
ইংরেজ আমলের সব ভবন ধ্বংস হয়ে গেলেও এই ভবনটি এখনো টিকে আছে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে
কপোতাক্ষ নদে এখন আর বড় বড় লঞ্চ, স্টিমার, হাজার মণের নৌকা ভেড়ে না। গুড় দিয়ে তৈরি হয় না এখন আর চিনি, দেশ বিদেশ থেকে ব্যবসায়ীরা ভিড় করেন না। তার পরও কয়েকশ’ বছরের ইতিহাস আর ঐতিহ্য বুকে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর। এক সময়ে মহকুমা এ শহর শিল্পে, সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে, ব্যবসা বাণিজ্যে উন্নত কোটচাঁদপুর এখন বেশকিছু স্মৃতিচিহ্ন রেখে গেছে। বর্তমান প্রজন্মের কাছে এগুলো শুধু গল্পের মতোই।
বিভিন্ন ব্যক্তি আর ইতিহাস থেকে জানা যায়, এক সময় কোটচাঁদপুর কেয়া বাগানে ভরা ছিল। পরিবেশ ছিল প্রাকৃতিক মনোরম। মুঘল স¤্রাট আকবরের আমলে পশ্চিমা দেশ থেকে ইসলাম প্রচারের জন্য এ এলাকায় আসেন দরবেশ সরদার চাঁদ খাঁ। কোটচাঁদপুরের পাশ দিয়ে প্রবাহিত কপোতাক্ষ নদের প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখে সঙ্গীদের নিয়ে তিনি এখানে বসতি স্থাপন করেন। সে সময় দরবেশ সরদার চাঁদ খা’র নামে জনপদের নামকরণ করা হয় চাঁদপুর। এক পর্যায়ে চাঁদপুর এ বঙ্গের বড় বাণিজ্যকেন্দ্রে পরিণত হয়।
যার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে দেশ ও বিদেশে। মগ ও পর্তুগিজদের নজরে আসে চাঁদপুরের বাণিজ্যকেন্দ্রটি। বিভিন্ন সময় তারা এখানে আক্রমণ করে লুটপাট করেন। ১৬০৮ সালে বাদশা জাহাঙ্গির মগ-ফিরিঙ্গী জলুদস্যুদের দমন করতে ইসলাম খাঁ চিশতি নামের এক সাহসী সুবেদারকে চাঁদপুরে পাঠান। ১৬১০ সালের দিকে সুবেদার ইসলাম খাঁ চাঁদপুরে প্রাচীর তৈরি করেন। সুবিচার করার জন্য একটি কোর্ট বা আদালত প্রতিষ্ঠা করেন। এই কোর্ট ( লোকমুখে ‘কোট’) শব্দ যুক্ত করে পরবর্তীতে চাঁদপুরকে কোটচাঁদপুর করা হয়।
১৬১৩ সালে সুবেদার ইসলাম খাঁ মারা গেলে কাসিম খাঁ বাংলার সুবেদার নিযুক্ত হন। ১৮৩০-৪৭ সালের কোনো এক সময় কোটচাঁদপুরকে মহাকুমা পর্যায়ে উন্নীত করা হয়। ১৮৬৩ সালের ১৪ মার্চ পর্যন্ত তা টিকে থাকে। ১৮৬৩ সালে সম্পুর্ণরূপে তা বিলুপ্ত করা হয়। সে সময় কোটচাঁদপুরের সেই সংরক্ষিত কোটটি বিধ্বস্ত হয়ে যায়।
