ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬ পৌষ ১৪৩১

ব্যাঙের ছাতার মতো লাইসেন্স বিহীন ফার্মেসি, স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে সাধারণ মানুষ

নিজস্ব সংবাদদাতা বাকেরগঞ্জ বরিশাল

প্রকাশিত: ১৬:৩৯, ২০ ডিসেম্বর ২০২৪; আপডেট: ১৬:৪০, ২০ ডিসেম্বর ২০২৪

ব্যাঙের ছাতার মতো লাইসেন্স বিহীন ফার্মেসি, স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে সাধারণ মানুষ

বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলায় ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে শতশত লাইসেন্স বিহীন ফার্মেসি। ঔষধ প্রশাসনের নিয়মনীতি উপেক্ষা করে উপজেলা পৌর শহরসহ ১৪ টি ইউনিয়নের অলিতে গলিতে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে ফার্মেসি। পৌর বা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন ওষুধের ব্যবসা। অনেকে আবার চায়ের দোকান মুদির দোকানেও ঔষধ বিক্রি করে আসছে। এমন পরিস্থিতিতে উপজেলায় কয়েক লাখ মানুষ চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে।

সাধারণ জনগণের অভিযোগ, অলিতে গলিতে লাইসেন্স বিহীন ফার্মেসিগুলোতে জনগণের জীবন রক্ষাকারী ওষুধ নিয়ে চলছে ছিনিমিনি খেলা। অনেকেই জানেন না ওষুধের দাম ও মেয়াদ সম্পর্কে। এতে গলাকাটা বাণিজ্য ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধে রোগীদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। পাশাপাশি ফার্মেসিগুলোতে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে হাতুড়ে ডাক্তার দিয়ে দেওয়া হচ্ছে চিকিৎসা সেবা। এমন পরিস্থিতিতে চিকিৎসার পরিবর্তে অপচিকিস্যার শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ।

ওষুধ প্রশাসনের আইনে বলা হয়েছে, দোকানে মেয়াদ উত্তীর্ণ কোনও ওষুধ বিক্রি বা মজুদ রাখা যাবে না। ড্রাগ সার্টিফিকেট টানানো থাকবে হবে। ওষুধ বিক্রয়ের সময়ে ক্রেতাদের প্রতিটি ওষুধের নাম মূল্যসহ ক্যাশ মেমো প্রদান করতে হবে। ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া কোনও ওষুধ বিক্রি করা যাবে না। দেশীয় ওষুধ ব্যতীত বিদেশি ওষুধ বিক্রি করা যাবে না। এসব নিয়ম থাকলেও মানছেন না বেশির ভাগ ফার্মেসি।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, বাকেরগঞ্জ উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের গাজী তলা বাজারে ৬ মাস ধরে অবৈধ ফার্মেসী বিসমিল্লা মেডিকেল হল চালিয়ে আসছে কামরুল ইসলাম নামের এক যুবক। কোন প্রকার লাইসেন্স ও ফার্মাসিস্ট প্রশিক্ষণ ছাড়াই নিজের মন মতো ডাক্তারদের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া ঔষুধ বিক্রি করে আসছে এই বিসমিল্লাহ মেডিকেল হল নামের ফার্মেসিতে। কোন প্রশিক্ষণ বা লাইসেন্স ছাড়াই ওই ফার্মেসীতে বসেই শিশু, বৃদ্ধ, গাইনি রোগিসহ নানা জটিল কঠিন রোগের চিকিৎসা দিয়ে আসছে কামরুল ইসলাম। আর গ্রামের সাধারণ জনগণ বিসমিল্লাহ মেডিকেল হল ফার্মেসির মালিককেই ডাক্তার মনে করে নিচ্ছেন বিভিন্ন রোগের ওষুধ। এই এলাকার সাধারণ মানুষ কোন ওষুধটি আসল কোনটি ভেজাল তা চিহ্নিত করতে পারে না। এর ফলে ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধের বাণিজ্যও কামরুলের ফার্মেসিতে জমজমাট হচ্ছে। এভাবেই শত শত অবৈধ ফার্মেসী ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে। আর এ কারণে আর স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে ফরিদপুর ইউনিয়নসহ উপজেলার সাধারণ মানুষ।

এ বিষয় বরিশাল সিভিল সার্জন ডা. মারিয়া হাসান জনকণ্ঠকে বলেন, যে ফার্মেসি দোকানগুলোতে ড্রাগ লাইসেন্স নেই তারা ফার্মেসি দোকান চালু রাখতে পারবে না। আমরা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে অবৈধ ফার্মেসি বন্ধ করে শাস্তির ব্যবস্থা করব। অবৈধ ফার্মেসির বিরুদ্ধে আমাদের মোবাইল কোর্ট অভিযান শীঘ্রই পরিচালনা করা হবে।

মোহাম্মদ আলী

×