ছবি: সংগৃহিত
ফরিদপুরের সালথা উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য সৌদি প্রবাসী মো. কাউসার মাতুব্বরের স্ত্রী ইতি বেগম গোয়ালপাড়া গ্রামে তাদের নিজ বাড়িতে লুটপাট ও ডাকাতির অভিযোগ এনে সালথা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) সালথা থানায় এই অভিযোগটি করা হয়।
অভিযোগে বলা হয়, ১৯ ডিসেম্বর দিবাগত রাত ৩টার দিকে সালথা উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গোয়ালপাড়া গ্রামের আছির উদ্দিন শেখের ছেলে জাহাঙ্গীর শেখ, কবির শেখ, আয়নাল শেখের ছেলে ছেকন শেখ, হালিম শেখের ছেলে সুজন শেখ, রব মোল্যার ছেলে আবুল খায়ের মোল্লা, খান পরামানিকের ছেলে কামরুল প্রামানিক, জীবন প্রমানিকের ছেলে জাকির প্রমানিক, শুক্কুর প্রমানিক, রহমান শেখের ছেলে নয়ন ও অজ্ঞাত ২-৩ জন তাদের ঘরের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে চালের ড্রামের মধ্যে রাখা নগদ ৮ লাখ টাকা ও দেড় ভরি স্বর্ণালংকার এবং তের বিঘা জমির দলিলপত্র লুট করে নিয়ে যায়।
অভিযোগ পেয়ে পুলিশ সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান। তিনি ঘটনাটি তদন্ত করার সময় কোনও তালা ভাঙা না দেখায় চাউলের ড্রামের মধ্যে রাখা নগদ ৮ লাখ টাকার বিষয়ে জানতে চাইলে ডাকাতি মামলার বাদি ইতি বেগম কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি।
এছাড়া উক্ত মামলার আসামিদের সঙ্গে ইতি বেগমের গ্রাম্যদল পক্ষ নিয়ে ঝামেলা থাকায় বিষয়টি পুলিশের সন্দেহ হলে তারা (পুলিশ) এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন ডাকাতির ঘটনাটি পুরোটাই সাজনো। প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে এই লুটপাটের নাটক সাজানো হয়েছে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কাউসার মেম্বারের পরিবারের লোক আওয়ামী লীগের রাজনীতি সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। কাউসার মেম্বার জীবিকার তাগিদে বর্তমানে সৌদি আরব রয়েছেন। গত ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে কাউসারের স্ত্রী ইতি বেগম গোয়ালপাড়া গ্রামে বিএনপির এক পক্ষের নেতৃত্ব দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এলাকায় তার পক্ষে লোকজন ভিড়ানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্র করছেন। এরই অংশ হিসাবে বৃহস্পতিবার রাতে ডাকাতি ও লুটপাটের নাটক সাজিয়ে গোয়ালপাড়া গ্রামের কিছু নিরীহ লোককে হয়রানি করার চেষ্টা করছেন।
ডাকাতি ও লুটপাট মামলার বাদী কাউসার মাতুব্বরের স্ত্রী ইতি বেগম বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে আমি বাড়িতে ছিলাম না। এই সুযোগে ডাকাতেরা আমার বাড়িতে ঢুকে ঘরের তালা ভেঙে নগদ ৮ লাখ টাকাসহ বিভিন্ন মূল্যবান জিনিসপত্র লুটপাট করে নিয়ে যায়। তবে এরা ডাকাতির সময় ছিল কি না আমি জানি না। এদের নাম আমার শাশুড়ি বলেছেন। আর এই ঘটনায় সালথা থানা পুলিশ যদি মামলা না নেয়, তাহলে আমি কোর্টে মামলা করব।
অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর শেখ বলেন, গ্রাম্য দলাদলি নিয়ে ইতি বেগমের সঙ্গে আমাদের ঝামেলা চলছে। এ কারণেই তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছেন। আশা করি পুলিশ তদন্ত করে সত্য ঘটনা উদঘাটন করবে।
সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান বলেন, গোয়ালপাড়া গ্রামে ঘটনা শুনে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাই। প্রাথমিক পর্যায়ে তদন্ত করে ডাকাতি কোনও আলামত পাওয়া যায়নি। অন্য কোনও বিষয় থাকতে পারে যা বিস্তারিত তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তবে সালথার বিভিন্ন এলাকায় গ্রাম্যদল পক্ষ ভারী করা, অধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জের ধরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ডাকাতির নাটক সাজানো হচ্ছে, এতে আমরা বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়ে যাচ্ছি।
সাইদ