কোটচাঁদপুরকে সেকালে বাণিজ্য শহর বলা হতো। এখানে বাণিজ্য হতো মাতগুড়। এই গুড় দিয়েই তৈরি করা হতো চিনি। এই চিনির ব্যাপক সুনাম ছিল। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ দিকে ইউরোপিয়ান নাগরিক মি. বেক নামের এক সাহেব এখানে একটি চিনিকল প্রতিষ্ঠা করেন। ১৮৪২ সালে এ চিনিকলটি মি. নিউহাউজ-এর মালিকানায় হস্তান্তরিত হয়। পরবর্তীতে একাধিক চিনিকল প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১৮৯০ সালে এখানে পুরোদমে চিনি কলগুলো ব্যবসা চালিয়ে যেতে থাকে। কপোতাক্ষ নদ দিয়ে বড় বড় লঞ্চ, স্টিমার, হাজার মণী নৌকা যাতায়াত করত। তাতে আসতেন দেশ বিদেশের বড় বড় ব্যবসায়ী।
কোটচাঁদপুরকে ১৮৮৩ সালে মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনে উন্নীত করা হয়। কোটচাঁদপুরে গড়ে উঠেছিল এক সমৃদ্ধ শহর। কিন্তু চিনির কারবার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সেই শহর হারিয়ে যায় এক সময়। এখন কোটচাঁদপুরে রয়েছে উপজেলা পরিষদের কিছু সরকরি অফিস। নেই ব্যবসায়ীদের সেই কোলাহল, গরুর গাড়ির চাকার ক্যাচ ক্যাচ শব্দ।
অ্যাটর্নি নিমাই চন্দ্র বসু কোটচাঁদপুরের চিনিকলের স্বত্বাধিকারীদের পক্ষে কাজ করছিলেন। তিনি ১৯০১ সালের ১৫ মে মিস্টার টি, আর স্কল্লন সাহেবকে কোটচাঁদপুরের চিনিকল পরিদর্শনের জন্য প্রেরণ করেন।
তিনি কোটচাঁদপুরে এসে কয়েকদিন অপেক্ষা করে চিনি কল সম্পর্কে এক প্রতিবেদন দেন। রিপোর্টে তিনি উল্লেখ করেন ‘কোটচাঁদপুর যশোর জেলার মধ্যে একটি নগর। এখানে মিউনিসিপ্যাল আছে, রাতে পথে আলোর ব্যবস্থা আছে। জল নিঃসরণের ড্রেন, পাকা রাস্তা, পোস্ট অফিস, পুলিশ আউট পোস্ট, ডাক বাংলো, স্কুল, দাতব্য চিকিৎসালয়, নানা দ্রব্যের দোকানসহ নানা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এরপাশে চৌগাছা এবং তারপুর অপেক্ষা কোটচাঁদপুর অনেক ভালো স্থান। যশোর জেলার মধ্যে কোটচাঁদপুরকেই আমার বৃহৎ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বলে মনে হয়। এই জায়গা বড় স্বাস্থ্যকরস্থান।
এখানকার জলবায়ু মানবস্বাস্থ্যের জন্য অনুকূল। রুগ্ন ব্যক্তিরা বায়ু পরিবর্তনের জন্য এখানে এসে থাকতে পারেন-একথা আমি সাহস করে বলতে পারি। তিনি আরও বলেছেন, এখানকার জমিদার ধর্মপ্রাণ আদর্শপুরুষ প্রতাপ চন্দ্র ঘোষ। তাঁর আনুকূল্যে কোটচাঁদপুরের প্রাকৃতিক সম্পর্কে যতটুকু অবগত হয়েছি তা স্বভাবতই এখানকার বায়ু, কপোতাক্ষ নদের ¯্রােতোবহু জল নির্মল বলে স্থানীয় মানুষ জানিয়েছেন।
