এমরান সালেহ প্রিন্স
হিন্দুধর্মাবলম্বী ও স্থানীয় জনসাধারণের সাথে পৃথক পৃথক মতবিনিময় সভায় সম্প্রতি মন্দিরে নির্মাণাধীন প্রতীমা ভাঙচুরের ঘটনায় তীব্র নিন্দা, ক্ষোভ ও ঘৃনা প্রকাশ করে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, সুপরিকল্পিতভাবে দেশের স্থিতিশীলতা বিনষ্টের জন্য সাম্প্রদায়িক সংঘাত সৃষ্টি করতে দেশ-বিদেশ থেকে ষড়যন্ত্র চলছে। কিন্তু ষড়যন্ত্র করে এই অভিযাত্রা নস্যাৎ করা যাবে না।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার শাকুয়াই ইউনিয়নের বন্দেরপাড়া রাধা গোবিন্দ হরি বাসর ও বিলডোরা ইউনিয়নের পলাশকান্দা কালি মন্দির পরিদর্শন করেন তিনি।
হালুয়াঘাটের ঘটনাকে তিনি ন্যাক্কার ও রহস্যজনক উল্লেখ করে বলেন, ‘শান্তি ও সম্প্রতির জনপদ হালুয়াঘাটে বিগত ৫৪ বছরের ইতিহাসে এ ধরনের ঘৃনিত ঘটনা কেউ ঘটানোর সাহস দেখায় নাই।’
তিনি সকলকে ঐক্যবদ্ধ ও ধৈর্য্য ধারণ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘যারা ধর্মে ধর্মে সংঘাত সৃস্টি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়,তারা মানুষ নামের অমানুষ ,নরপিচাশ । এদের কোনো ক্ষমা নাই। আমরা বিশ্বাস করতে চাই, এসব ঘটনা বিচ্ছিন্ন। বিচ্ছিন্ন ঘটনা হলেও এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার সাথে জড়িতদের আবশ্যই বিচার হতে হবে। ইতোমধ্যে পুলিশ দুই জনকে আটক করেছে এবং এর পেছনের ইন্ধনদাতা অপশক্তিকেও। সে যেই হোক না কেনো, তাদেরকে শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনা হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্য যে ,ছাত্র গণ বিপ্লবে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের কতিপয় মিডিয়ায় বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন নিপীড়নের কল্পকাহিনী প্রচার করছে। বাংলাদেশে এর কোনো সত্যতা না থাকলেও স্বার্থান্বেষী মহল বাংলাদেশের অভ্যন্তরে রাতের আধারে এমন কিছু দুর্ঘটনা ঘটিয়ে ভারতের মিডিয়ায় প্রচারিত কল্পকাহিনীর সত্যতা প্রমাণের অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। এর পরপরই ভারত সরকার থেকে বিবৃতি প্রদান করে উদ্বেগ জানানো হয়। এসব কিছুই বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদের অবসান পরবর্তী গণতান্ত্রিক শাসনের আকাঙ্খার বিরুদ্ধে মাস্টার প্ল্যানের অংশ।’
এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, বাংলাদেশের হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খৃস্টানসহ সকল ধর্ম-বর্ণ-গোত্রের মানুষ ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়েছে। গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় সব বাংলাদেশী যুক্ত আছে। কোনো ষড়যন্ত্র করে এই অভিযাত্রা নস্যাৎ করা যাবে না। তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের সকলকে মনোবল অটুট রেখে ধর্ম-কর্ম জোরদারভাবে অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।
তিনি প্রশাসন , সেনাবাহিনী ,আইন শৃঙ্খলা বাহিনীসহ বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং সর্বসাধারণের প্রতি সকল ষড়যন্ত্র ,চক্রান্তের বিরুদ্ধে সতর্ক থেকে নজরদারি জোরদার করার আহ্বান জানান।
মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন- পুজা উদযাপন কমিটির সভাপতি ভজন সরকার, সজল সরকার, রঞ্জন সরকার, প্রবোধ সরকার, বিপ্লব সরকার, সুমন সরকার, সুভাষ সরকার, সুব্রত পাল, শাকুয়াই ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার ইউনুস খান, সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান ও শহীদুল হক খান সুজন প্রমুখ।
এম হাসান