ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১

চোখ হারানো সাইদুল পেল জীবিকার সহায়তা

নিজস্ব সংবাদদাতা, পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ২১:২৪, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

চোখ হারানো সাইদুল পেল জীবিকার সহায়তা

চোখ হারানো সাইদুল

পটুয়াখালীর দশমিনার যুবক সাইদুল (২৫)। পেশায় একজন রিক্সাচালক। জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে গুলির স্পিন্টারে চোখের আলো হারিয়ে কর্মহীন হয়ে পড়েন। সঙ্গে হারান পরিবার সংসার। স্ত্রী পান্না আক্তার আর দেড় বছরের একমাত্র কন্যা সুমাইয়াকে নিয়ে চলে গেছেন বাঁশবাড়িয়া গ্রামের পৈত্রিক ভিটায়। শুধু তাই নয় কর্মক্ষমতা না থাকায় স্ত্রী পান্না আক্তার তাকে তালাক দিয়ে কন্যা সন্তানকে নিয়ে চলে যান।

এমন পরিস্থিতিতে ডেইলি স্টারে তাকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে জীবন সংগ্রামে বিপর্যস্ত সাইদুলকে তার জীবিকা নির্বাহের জন্য ঢাকার কয়েকজন হৃদয়বান ব্যক্তি তাকে একটি ব্যাটারি চালিত রিক্সা উপহার দিয়েছেন। সোমবার বেলা ১১টার দিকে পটুয়াখালী প্রেস ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও দি ডেইলি স্টারের পটুয়াখালী প্রতিনিধি অ্যাড. সোহরাব হোসেন সাইদুলের হাতে এ রিক্সাটি তুলে দেন। 
রিক্সাটি গ্রহণ করে সাইদুল বলেন, আমি কৃতজ্ঞ। আমার দুঃসময়ে যারা সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন তাদের প্রতি শুভকামনা। এখন আমি রিক্সাটির মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করতে পারব। সমাজের হৃদয়বান এসব মানুষের জন্য আজও মানবতা টিকে আছে। সাইদুল বাঁশবাড়িয়া গ্রামের মোহাম্মদ মৃধার ছেলে। চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে সাইদুল সবার বড়। অভাবের সংসারে বেশিদূর পড়াশুনা না করতে পারা সাইদুল ঢাকায় ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। শরীরে অসংখ্য স্পিন্টারের অসহ্য ব্যথা আর চোখ হারিয়ে চিকিৎসাবিহীন দিন কাটছে বেকার যুবক সাইদুলের।

সাইদুল জানান, আমার দুঃসময় দেখে স্ত্রী পান্না আক্তার তাকে তালাক দিয়ে দেড় বছরের একমাত্র মেয়ে সুমাইয়াকে নিয়ে চলে গেছেন। তিনি জানান, গত ৫ আগস্ট আন্দোলনে শামিল হন তিনি। ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে আন্দোলনের সময় চোখে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে প্রায় অর্ধশতাধিক স্পিন্টার বিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। ওই সময় আন্দোলনে উপস্থিত শিক্ষার্থী ও জনতা তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।

সেখানে এক সপ্তাহ ভর্তি থাকার সময় তার চোখ থেকে স্পিন্টার বের করা হয়। পরে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি হয়ে এক সপ্তাহ চিকিৎসা নেন তিনি। সেখানে তার চোখে অপারেশন করা হয়। স্পিন্টারের আঘাতে তার বাম চোখ সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে।

×