত আসাদের পরিবারের কাছে ফোন দিয়ে বলে আসাদ মাতুব্বর মারা গেছে। আমরা লাশ কবর দিয়ে দিছি। এদিকে ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে তার স্ত্রী, সন্তান, বাবা-মা, ভাই, আত্মীয়-স্বজন,পাড়াপ্রতিবেশী।
নিহত আসাদ মাতুব্বরের ভাই মাসুদ মাতুব্বর বলেন, আমরা দালাল চক্রের  হোতা রুবেল খানকে এ পর্যন্ত ৪৩ লাখ টাকা দিয়েছি। তবে দালালদের আরও দাবিকৃত টাকা দিতে না পারায় রুবেল ও তার লোকজন মিলে নির্যাতন করে আমার ভাইকে হত্যা করেছে। আমরা তাদের নামে মামলা করব। নিহতের ছেলে আবির ও আসাদের মা কুলসুম বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন,  আমার বাবা আসাদ মাতুব্বরের লাশ ফেরত চাই এবং দালাল রুবেলের ফাঁসি চাই। অভিযুক্ত রুবেল খানকে ফোন করে পাওয়া যায়নি এবং বাড়ি তালাবদ্ধ পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে ডাসার থানার ওসি মাহমুদ উল হাসান বলেন, নিহত আসাদের পরিবার মামলা করলে তা নেওয়া হবে।