কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের প্রক্রিয়া ও বাজারজাতকরণ এবং ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ের ১২টি ইউনিয়নে নির্মিত হয়েছে কমন ফ্যাসিলিটি সেন্টার। উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের উদ্যোগে এস.এ.সিপি প্রকল্পের আওতায় এসব সেন্টার নির্মিত হচ্ছে, যা কৃষকদের আর্থিক সুরক্ষা এবং উৎপাদিত পণ্যের মানোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
কৃষি অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, মীরসরাইয়ের ১৬টি ইউনিয়নের মধ্যে ১২টিতে এই কমন ফ্যাসিলিটি সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি সেন্টার নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। এর মধ্যে অর্ধেক অর্থ কৃষি অধিদপ্তর এবং বাকি অর্ধেক কৃষকগণ নিজস্ব অর্থায়নে বহন করছেন। এই সেন্টারগুলোর মাধ্যমে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসল একত্রিত করে সংরক্ষণ এবং প্রক্রিয়াজাত করতে পারছেন। প্রক্রিয়াজাতকরণের পর পাইকাররা সরাসরি এই সেন্টারগুলো থেকে পণ্য ক্রয় করছেন। এতে মধ্যস্বত্বভোগীদের প্রভাব কমে কৃষকদের আয় বৃদ্ধি পেয়েছে।
দুর্গাপুর ইউনিয়নের হাজীশ্বরাই এলাকার কৃষক উজ্জ্বল মজুমদার ও আবুল বশর জানান, “এই সেন্টারের মাধ্যমে ফসল সংরক্ষণ এবং বিক্রয়ের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। একত্রে প্রক্রিয়াজাতকরণের ফলে দৈনিক হাজার হাজার কেজি ফসল বাজারজাত হচ্ছে এবং এতে সময় ও অর্থ সাশ্রয় হচ্ছে।”
জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের মামা ফকির আস্তানা এলাকার ১০৭ জন কৃষক মিলে তৈরি করেছেন একটি কমন ফ্যাসিলিটি সেন্টার। কৃষক মোঃ আবদুল হক, জহুরুল আলম, মোঃ নজরুল ও মোমিন উদ্দিন জানান, “শীতকালে দৈনিক ৫-৬ হাজার কেজি, বর্ষাকালে ৩-৪ হাজার কেজি, এবং গ্রীষ্মকালে প্রায় ১ হাজার কেজি সবজি প্রক্রিয়া শেষে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, নোয়াখালীসহ স্থানীয় পাইকারদের কাছে বিক্রি করি। এতে করে আমরা অধিক লাভবান হচ্ছি। ”
মীরসরাই উপজেলা কৃষি অফিসার প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, “এস.এ.সিপি প্রকল্পের আওতায় কৃষকদের জন্য কমন ফ্যাসিলিটি সেন্টারের পাশাপাশি বিভিন্ন কৃষি উপকরণ এবং যন্ত্রপাতি সমান আর্থিক অংশগ্রহণের মাধ্যমে সরবরাহ করা হচ্ছে। কমন ফ্যাসিলিটি সেন্টার প্রকল্পটি গ্রামীণ কৃষি ব্যবস্থাপনায় এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পারলে এই প্রকল্প কৃষকদের আর্থিক স্বাবলম্বিতা অর্জন এবং তাদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে একটি অনুকরণীয় উদাহরণ হয়ে থাকবে।”
মোহাম্মদ আলী