আইনজীবী আলিফ হত্যা
চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ ব্রহ্মচারীর জামিন না মঞ্জুর ঘিরে সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও আইনজীবী হত্যার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়েছে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে গঠন করা তদন্ত কমিটি। পাশাপাশি তদন্ত কমিটির তিন সদস্য, সদস্য সচিব পদত্যাগের পর আহবায়কও অব্যাহতি চেয়েছেন।
আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি। কিন্তু কমিটির ৩ সদস্য কমিটি ঘোষণার পরদিনই পদত্যাগ করেন। এরপর একদিন পর সদস্য সচিবও পদত্যাগ করেন। সবশেষে বুধবার কমিটির আহ্বায়ক অব্যাহতি চেয়ে সমিতির বরাবরে চিঠি দেন, তাতে তিনি এ ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের পাশাপাশি আরও কিছু সুপারিশ করেছেন।
সম্প্রতি এ বিষয়টি জানাজানি হয়। শনিবার রাতে গণমাধ্যমে কাছে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন কমিটির আহবায়ক সিনিয়র আইনজীবী আবদুস ছাত্তার।
ওই চিঠিতে কেন এই কমিটির তদন্তের পরিবর্তে বিচার বিভাগীয় তদন্ত চাইছেন তার ব্যাখ্যাও দেন তিনি।
অপরদিকে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজিম উদ্দিন চৌধুরী এ বিষয়ে ২৬ ডিসেম্বর সমিতির কার্যকরী কমিটির সভায় আলোচনা শেষে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, আইনজীবী আলিফ হত্যার ঘটনায় ৯ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি একটি তদন্ত কমিটি করে। কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে ১০ থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দেয়া হয়।
ওই কমিটির আহ্বায়ক করা হয় বিএনপিপন্থী আইনজীবী ও সাবেক পিপি আবদুস ছাত্তারকে এবং সদস্য সচিব করা হয় বিএনপিপন্থী আইনজীবী ও সমিতির বর্তমান কমিটির এজিএস কাশেম কামালকে। তদন্ত কমিটির অন্য তিন সদস্য হলেন অ্যাডভোকেট জাফর ইকবাল, মো. মাঈনুদ্দিন সোহেল ও মো. ইবনু।
জেলা আইনজীবী সমিতির কয়েকজন নেতা জানিয়েছেন, এটি দেশে এবং বিদেশী আলোচিত ইস্যু। একজন সাবেক বিচারক কিংবা জেলা জজ পদ মর্যাদার কাউকে দিয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন করার প্রস্তাব দেওয়া যেতে পারে। কারণ এখানে পুলিশ, আদালতসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষ রয়েছে। আইনজীবীরা তদন্ত প্রতিবেদন দিলে এটি নিয়েও বিভিন্ন মত তৈরি হতে পারে। তাই বিচার বিভাগীয় তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।
প্রসঙ্গত, আদালত এলাকায় ২৬ নভেম্বরের সংঘর্ষ, ভাংচুর ও পুলিশের কাজে বাধাদানের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি মামলা করেছে। আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার ঘটনায় তারা বাবা বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন।
একইদিন আলিফের ভাই খানে আলম বাদী হয়ে যানবাহন ভাংচুর ও জনসাধারণের উপর হামলার ঘটনায় ১১৬ জনকে আসামি করে আরেকটি মামলা করেন কোতোয়ালী থানায়। ওই মামলায় ৭০ জন আইনজীবীকেও আসামি করা হয়েছে বলে দাবি করেছে, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট।
ইসরাত