ছবি: প্রতিনিধি
শীত মৌসুমে সুন্দরবনে যেন পর্যটকদের ঢল নেমেছে। জীব বৈচিত্র্যে অনিন্দ্য সুন্দরবনে পর্যটনের আনন্দ উপভোগ করতে দেশের দূর-দূরান্ত থেকে বন্ধু-বান্ধব ও পরিবারসহ ছুটে আসছেন ভ্রমণ পিপাসুরা।
সুন্দরবনের করমজল পর্যটন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির জানান, দেশের যে কোনো জায়গা থেকে মোংলায় আসার পর মোংলা থেকে সবচেয়ে কাছাকাছি ও আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্র করমজল। সেখানেই ভিড় বেশি। এছাড়া বনের হাড়বাড়িয়া, কটকা, কচিখালী ও আন্ধারমানিকসহ বিভিন্ন স্পটেও পর্যটকদের ঢল নেমেছে।
সুন্দরবনকেন্দ্রিক পর্যটন ব্যবসায়ী দ্য সাউদার্ন ট্যুরসের মালিক মিজানুর রহমান বলেন, গত পক্ষকাল সুন্দরবনে পর্যটকদের আগমন অনেক বেড়েছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ভ্রমণ পিপাসুদের ভীড় আরও বাড়ে। পর্যটকের চাপ বাড়ায় নিজের লঞ্চসহ খুলনার ভাড়া লঞ্চে প্যাকেজ ট্রিপে পাঠাতে হয়েছে দর্শনার্থীদের।
শীতকালই মূলত পর্যটন মৌসুম। এ মৌসুমে কমবেশি দর্শনার্থীদের চাপ থাকে বলে জানান পর্যটন ব্যবসায়ী কামরুল ইসলাম। তিনি বলেন, সবাই মিলে তাদের সেবা দিতে আমরা ট্যুর ব্যবসায়ীরা সমন্বয় করে কাজ করছি, যাতে সবাই ভালো ও সমান সেবা পেতে পারেন।
তিনি আরও বলেন, মোংলা থেকে নদীপথে সর্ব প্রথম ও সবচেয়ে কাছাকাছি এবং দৃষ্টিনন্দন পর্যটনকেন্দ্র হলো এই করমজল। এখানে মূলত সারা বছরই কমবেশি পর্যটক আসেন। তবে শীত মৌসুম উপলক্ষে এবার অনেক পর্যটকের সমাগম ঘটেছে, যা বিগত কোনো সময় এত ভিড় দেখা যায়নি।
ঢাকা থেকে সুন্দরবনে ঘুরতে আসা ইসমত আরা বেগম ও আবির আহমেদ বলেন, অনেকদিন থেকে ইচ্ছা ছিল সুন্দরবন ঘুরতে আসবো। এখানে এসে অনেক ভালো লাগছে। বিভিন্ন রকম বন্যপ্রাণী দেখলাম। নিজ হাতে হরিণকে গাছের পাতা খাইয়েছি। কাছ থেকেই বানরের লাফালাফি দেখেছি। সুন্দরবনের এই বন্য পরিবেশ দেখে অভূতপূর্ব আনন্দ পাচ্ছি।
পর্যটক রাতুল হাসান বলেন, মোংলা থেকে সুন্দরবনের করমজল পয়েন্টে আসা খুবই সহজ। প্রতিবছর শীত মৌসুমে বন্ধুরা মিলে মোংলা থেকে ট্রলার ভাড়া করে সুন্দরবনে আসি। এবছর মানুষের চাপ একটু বেশি, ফলে ট্রলার ভাড়া নিতে একটু হিমশিম খেতে হয়েছিল। আজ করমজল পয়েন্ট ঘুরেছি, কাল হারবাড়িয়াসহ আরো কিছু স্পট ঘুরবো।
অপর পর্যটক মোহাম্মদ সাঈদ বলেন, পরিবারের সঙ্গে সুন্দরবনে এসে আনন্দ বহুগুণ বেড়ে গেছে। এর আগে চিড়িয়াখানায় অনেক বন্যপ্রাণী দেখেছি। অনেক ইচ্ছা ছিল সুন্দরবন এসে খোলা পরিবেশে বন্যপ্রাণী দেখার। গাছ গাছালির ভেতর থেকে হেঁটে বনের আসল পরিবেশ উপভোগ করেছি। কচ্ছপ, কুমির, বানর, হরিণ এবং বিভিন্ন রকমের পাখি দেখে ভালো লাগছে।
সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন ও পর্যটন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, করমজল পয়েন্টসহ সুন্দরবনের পর্যটন স্পটগুলোতে মানুষের ভিড় বেড়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অসংখ্য মানুষ আসছেন। পর্যটকের আগমনে যাতে বনের পরিবেশ নষ্ট না হয় সেদিকে আমরা খেয়াল রাখছি। পর্যটকদের নিরাপত্তায় আমাদের কর্মীরা দায়িত্ব পালন করছেন।
এম.কে.