মুকসুদপুর রেলওয়ে স্টেশন
জাহানারাবাদ এক্সপ্রেস ৮২৫/২৬ খুলনা-ঢাকা এবং রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস ৮২৭/২৮ নামে দুই জোড়া ট্রেন পদ্মা সেতু হয়ে নতুন রেলপথ ধরে খুলনায় রেল চলাচল শুরু হবে আগামী ২৪ ডিসেম্বর মঙ্গলবার। রাজধানী থেকে কাশিয়ানী জংশন হয়ে খুলনা ও বেনাপোল রুটে নতুন দুই জোড়া যাত্রীবাহী ট্রেন চলবে।
রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, নতুন রেলপথ নির্মাণের ফলে ঢাকা-খুলনার দূরত্ব ২১২ কিলোমিটার কমে গেছে। এ পথে ঢাকা থেকে খুলনা বা বেনাপোলে যাওয়া যাবে মাত্র পৌনে চার ঘণ্টায়। যেখানে যমুনা সেতু হয়ে যাতায়াতে সময় লাগতো প্রায় সাড়ে ৯ ঘণ্টা।
জানা গেছে, পদ্মা সেতু হয়ে খুলনা-ঢাকা-খুলনা ও বেনাপোল-ঢাকা-বেনাপোল রুটে নতুন এক জোড়া করে মোট দুই জোড়া ট্রেন চলবে। দুই জোড়া ট্রেনই গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী জংশন হয়ে চলাচল করবে। ইতোমধ্যে ট্রেনগুলোর চলাচলের সময়সূচি ও ভাড়া প্রকাশ করেছে রেলওয়ে বিভাগ।
বাংলাদেশ রেলওয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২৪ ডিসেম্বর মঙ্গলবার থেকে খুলনা-ঢাকা-খুলনা রুটে এক জোড়া এবং বেনাপোল-ঢাকা-বেনাপোল রুটে এক জোড়া নতুন আন্তঃনগর ট্রেন পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ট্রেন সিডিউল অনুযায়ী, সকাল ৬টায় খুলনা থেকে জাহানারাবাদ এক্সপ্রেস নাম নিয়ে ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। সকাল পৌনে ১০টায় ঢাকায় পৌঁছাবে। বেলা পৌনে ১১টায় ঢাকা থেকে "রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস" নামে বেনাপোলের উদ্দেশে যাত্রা করবে। যশোর জংশন হয়ে দুপুর আড়াইটায় বেনাপোলে পৌঁছাবে। রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস বিকেল সাড়ে তিনটায় বেনাপোল থেকে যাত্রা করে সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছাবে। এরপর ট্রেনটি জাহানাবাদ এক্সপ্রেস নাম নিয়ে ঢাকা থেকে রাত ৮টায় যাত্রা করে রাত ১১টা ৪০ মিনিটে খুলনায় পৌঁছাবে।
রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস যাত্রাবিরতি করবে (আপ ও ডাউন) যশোর জংশন, নড়াইল, কাশিয়ানী জংশন, ভাঙ্গা জংশনে এবং জাহানাবাদ এক্সপ্রেস যাত্রাবিরতি করবে নওয়াপাড়া, সিঙ্গিয়া জংশন, নড়াইল, লোহাগড়া, কাশিয়ানী জংশন ও ভাঙ্গা জংশনে। বিগত সরকারের আলমে এই এলাকার জনগণকে ট্রেন যোগে যাতায়াতের ব্যবস্থার জন্য অগ্রাগ্রধিকার ভিত্তিতে ট্রেন লাইন স্থাপনের কার্যত্রুম শুরু করেছিল। তারই ধারাবাহিকতায় ২৪ ডিসেম্বর মঙ্গলবার ট্রেন যাত্রা শুরু হচ্ছে।
ট্রেন চলাচলকে কেন্দ্র করে একদিকে যেমন এলাকার মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে অপরদিকে বিভিন্ন স্টেশনে স্টোপেজ না থাকায় সাধারন মানুষের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে। অনেক টাকা ব্যয় করে ঢাকা-রুপদিয়া রেলপথে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে রেলকর্তৃপক্ষ রেলস্টেশন তৈরি করেছেন। এর মধ্যে গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার মুকসুদপুর রেল স্টেশন ও ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা উপজেলায় নগরকান্দা রেল স্টেশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ দুইটি স্টেশন। এখান হতে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে থাকে। রেল কর্তৃপক্ষ ঘোষিত সিডিউলে এই দুইটি স্টেশনে চলাচলকারী "রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস" এবং "জাহানারাবাদ এক্সপ্রেস" নামের দুই জোড়ার ট্রেন এ দুইটি স্টেশনে স্টুপিজ (দাঁড়ানো) রাখেনি।
এ বিষয়ে মুকসুদপুর ও নগরকান্দার উপজেলার সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘদিন যাবৎ এলাকার মানুষ বিভোর স্বপ্ন নিয়ে রয়েছে এখান থেকে ট্রেন করে ঢাকা যাবে আবার ঢাকা হতে ট্রেন করে বাড়ি ফিরবে। কেউ কেউ আবার যশোর, বেনাপোলসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ট্রেন যাতায়াত করবে। এই স্টেশন দুটিকে গুরুত্বপূর্ণ স্থান হিসেবে বিবেচনা করে এলাকার মানুষকে ট্রেনে যাতায়াতের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য রেলকর্তৃপক্ষের কাছে এলাকাব মানুষ জোরালো দাবি জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে স্থানীয় সংবাদকর্মী কাজী মো. ওহিদুল ইসলামের সাথে আলাপকালে তিনি জানান, মুকসুদপুর ও নগরকান্দা স্টেশনে "জাহানারাবাদ এক্সপ্রেস" ৮২৫/২৬ খুলনা ঢাকা এবং "রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস" ৮২৭/২৮ ঢাকা বেনাপোল নামের ট্রেন দুইটিকে স্টপেজ করার ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য রেলকর্তৃপক্ষের কাছে এলাকাবাসীর পক্ষে জোর দাবি করেছেন।
এম হাসান