মাদারীপুরে ইউনিয়ন ভূমি অফিসের জমি দখল করে মার্কেট নির্মাণ করার অভিযোগ উঠেছে মাদারীপুর জেলা মহিলা লীগের সভাপতি নার্গিস আক্তারের বিরুদ্ধে। তিনি মাদারীপুর সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। মার্কেটের ১৬টি দোকান ভাড়া দিয়ে জামানত হিসেবে প্রায় অর্ধ-কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়াও প্রতি দোকান থেকে মাসে মাসে তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকা ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় সাবেক সাংসদ এমপি শাজাহান খানের ক্ষমতা ব্যবহার করে এ সকল অপকর্ম চালিয়েছেন বলে দাবী স্থানীয়দের। অতি দ্রুত অবৈধ মার্কেট উচ্ছেদ করার দাবী স্থানীয়দের।
ভুক্তভোগী দোকানদার, ভুমি অফিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর বাজারে পাশে ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের জমি দখল করে মার্কেট নির্মাণ করেছেন জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি ও সাবেক মহিলা ভাইস চেয়রম্যান। মার্কেটে ১৬টি দোকান তৈরী করেন। এসব দোকান থেকে ৩থেকে ৫ লাখ করে জামানত নিয়ে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। এমনকি মার্কেটের সামনের ফুটপাটের জমিও ভাড়া নিতে দিতে হয়েছে ২-৩ লাখ টাকা। তাদের কাছ থেকে ভাড়াবাবদ প্রতিমাসে দুই থেকে তিন হাজার টাকা করে নিচ্ছেন। তিনি ২০১৯ সালে শাজাহান খানের ছত্রছায়ায় সদর উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হন। এরপর থেকেই হয়ে উঠেন বেপরোয়া। শুরু করেন দখলবাজি টেন্ডারবাজিসহ নানাবিধ অপরাধে।
স্থানীয় দোকানদার ও এলাকাবাসীরা জানান, আমরা ব্যবসা করি টাকা দিয়া। এই দোকান নারগিস নিজের কথা টাকা নিছে। এখন শুনি সরকারি। সরকার যদি এটা উচ্ছেদ করে তা ভালো। কিন্তু আমরা যে টাকাগুলো তাকে জামানত দিয়েছি, আমরা যেন সেই টাকা ফেরত পাই সেই ব্যবস্থা সরকারের কাছে দাবি জানাই।
অভিযুক্ত নারগিস আক্তারের ভাই বেলায়েত হোসেন প্রতি দোকান থেকে ভাড়া উত্তোলনের কথা স্বীকার করে বলেন,আগে আমি ভাড়া উত্তোলন করতাম। তবে সরকার পতনের পর অনেকেই ভাড়া দিচ্ছে না। সরকারি জমি কিনা আমি জানি না।
মাদারীপুর সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি এডভোকেট মাসুদ পারভেজ বলেন, সরকারি জমি দখল করে নারগিস আক্তার মার্কেট নির্মাণ করেছেন। এটা অন্যায়। আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানাই।
মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর ইউনিয়ন ভুমি কর্মকর্তা আলেয়া বেগম বলেন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান যে দোকানগুলো দখল করে নিয়েছেন সেটা আমাদের ইউনিয়ন ভূমি অফিসের জমি। এবিষয়ে তার কাছে আমরা কাগজ-পত্র চেয়েছিলাম কিন্তু সে সঠিক কাগজ-পত্র দেখাইতে পারেনি। এরপরে আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানিয়েছি।
মাদারীপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াদিয়া শাবাব বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে শিগগিরই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে সরকারি জায়গা দখলমুক্ত করা হবে।
সুবল বিশ্বাস/নুসরাত