ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫ মাঘ ১৪৩১

ঠাকুরগাঁওয়ে গেটম্যানবিহীন রেল ক্রসিং

ঝুঁকি নিয়ে চলছে ট্রেন

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও

প্রকাশিত: ০০:১২, ৪ জানুয়ারি ২০২৫

ঝুঁকি নিয়ে চলছে ট্রেন

পৌর এলাকার রোড স্টেশন বাজারে গেটম্যানবিহীন ক্রসিং

ঠাকুরগাঁওয়ে দ্রুতগতির আন্তঃনগর রেলসেবা বৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে বৃদ্ধি পায়নি রেলক্রসিং-এর গেট ও গেটম্যানের সংখ্যা। ফলে প্রতিনিয়ত বাড়ছে রেল দুর্ঘটনা। অধিকাংশ রেলক্রসিংয়ে নেই কোনো গেট কিংবা গেটম্যান। শুধু টাঙ্গানো সাবধান বাণী তাও আবার সবখানে নেই। ঠাকুরগাঁওয়ের এই অরক্ষিত রেল ক্রসিংগুলোর কারণে মৃত্যু ঝুঁকি আর রেল দুর্ঘটনা বাড়ছে। কিন্তু তা এড়াতে রেল বিভাগের নেই কোনো আশু পদক্ষেপ। তবে তারা বলছেন, গেটগুলোতে জনবল দেওয়ার প্রক্রিয়া চালু আছে। 
সাত বছর আগে ঠাকুরগাঁও দিয়ে মাত্র দুইটি লোকাল ট্রেন চালু ছিল। পরবর্তীতে রেলপথের সংস্কারের মাধ্যমে এই রেলরুটে ২০১৮ সালের ১০ নভেম্বর থেকে ‘একতা এক্সপ্রেস’ ও ‘দ্রুতজান এক্সপ্রেস’ নামে দুইটি আন্তঃনগর ট্রেন চলতে শুরু করে। বর্তমানে লোকাল ও দূরপাল্লার দ্রুতগামী আন্তঃনগর ট্রেনসহ প্রতিদিন ছয় জোড়া অর্থাৎ ১২টি ট্রেন চলাচল করে এই রেলপথে। রেলসেবার এই যুগে মানুষ দিন দিন ব্যাপকভাবে রেল যোগাযোগের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছেন। কাক্সিক্ষত রেলটিকিট হাতে পাওয়া আর সোনার হরিণ হাতে পাবার মতো। কিন্তু জেলার মাত্র ৩৯ কিমি  রেলপথ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির সঙ্গে যেন তাল মিলিয়ে চলতে পারছে না। 
রেলক্রসিংগুলোকে জনসাধারণের জন্য উন্নত আর নিরাপদ করার কোনো কাঠামোয় দাঁড় করা হয়নি এ পর্যন্ত। ফলে রেল দুর্ঘটনা যেন নতুন আতঙ্কের বিষয় এ অঞ্চলে। রেল বিভাগ অনুমোদিত জেলার ৫৫টি রেলগেটের মধ্যে মাত্র ৯টিতে রয়েছে গেট আর গেটম্যান। বাকি ৪৬টি রেলগেটে কোনো গেটম্যান নেই। সেগুলোতে আছে কেবল ক্রসিং-এর দুইপাশে জনসাধারণের জন্য দুইটি সতর্কীকরণ সাইনবোর্ড। এগুলো ছাড়াও জেলায় রেল বিভাগের অনুমোদনবিহীন রেলগেট আছে আরও ১০টিরও বেশি যেগুলোতে কোনো সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তিও নেই।  
এ পর্যন্ত জেলায় রেল দুর্ঘটনায় হতাহতের কোনো সরকারি পরিসংখ্যান না পাওয়া গেলেও রেল দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত যে পরিবারগুলোর সন্ধান পাওয়া গেছে তা অবর্ণনীয়। রেল বিভাগ ও যোগাযোগের অব্যবস্থাপনা এসব দুর্ঘটনার জন্য দায়ী হলেও একটি সাইনবোর্ডের বদৌলতে কোনো ক্ষতিপূরণ দিতে হয় না ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকে। ঠাকুরগাঁও রোড রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার আখতারুল ইসলাম জানান, বৃটিশ আমলে নির্মিত ঠাকুরগাঁও রেললাইনে ২০১৮ সালের ১০ নভেম্বরের পূর্বে মাত্র দুইটি ট্রেন চলাচল করত। কিন্তু বর্তমানে ছয় জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করে।

যার কারণে রেলগেটগুলোতে গেটম্যান প্রয়োজন। এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে লালমনিরহাট বিভাগীয় প্রকৌশলী (সংকেত) আহসান হাবিবকে ফোন করা হলে তিনি রেল বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা এসব দুর্ঘটনার জন্য পঞ্চগড়-ঢাকা রুটে আন্তঃনগর ট্রেন বৃদ্ধিকে দায়ী না করে রেল বিভাগের অনুমোদনবিহীন রেলগেট নির্মাণকেই দায়ী করেন। তবে ইতোমধ্যে সরকারের রাস্তা নির্মাণকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয় ও সমস্যা সমাধানের জন্য রেল বিভাগ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলেও জানান।

×