কোটচাঁদপুর যশোর থেকে ২৯ মাইল, কলকাতা থেকে বেঙ্গল সেন্ট্রাল রেলওয়ে পথে ১০৪ মাইল এবং কলকাতা থেকে শিব-নিবাস(এই গ্রামটি পড়েছে নদীয়া জেলার মধ্যে, চুর্ণী নদীর তীরে) দিয়ে ইস্টার্ন বেঙ্গল স্টেট রেলওয়ের পথে ৮৬ মাইল। জলপথে যেতে হলে ঝিকরগাছা স্টেশন থেকে ৩৮ মাইল যেতে হয় কপোতাক্ষ দিয়ে। গ্রামের ভেতর বাণিজ্য উপযোগী দ্রব্যাদির মালগাড়ি বা গরুর গাড়ি যেতে পারে। কিছু পাকা রাস্তাও আছে। পথের স্থানে স্থানে বাঁধ বা সেতু আছে, অধিকাংশ সেতু কাঠের নির্মিত।
কিন্তু ভালো ঘোড়ার গাড়ি নেই। যা আছে, তা কলকাতার থার্ডক্লাসের মতো কেরাচি গাড়ি মাত্র। তার ভাড়া কম নয়, ওই গাড়ি শিব নিবাস থেকে কোটচাঁদপুরে আসতে ৫ টাকা ভাড়া নেয়। আর যশোর থেকে কোটচাঁদপুরে আসতে ভাড়া ৬ টাকা। এ ছাড়া ঘর বিশিষ্ট গরুর গাড়ি আছে। এতেও মানুষ ওঠে। এই গাড়ি ঘণ্টায় এক ক্রোশ গমন করে। শিব নিবাস থেকে ১০ ঘণ্টায়
ায় কোটচাঁদপুরে পৌঁছে। ভাড়া দেয় দেড় টাকা। এই গ্রামের পূর্বে বেঙ্গল সেন্ট্রাল রেলওয়ে এবং পশ্চিমে ইস্টার্ন স্টেট রেলওয়ে ও কপোতাক্ষ নদ। এই রকম জায়গায় বিশিষ্ট বাণিজ্য কেন্দ্রটি গড়ে উঠেছে। কোটচাঁদপুরে প্রতিদিনই বাজার বসে। খাদ্যদ্রব্যের মূল্য অপেক্ষাকৃত কম। এখানে গরু-মহিষ ক্রয় করে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়। স্বল্পমূল্যে পরিচায়ক পাওয়া যায়। তাদের দিয়ে আশাতিরিক্ত কাজ করে নেওয়া হয়। এখানে স্বল্পমূল্যে যা জিনিস পাওয়া যায়, তা বোধ হয় বাংলার অন্য কোনো বাণিজ্য কেন্দ্রে পাওয়া যায় না।
আগেই বলেছি কোটচাঁদপুর একটি বাণিজ্য কেন্দ্র। এখানে গুড় ও কাঁচা চিনি প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। অন্যান্য গ-গ্রাম থেকে এখানে প্রচুর গুড় আমদানি হয়। এই জন্য এখানে ১৩২টি দেশি চিনির কারখানা আছে। এই সকল কারখানায় গুড়ে পাটা শেওলা দিয়ে কাঁচা চিনি প্রস্তুত করে। এই দেশী কারখানাজাত কাঁচা চিনি কলে ব্যবহার করে পরিষ্কার করা হয়। অতএব চৌগাছা, তারপুর অপেক্ষা এই স্থান চিনি কলের সম্পূর্ণ উপযোগী বলে মনে হয়।
১৮৮২ সালে কোটচাঁদপুরের সাহেবরা কারখানার জন্য উপযুক্ত জায়গা দেখে সেখানে গিয়ে চিনির কারবার শুরু করে। তখন মিস ই, সি, নিউহাউসের মা ঠাকুরানী পাটা শেওলা দিয়ে দেশিয় প্রথানুসারে ‘ পেতে দিয়ে’ চিনি পরিষ্কার করতেন। কিন্তু কোটচাঁদপুরের চিনির সুনাম শুধু লোকমুখেই থেকে গেল। কারণ এক সময় কোটচাঁদপুরের চিনি কল সব বন্ধ হয়ে যায়।
