ছবি: সংগৃহীত
‘দল করেছি, কিন্তু ভালো জায়গা কখনো পাইনি। নেতারা আমাকে বাঁকা চোখে দেখেছে। কেন দেখেছে, সেটাও বুঝি। দেখতে সুন্দর বলেই হয়তো! কেউ আমাকে বোনের সম্মান দেয়নি। বরং তারা সবসময় আমাদের ভোগের বস্তু মনে করেছে। যে মেয়েকে তারা স্পর্শ করতে পেরেছে, সেই মেয়েকেই তারা ভালো জায়গায় বসিয়েছে।’
সম্প্রতি এমনই এক ভয়েস রেকর্ড ফাঁস হয়েছে, যা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা যুব মহিলা লীগের সহ-সভাপতি উম্মে হানি সেতুর বলে জানা গেছে।
উম্মে হানি সেতু দীর্ঘদিন ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া যুব মহিলা লীগের সহ-সভাপতি হিসেবে সক্রিয় ছিলেন। তবে ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর তার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা দায়ের করা হয়। বর্তমানে তিনি পলাতক।
ভয়েস রেকর্ডে উম্মে হানি সেতুকে বলতে শোনা যায়, ‘আমার নামে তিনটা মামলা হয়েছে। আমার মত আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। কিন্তু অনেক সিনিয়র নেত্রী আছেন, যাদের নামে কোনো মামলা হয়নি। আমি ছোট ছোট বাচ্চা রেখে কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। আমার একটার বয়স মাত্র ১৬ মাস। অথচ কেউ আমার পরিবারের খবর নেয়ার প্রয়োজন বোধ করেনি। বাচ্চাগুলো কী খাচ্ছে, বাসায় বাজার আছে কি না—এসব নিয়ে কেউ মাথা ঘামায়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই নোংরা নেতাদের কারণেই আওয়ামী লীগ ধ্বংস হয়েছে। শুধু জেলা বা উপজেলা পর্যায়েই নয়, সেন্ট্রাল লেভেলেও একই অবস্থা। কত নোংরা খবর শোনা যায়। সেন্ট্রাল নেতারা নায়িকাদের রাতভর নিজের কাছে রাখতেন। এ ধরনের কাজের ফলেই আজ গজব নেমেছে।’
উম্মে হানি সেতু আরও বলেন, ‘আমরা যারা নেতাদের কথা শুনিনি, তাদেরই মামলার মুখে পড়তে হয়েছে। অথচ যারা সবসময় নেতাদের সান্নিধ্যে থেকেছে, তাদের কোনো সমস্যা হয়নি। ক্ষমতায় থাকলে সুসময়ের পাখিরা সুবিধা পায়। যেসব নারী নেতাদের কোলে বসতে পারে, তারাই ভালো জায়গায় থাকে।’
জানা যায়, উম্মে হানি সেতু তার ক্ষোভ প্রকাশ করতে হোয়াটসঅ্যাপে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের কয়েকটি গ্রুপে এই ভয়েস রেকর্ডটি পাঠান। সেখান থেকেই এটি ছড়িয়ে পড়ে।
এ বিষয়ে উম্মে হানি সেতুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি গণমাধ্যমে দাবি করেন, ‘আমি কোনো বক্তব্য দেইনি। মামলা খেয়ে আমি দৌড়ে বেড়াচ্ছি। পারলে প্রমাণ করেন।’
তবে দলীয় নেতা-কর্মীরা মনে করছেন, তার এই বক্তব্য দল ও সংগঠনের ভেতরে লুকিয়ে থাকা নোংরা বাস্তবতাগুলোই সামনে নিয়ে এসেছে।
এম.কে.