সিট না থাকায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের মেঝেতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে
শীতের তীব্রতা বাড়ছে শরীয়তপুরে। গত তিনদিন ধরে কুয়াশার সঙ্গে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হওয়ায় একদিকে যেমন বাড়ছে শীত, অন্যদিকে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। এতে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। তবে এ নিয়ে আতংকিত হওয়ার কিছু নেই বলে জানিয়েছেন চিকৎসকরা।
১০০ শয্যার শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে মোট শয্যা ১০টি। সোমবার দুপুর পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে নতুন রোগী ভর্তি হয়েছে ৩৬ জন এবং গত এক সপ্তাহে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মোট রোগী ভর্তি হয়েছে ১৭৬ জন। শুধু সদর হাসপাতালেই প্রতিদিন প্রায় ৩৫/৪০ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হচ্ছে। শয্যার প্রায় সাতগুণ বেশি ডায়রিয়ার রোগী থাকায় হাসপাতালের বারান্দার ফ্লোরে অবস্থান করতে হয়েছে আক্রান্ত শিশুসহ মা ও তার স্বজনদের। হাসপাতালের বারান্দাসহ যত্রতত্র রোগী।
কেউ তার ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুকে কোলে নিয়ে খাওয়াচ্ছেন, কেউ বা সান্ত¦না দিচ্ছেন আবার কেউ বা শিশুর চিকিৎসা নিচ্ছেন। অধিকাংশ শিশু রোগী পাতলা পায়খানা ও বমি নিয়ে ভর্তি হয়েছে। চিকিৎসা নিতে আসা শিশুর পিতা জেলা শহরের মোটরসাইকেল ব্যবসায়ী আব্দুল জলিল বলেন, হাসপাতালে রোগীর অনুপাতে শয্যা না থাকায় চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন রোগী ও স্বজনরা।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের নবজাতক, শিশু ও কিশোর মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. রাজেশ মজুমদার বলেন, শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ডায়রিয়াজনিত সমস্যা শিশুদের ক্ষেত্রে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। গরমের তুলনায় এই শীতে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা ৪ গুণ। তিনি আরও বলেন, হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে শয্যা সংখ্যা ১০টি। ফলে দুর্ভোগ হচ্ছে রোগীদের। তারপরও রোগীর চিকিৎসায় সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে শিশুদের পাতলা পায়খানা বা বমি হলেই আতংকিত না হওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন এই শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
শয্যা সংকুলান না হওয়ায় রোগী হাসপাতালের ফ্লোরে রাখার কথা স্বীকার করেছেন সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. হাবিবুর রহমান। বাসি খাবার না খাওয়ার জন্য সতর্ক করেছেন তিনি। শিশুদের মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানোর জন্য পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।