কোটচাঁদপুরের চিনি কারখানা গড়ে উঠেছিল ১১৯ বিঘা ১৫ কাঠা জমির ওপর। শুধু কল বসেছিল ৭৫ বিঘা জমিতে। কলের সমগ্র অধিকৃত স্থানের তিন ভাগের দুইভাগে চিনির কল কারখানা।
উপস্থিত এই চিনি কারখানার একজন কর্ত্রী আছে। তার নাম মিস ই, সি নিউহাউস। কারখানা ছাড়াও গুদাম ঘর, চিনির কারখানা মালিকদের সুন্দর বাড়িঘরও তৈরি হয়েছিল কোটচাঁদপুরে। এই সকল কারখানা, গুদামবাড়ি, আবাস-মন্দির সবই পাকা নির্মাণ করা হয়েছিল। বাড়িগুলো এখন জীর্ণ মত হয়ে পড়েছে, তবে সংস্কার করলে নতুনের মত মনে হবে। এরমধ্যে নিউহাউস যে বাড়িতে বসবাস করেন তা পাকা এবং নতুন। কতগুলো বাড়ি ভাড়া দেয়া হয়েছে। সেখানে বছরে ভাড়া পাওয়া যায় ১২৮৯ টাকা, দুই আনা দুই পয়সা। সমগ্র জমির খাজনা লাগে বছরে ১৯০ টাকা পৌনে সাত আনা।
যেখানে কারখানার যে যন্ত্রপাতি ছিল তার একটি দর সেই সময় নিরুপন করেছিলেন টি, আর স্কল্লন সাহেব। একটি বড় ইঞ্জিন ২৫ হর্স পাওয়ারের এবং তিনটি পাম্প। যার মুল্য ১৫ হাজার টাকা। একটি সুবৃহৎ তামার কড়াই, যাতে প্রতিদিন ৪শ’ মন চিনি গলাতে পারে, তার মুল্য ২৫ হাজার টাকা। ইঞ্জিনের স্টিম তৈরি করার জন্য পানি গরম করার হাড়ি বা বাষ্পকোষ (বয়লার) আছে, তিনটি বয়লারের প্রত্যেকটির দৈর্ঘ্য ১৯ ফুট এবং পরিধি সাড়ে ৬ ফুট। মূল্য ৬ হাজার।
আর একটি বয়লার(আকার জালার মতন) উচ্চতা ৯ ফুট, পরিধি ৪ ফুট, মুল্য ১ হাজার ২শ’ টাকা। সেন্ট্রি ফিউগ্যাল মেশিন(মধ্যস্থল সঞ্চালন ন্যায় বায়ুকল বিশেষ), যার সাহায্যে প্রতিদিন ২শ’ মন চিনি রিফাইন বা পরিষ্কার করা যায়। এই কল তিনটি আছে, যার মূল্য ৬ হাজার টাকা। ব্লু অপস বা গুড় জালের সচল রন্ধনপাত্র ৯টি। এগুলো দিয়ে কাঁচাগুড় জ¦াল দেয়া হয়। ৯টিতে প্রতিদিন ৯শ’ মণ কাঁচাগুড় গলান হয়। ৯টি কলের মুল্য ১ হাজার ৮শ’ টাকা। হিটার-তামার পাত্র বিশেষ। গুড় থেকে প্রস্তুত উৎতপ্ত রস রাখার জন্য ব্যবহার হয়। ১টার দাম ১ হাজার ৬শ’ টাকা। সিসটারেন্স বা লোহার কুঁদা বিশেষ।
এই পাত্রের আধারে পড়ে চিনি দানা বাঁধে। এই পাত্রের সাহায্যে স্বচ্ছদানা বিশিষ্ট চিনি প্রস্তুত হয়। ২১টা পাত্র আছে, যার মূল্য ৬ হাজার ৩শ’ টাকা। ছোট কুঁদা মিশ্রির কাজে ব্যবহার হয়। লোহার তৈরি ১০টা আছে যার মূল্য ৬শ’ টাকা। লোহার তৈরি জলাধার ৪টি, রন্ধনপাত্রে গুড়, রস জ¦াল দেয়ার ও ঘরের ছাদে পানি সংগ্রহ করার কাজে ব্যবহার হয়ে থাকে। ওই ৪টা জলাধারের মূল্য ২শ’ ৪০ টাকা।
