পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় চিতই পিঠা বিক্রি করে মাসে প্রায় লাখ টাকা আয় করেন আব্দুল হক শিকদার (৬০)। পৌর শহরের মোক্তার পট্টি রোডে ছোট্ট একটি ভাঙ্গা দোকানে এ চিতই পিঠা বিক্রি করেই তার ভাগ্য ফিরছে বলে জানান তিনি। পিতা ও পুত্র মিেিল সকাল ৭টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত এ চিতই পিঠা তৈরী এবং বিক্রিতে ব্যস্ত থাকেন তারা।
পিঠা খেতে তিনি বানান অনেক রকমের ভর্তা ও খেজুর গুড় ও নারিকেল। গরম গরম এ পিঠার স্বাদ নিতে বিভিন্ন এলাকা থেকে ছুটে আসে মানুষ। দৈনিক ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা বিক্রি করেন তিনি, যা থেকে মাসে তার প্রায় লাখ টাকা লাভ হয়। প্রায় ৩০ বছর ধরে পৌর শহরে এ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। দৈনিক ৭০-৮০ কেজি চালের গুড়া দিয়ে চিতই পিঠা তৈরি করে বিক্রি করেন। সকাল ৭ টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত থাকে পিঠা ক্রেতাদের ভিড়। দম ফেলানোর সময় নেই যেন আব্দুল হক ও তার ছেলে নুর আলম শিকদারের ।
এইচএসসি পাশ করা ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে চিতই পিঠা বানিয়ে সংসার চালাচ্ছেন। প্রতিদিন ছয়টি চুলায় ২ হাজারেরও বেশি চিতই পিঠা তৈরি করেন তারা। প্রতিটি চিতই পিঠা বিক্রি হয় ৫ টাকায়। পিঠার সঙ্গেই অনেক পদের ভর্তা ফ্রি দেওয়া হয়। যার যতবার খুশি ভর্তা নিতে পারেন। তার পিঠার দোকানে মানুষের জটলা লেগেই থাকে। কেউ এখানে বসেই খান কেউবা আবার লাইনে পিঠা বাড়ি নিয়ে যান। তার দোকানের পিঠার বেম সুনাম রয়েছে। পিঠা বিক্রি করে মাসে প্রায় লাখ টাকা লাভ হয় বলে জানান তিনি।
আব্দুল হক শিকদার বলেন, পিঠার ব্যবসা শুরুর আগে অভাবের সংসারে কোনোরকম দিন কাটত। ধীরে ধীরে তিনি তার পিঠা জনপ্রিয় করে তুললে অভাবের সংসারে আসে স্বচ্ছলতা। তিনি আরও বলেন, আগে পরিবারে অভাব-অনটন ছিল। এখনকার অবস্থা অনেক ভালো। ৩০ বছর যাবৎ পিঠা বিক্রি করছি। এখন আমি বেশ ভালো আছি। বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ পিঠা খেতে আসে। বুধবার হাটের দিন ভিড় থাকে বেশি। তাই ঐই দিন দ্বিগুণ পিঠা বিক্রি হয়।
আব্দুল হক শিকদারের ছেলে নুর আলম শিকদার বলেন, আমারা ৪ ভাই বোন। পিঠা বানানোর ব্যবসা করে ভাইকে বিদেশ পাঠিয়েছে বাবা। আমি বাবাকে তার কাজে সহযোগিতা করি। আমাদের সংসার ভালোই চলছে। আমরা বেশ আনন্দে আছি। অনেক এলাকার মানুষ আমার এখানে পিঠা খেতে আসে।
পাথরঘাটা থেকে পিঠা খেতে আসা মিজানুর বলেন, আমরা কয়েকজন বন্ধু এখানে পিঠা খেতে এসেছি। মানুষের কাছে ভর্তা দিয়ে চিতই পিঠা খাওয়ার বিষয়টি জানতে পারি। চিতই পিঠা দিয়ে টাটকা ভর্তার স্বাদ বেশ ভালোই লেগেছে।
মোহাম্মদ আলী