প্রতীকী অর্থে ব্যবহৃত
নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার ধলামূলগাঁও ইউনিয়নের চুরাটিয়া গ্রামে এক গৃহবধূ ও তার সাত বছরের মেয়ের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। গৃহবধূর শ্বশুর বাড়ির লোকেদের দাবি, মা-মেয়ে উভয়ই বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মারা গেছে। আর গৃহবধূর বাবার বাড়ির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, দুজনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। মারা যাওয়া দুজন হচ্ছে, চুরাটিয়া গ্রামের মোস্তাকিমের স্ত্রী রুপালী আক্তার ও তার মেয়ে রুবাইয়া তাবাসসুম। মোস্তাকিম ময়মনসিংহের ভালুকায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে দমকলকর্মীর চাকরি করেন।
জানা গেছে, আট বছর আগে মোস্তাকিনের সঙ্গে একই উপজেলার জারিয়া ইউনিয়নের বারহা গ্রামের আবদুর রশিদের মেয়ে রুপালী আক্তারের বিয়ে হয়। এ দম্পতির দুই মেয়ে। সোমবার রাতে রূপালী তার দুই সন্তানকে নিয়ে ঘুমাতে যান। মঙ্গলবার সকালে তার কোনো সড়াশব্দ না পেয়ে পরিবারের লোকজন ঘরের গিয়ে দেখে রূপালী ও বড় মেয়ে রুবাইয়ার লাশ বিছানায় পড়ে রয়েছে। ছোট মেয়ে তাহমিনা পাশে বসে কাঁদছে।
রুপালীর বাবা আবদুর রশিদের অভিযোগ, সম্প্রতি মোস্তাকিন গ্রামে জমি কিনে তা থেকে একাংশ ছোট ভাইকে দেওয়ার পর দাম্পত্য কলহ শুরু হয়। প্রায় দুই সপ্তাহ আগে মোস্তাকিন রুপালীকে মারধর করে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। পরে চার-পাঁচ দিন আগে রুপালী আবার শ্বশুরবাড়ি ফিরে যায়। তিনি দাবি করেন, তার মেয়ে ও নাতনীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে এখন বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মারা যাওয়ার কথা প্রচার করছে।
এদিকে রূপালীর শাশুড়ি আমেনা খাতুনের দাবি, সকাল সাতটার দিকে (গতকাল) তিনি ঘুম থেকে উঠে রূপালী ও তার মেয়েদের দেখতে না পেয়ে তাদের ডাকতে যান। গিয়ে দেখেন, রূপালী ও তার বড় মেয়ে খাটে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন। তাদের পাশে ছোট মেয়ে কাঁদছে।
খবর পেয়ে পূর্বধলা থানা পুলিশ মঙ্গলবার বিকেলে মা-মেয়ের লাশ উদ্ধার করে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়। জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) লুৎফর রহমান বলেন, ‘উভয়ের লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। রূপালীর ডান হাতে আগুনের পোড়া দাগ, দুই গোড়ালির ওপরে ও দুই কবজির ওপরে কালো দাগ রয়েছে। তার মেয়ের শরীরেও একই ধরনের দাগ পাওয়া গেছে।’ সিআইডি ও পূর্বধলা থানার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। এ বিষয়ে থানায় এনে কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
জাফরান