দোবরা চিনি করার জন্য দুই হাজার মুদগরবৎ ‘কোন্স’ যন্ত্র রয়েছে, যার নাম ১৫ হাজার টাকা। এ ছাড়া মিছরী করার নানা যন্ত্র, তার মুল্য ২ হাজার টাকা। এইসব কলগুলোর মোট মুল্য মিঃ স্কল্লন ৮৮ হাজার ৬শ’ ৪০ টাকা নির্ধারণ করেন। এছাড়াও তেলের ঘর, বয়লার ঘর, সিরাপ হাউজ, কাচা চিনি রাখার গুদাম, বড় ইঞ্জিন ঘর, কড়া ও হাড়ি রাখার ঘর, মিছরী তৈরির গুদাম, চিনি শীতল করার শেড, অফিস ঘর, মিস ই, সি, নিউ হাউস যে বাড়িতে থাকেন তার মুল্য নির্ধারণ করেছেন ৯১ হাজার ১শ’ টাকা।
এছাড়াও আরও কতগুলো গুদাম, শেড, গেট, বাড়ি ইত্যাদির মুল্য ধরে স্কল্লন সাহেব মোট ইমারতের মুল্য ধরেছেন ১ লাখ ২৯ হাজার ১শ’ টাকা ধরেছেন। আর আগে কলসহ অন্যান্য জিনিষের মূল্য ধরেছিলেন, সব মিলিয়ে তিনি মুল্য নির্ধারণ করেন ২ লাখ ১৭ হাজার ৭শ’ ৪০ টাকা।
যাইহোক, কোটচাঁদপুরের সাহেবরা কঠোর পরিশ্রম করে, অনেক উৎসাহে অকাতরে জলের মত টাকা ঢেলে এইসব কল স্থাপন করে ছিলেন। এসব ভাবলে বিস্মিত হতে হয়। কেবল কোটচাঁদপুরে নয়, চৌগাছাতেও তারা কল স্থাপন করেছিলেন। সে কলও এই সময় বন্ধ হয়ে যায়। নিউ হাউস চৌগাছা কলের বয়লার ও কিছু যন্ত্রপাতি কাঁকিনাড়ায় নিয়ে গিয়ে পাটের কলে ব্যবহার করা হয়েছে। (কাঁকিনাড়া এখন পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে পড়েছে। সেখানে একটি রেল স্টেশন আছে। সেটি শিয়ালদহ-রানাঘাট লাইনের একটি কলকাতা শহরতলি রেল স্টেশন)।
কোটচাঁদপুরের নিকটবর্তী আরও ১৩২টি দেশি কাঁচা চিনির কারখানা আছে। ওই সকল কারখানা থেকে ‘র’সুগার কলকাতার কাশীপুরে টর্নার মারিসেন কোম্পানির কলে এসে পরিশোধন হচ্ছে। এই রিফাইন সুগার আবার আমাদের দেশেই বিক্রি হচ্ছে। এতে লাভবান হচ্ছে কাশীপুরের সাহেবরা। অথচ কোটচাঁদপুরের কাছেই কারখানা, সাহেবরা মনে করলে ওই কারখানা ভাড়া করলে সেখানেই রিফাইন করতে পারতো চিনি। এতে তারা লাভবান হতো।
ইংরেজদের তৈরি অধিকাংশ ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে। কিন্তু কালের সাক্ষী হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে পুরনো একটি ভবন। কাছারি এই ভবনটি ১৮৯৯ সালে এলাকার ছেলে মেয়েদের শিক্ষার কাজে ব্যবহারের জন্য দেওয়া হয়। এটি প্রতিষ্ঠা করা হয় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়। যা এখন কোটচাঁদপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় হিসেবে পরিচিত। কয়েকশ বছরের পুরনো ভবনটি ব্যবহারের অনুপযোগী হলেও এখনো ব্যবহৃত হয়।