বিক্ষোভ
গাজীপুরে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের বন্ধ ঘোষণা করা ১৬ কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে ফের বিক্ষোভ করেছে শিল্প গ্রুপের ১৬টি কারখানার শ্রমিকরা। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা আগুন জ্বালিয়ে প্রায় ৪ঘন্টা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে। শ্রমিকরা বেশ কয়েকটি যানবাহন ভাংচুর এবং যৌথবাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ারসেল ও সাউন্ড গ্রেনেড আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এসময় উভয়পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। একপর্যায়ে যৌথবাহিনীর সদস্যদের ধাওয়ার মুখে আন্দোলনরত শ্রমিকরা ছত্রভঙ্গ গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। শনিবার মহানগরীর সারাবো-চক্রবর্তী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
শিল্প পুলিশ ও কারখানার শ্রমিকরা জানায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের মালিকানাধীন বেক্সিমকো ইন্ডাষ্ট্রিয়াল পার্কে ১৬টি শিল্প কারখানা রয়েছে গাজীপুর মহানগরের কাশিমপুর থানাধীন সারোবো এলাকায়। এসব কারখানায় প্রায় ৩৫ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। কারখানাগুলোতে তৈরি পোশাক রপ্তানির ক্রয়াদেশ না থাকায় ও কাঁচামাল আমদানির ঋণপত্র খুলতে না পারায় কর্তৃপক্ষ গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে কারখানাগুলো বন্ধ (লে-অফ) ঘোষণা করে দেয়। এতে শ্রমিকরা বেকার হয়ে পড়ে।
শিল্প পুলিশ জানায়, শনিবার সকালে বেক্সিমকো ইন্ডাষ্ট্রিয়াল পার্কের কারখানাগুলোর শ্রমিকরা পার্কের সামনে জড়ো হতে থাকে। এসময় বন্ধ কারখানাগুলো খুলে দেওয়া এবং শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রমিকদের পাওনাদি পরিশোধের দাবীতে তারা বিক্ষোভ শুরু করে। সকাল সোয়া ১০টার দিকে তারা কারখানার পার্শ্ববর্তী জিরানী বাজারের দক্ষিণ পানিসাইল এলাকায় পদ্মা কারখানার সামনে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে। তারা সড়কের উপর কাঠের গুঁড়ি, টায়ারসহ বিভিন্ন মালামাল ফেলে আগুন জ¦ালিয়ে দেয়। এতে ওই সড়কের উভয় দিকে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে দীর্ঘ যানজট লেগে যায়। খবর পেয়ে শিল্প ও থানা পুলিশ, সেনাবাহিনী ও র্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়কের উপর থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলেও শ্রমিকরা তাদের দাবিতে অনঢ় থেকে সড়কের উপর অবস্থান করতে থাকে। একপর্যায়ে শ্রমিকরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুঁড়তে থাকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ারসেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোঁড়া হলে শ্রমিকরা আরো বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়।
জিএমপি’র কাশিমপুর থানার ওসি সাইফুল ইসলাম জানান, বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বেশ কয়েকটি গাড়ির কাঁচ ভাংচুর করে। একপর্যায়ে যৌথবাহিনীর সদস্যরা কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁেড় ধাওয়া করলে আন্দোলনরত শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় এবং দুপুর সোয়া দুইটার দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। নাওজোড় হাইওয়ে থানার এসআই শহিদুল ইসলাম বলেন, মহাসড়ক অবরোধ করায় ওই সড়কের উভয় দিকে ৪ ঘন্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আবু তালেব বলেন, শ্রমিকেরা কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে সকাল থেকে বিক্ষোভ শুরু করেছিল। পরে যৌথ বাহিনী তাদেরকে সড়কে থেকে সরিয়ে দিলে দুপুর ২টা থেকে যানবাহন চলাচল শুরু হয়। এখন সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
শহীদ