নোয়াখালী জেলা নায়েবে আমীর মাওলানা নিজাম উদ্দিন ফারুক।
শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ মদদে বিডিআর বিদ্রোহের নামে পিলখানা হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। সেই হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য ছিল দেশপ্রেমিক সেনা সদস্যের হত্যা করে একটি নতজানু প্রশাসন তৈরি করা। সেই হত্যাকাণ্ডে ভারতের নির্দেশে দেশপ্রেমিক ৫৭ জন সেনা অফিসারকে হত্যা করায় প্রশাসনে একটা বড় ধরনের ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে হাসিনা ক্ষমতা ধরে রাখতে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনীর সদস্যদের জনগণের বিপক্ষে দাঁড় করিয়েছে।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার পরকোট দশঘরিয়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মসলিশে শূরা সদস্য ও নোয়াখালী জেলা নায়েবে আমীর মাওলানা নিজাম উদ্দিন ফারুক।
তিনি বলেন, ‘২০০৮ সালে ত্রিমুখী সমঝোতার নির্বাচনের মাধ্যমে হাসিনা ক্ষমতা দখল করে। হাসিনা ক্ষমতায় বসেই সমঝোতার শর্ত হিসেবে প্রথমে মঈন উ উদ্দীন-ফখরুদ্দীনকে নিরাপদে দেশ ছেড়ে বিদেশে চলে যেতে সহায়তা করে। পরে ভারতের তাঁবেদারির অংশ হিসেবে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা 'র' এর সহযোগিতায় বিডিআর বিদ্রোহের নামে পিলখানা হত্যাকাণ্ড চালায়। পরবর্তী এদেশ থেকে ইসলামকে নির্মূল করতে হাসিনা জামায়াত-শিবিরকে টার্গেট করে। জামায়াত-শিবিরকে নিঃশেষ করতে পারলেই তারা সফল হবে এবং চিরকাল ক্ষমতা দখল করে জনগণের রক্ত শোষণ করবে। শেখ হাসিনা জামায়াতের নেতৃবৃন্দকে বিচারিক হত্যা করেছে, অসংখ্য নেতাকর্মীকে বাড়ি ছাড়া করেছে। নির্যাতনের শিকার হওয়া সত্ত্বেও জামায়াতে ইসলামী নিঃশেষ হয়নি, জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়নি। জামায়াতে ইসলামী জনগণের পাশে ছিল, আছে এবং থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘প্রতিষ্ঠান তৈরি করার ক্ষমতা তাদের নেই। যে কারণে তারা জামায়াতে ইসলামীর তৈরি করা প্রতিষ্ঠান দখল করেছে। আমরা স্কুল করেছি, তারা দখল করেছে; কলেজ করেছি, তারা দখল করেছে; বিশ্ববিদ্যালয় করেছি, তারা দখল করেছে; হাসপাতাল করেছি, তারা দখল করেছে; ব্যাংক করেছি, তারা দখল করেছে। ছাত্র জনতা রক্ত দিয়ে দেশকে চাঁদাবাজ দখলদার মুক্ত করেছে। এরপর নতুন চাঁদাবাজ দখলদারের উদ্ভব হয়েছে। এসকল চাঁদাবাজদের রুখে দিতে হবে। আমারা চাঁদাবাজি করবো না, কাউকে করতেও দিবো না; আমরা টেন্ডারবাজী করবো না, কাউকে করতেও দিবো না; আমরা ভূমি দখল করবো না, কাউকে করতেও দিবো না।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চাটখিল উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা মহিউদ্দিন হাসান বলেন, ‘তোমরা টেন্ডারবাজি করছো, তোমরা স্ট্যান্ড দখল করছো আর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এদেশের মানুষের মন দখল করতেই কাজ করছে। জামায়াতে ইসলামী ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে না, জামায়াতে ইসলামী ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক সংগঠন। যার ফলে জামায়াতে ইসলামী বিশ্বাস করে সকল ধর্মের মানুষের স্বাধীনভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালনের অধিকার রয়েছে।’
জামায়াতে ইসলামী পরকোট ইউনিয়ন সভাপতি মাস্টার কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি মাওলানা মামুনুর রশিদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- নোয়াখালী জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী মাওলানা দেলোয়ার হোসেন, চাটখিল উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা মহিউদ্দিন হাসান, চাটখিল পৌরসভা আমীর মাওলানা আক্তার হোসেন, উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর মাওলানা ওমর ফারুক, উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারী নূর হোসাইন রিয়াজ, উপজেলা জামায়াতের শুরা ও কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আব্দুল বাছির, গোলাম কিবরিয়া, ছাত্রশিবির চাটখিল পশ্চিম সাংগঠনিক থানা সভাপতি মো. আব্দুর রহিম।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চাটখিল উপজেলা সেক্রেটারী মাওলানা নজরুল ইসলাম, পরকোট ইউনিয়নের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সাবেক ছাত্রনেতা মাওলানা মোরশেদ আলম, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন পরকোট ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ হাছানুজ্জামান জাহেদ প্রমুখ।
এম হাসান