ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬ মাঘ ১৪৩১

খননের পরও প্রাণ ফিরছে না খাকদোন নদীর

নিজস্ব সংবাদদাতা, বরগুনা

প্রকাশিত: ২৩:১৭, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

খননের পরও প্রাণ ফিরছে না খাকদোন নদীর

খাকদোন নদীতে ড্রেজিং

বরগুনা থেকে ঢাকা যাওয়ার একমাত্র নৌপথ খাকদোন নদী। এই পথ দিয়েই ঢাকার উদ্দেশে চলাচল করে সব ধরনের নৌযান। বর্তমানে খাকদোন নদীর বিভিন্ন জায়গায় চর পড়ে নৌপথটি প্রায় বন্ধের পথে। বর্ষা মৌসুমে এ নদীতে লঞ্চ চলাচলে পানি প্রবাহ স্বাভাবিক থকলেও শীত মৌসুমে পানি কমে যায়। ফলে নাব্য না থাকায়, বিশেষ করে ভাটার সময় লঞ্চগুলো বরগুনা পৌরসভার নদীবন্দর ঘাট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে না। এতে স্বাভাবিকভাবে লঞ্চ চলাচলে বিঘœ ঘটে, ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। তবে খাকদোন নদীর নাব্য ফিরিয়ে সমস্যা সমাধানে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন বরগুনা নদীবন্দর কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসন।
বরগুনার খাকদোন নদীর এ নৌরুটকে সচল রাখতে প্রায় প্রতিবছরই বিভিন্ন স্থানে ড্রেজিং বা খনন করা হয়। এমনকি বছরধরেই নদীতে ভাসমান অবস্থায় বাঁধা থাকে ড্রেজিং মেশিন। তবে বিভিন্ন সময়ে নদীতে ড্রেজিং করা হলেও ফিরছে না নাব্য। এতে শীত মৌসুম শুরু হলে ভাটার সময় পানি কমে গেলে লঞ্চসহ বড় নৌযান চলাচলে বিঘœ ঘটে। এ সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা লঞ্চগুলো বরগুনার নদীবন্দর পর্যন্ত পৌঁছাতে না পারায় পৌরশহর থেকে প্রায় দুই-তিন কিলোমিটার দূরে নোঙর করতে হয়। আবার বরগুনা থেকে ছেড়ে যাওয়ার সময়ও একই অবস্থার সৃষ্টি হয়। 
বরগুনা থেকে ঢাকাগামী পূবালী-১ লঞ্চের মাস্টার মো. হারুন অর রশীদ বলেন, শীত মৌসুমে খাকদোন নদীর নাব্য হারায়। এ সময় পানির সংকট দেখা দিলে লঞ্চ নিয়ে ঘাটে যেতে পারি না। নদীতে ড্রেজিং করা হলেও আশপাশের কিছু কিছু খাল রয়েছে যেগুলোতে বাঁধ দেওয়া হয়েছে। যার কারণে ওই খালগুলোর পানি খাকদোন নদীতে নামতে পারে না। এ কারণে স্রোত কমে গিয়ে নদী ভরাট হয়ে যায়। একই লঞ্চের আরেক মাস্টার মো. আবুল হোসেন বলেন, বড় নদীতে যে গতিতে আমরা লঞ্চ চালিয়ে আসি, খাকদোন নদীর নাব্য না থাকায় সেই গতিতে চালাতে পারি না।

লঞ্চের গতি কম থাকায় বরগুনা নদীবন্দরে পৌঁছাতে আমাদের দেরি হয়। এতে যাত্রীদের ভোগান্তি বাড়ে, আমাদেরও লঞ্চ চালাতে কষ্ট হয়। স্থানীয় সচেতন নাগরিক মুরাদুজ্জামান টিপন বলেন, খাকদোন নদীতে নামমাত্র ড্রেজিং করা হয়। প্রয়োজন অনুযায়ী ড্রেজিং করা হয় না। ঘাট থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে লঞ্চ থেকে যাত্রীদের নামতে হয়। অথচ ড্রেজার মেশিন নদীতে থাকলেও তারা নদী খনন করে না। মাঝেমধ্যে যে খনন করা হয় তা কেবল লোক দেখানো। বাংলাদেশ নদী রক্ষা কমিটির বরগুনা জেলা শাখার সদস্য আরিফুর রহমান বলেন, খাকদোন নদীতে প্রতিবছর অপরিকল্পিতভাবে ড্রেজিং করা হচ্ছে। আমরা এই ড্রেজিংয়ের কোনো সুফল পাচ্ছি না। 
বরগুনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, খাকদোন নদীই বরগুনা থেকে ঢাকা যাওয়ার একমাত্র নৌপথ। এ পথ হয়েই লঞ্চগুলো ঢাকার উদ্দেশে চলাচল করে। বর্তমানে খাকদোন নদীর বিভিন্ন জায়গায় চর পড়ে এ নৌপথটি প্রায় বন্ধের পথে। যদিও এখন পর্যন্ত জোয়ারের সময় লঞ্চঘাট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। তবে ভাটার সময় পৌঁছানো একটু কঠিন হয়। আমাদের এই নৌপথটি সচল রাখতে বিআইডব্লিউটিএসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

×